নন্দীগ্রামের পাশাপাশি খেজুরিতেও পদ্ম কাঁটা তৃণমূলের

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মানচিত্রে আরেকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সাক্ষী হলো খেজুরী (Khejuri) বিধানসভা কেন্দ্র। কশতলা দ্বারিকানাথ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালক মণ্ডলীর নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP)…

Khejuri election BJP wins

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মানচিত্রে আরেকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সাক্ষী হলো খেজুরী (Khejuri) বিধানসভা কেন্দ্র। কশতলা দ্বারিকানাথ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালক মণ্ডলীর নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) সমর্থিত প্রার্থীরা ৯ টি আসনের সবকটিতে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে।

এই নির্বাচন, যা ২০২৫ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত হয়, তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরীতে (Khejuri) বিজেপির প্রভাব বৃদ্ধির আরেকটি প্রমাণ। নন্দীগ্রামের কালীচরণপুর কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির নির্বাচনে বিজেপির সাম্প্রতিক জয়ের পর খেজুরীতে এই ফলাফল তৃণমূলের জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই জয়ের মাধ্যমে বিজেপি দাবি করছে, “বাংলা এবার পরিবর্তন চায়, এবং বিজেপিই জনগণের একমাত্র ভরসা।”

   

খেজুরী (Khejuri) বিধানসভা কেন্দ্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এলাকা। দীর্ঘদিন এই এলাকা তৃণমূল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রভাব কিছুটা কমতে শুরু করে।

সম্প্রতি নন্দীগ্রামের কালীচরণপুর সমবায় নির্বাচনে বিজেপির ১২টি আসনে জয়ের পর খেজুরীতে (Khejuri) কশতলা দ্বারিকানাথ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচন রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নির্বাচনে মোট ৯টি আসনের জন্য ভোটগ্রহণ হয়। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তীব্র প্রচারণা এবং অভিযোগ রয়েছে যে তাদের পক্ষ থেকে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

তবে, কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং স্থানীয় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায়, বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা প্রতিটি আসনে তৃণমূলের প্রার্থীদের পরাজিত করে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন।

বিজেপি নেতারা এই জয়কে “লোভ, দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসের রাজত্বের অবসান” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির (Khejuri) এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বলা হয়, “জনতা এবার উন্নয়নের পক্ষে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে। খেজুরীতে পদ্ম ফোটার মাধ্যমে বাংলার মানুষ তৃণমূলের শাসনের বিরুদ্ধে তাদের রায় ঘোষণা করেছে।”

এই জয়ের মাদ্ধমে বিজেপির বক্তব্য “এই জয় প্রমাণ করে যে খেজুরীর মানুষ তৃণমূলের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের রাজনীতি থেকে মুক্তি চায়। আমরা উন্নয়ন ও স্বচ্ছ শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, এবং জনগণ আমাদের উপর ভরসা রেখেছে।” অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এই নির্বাচনকে “অরাজনৈতিক” বলে উল্লেখ করে ফলাফলের গুরুত্ব কমানোর চেষ্টা করেছে।

খেজুরী (Khejuri) এবং নন্দীগ্রামে বিজেপির এই ধারাবাহিক জয় পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। পূর্ব মেদিনীপুর দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি ছিল, এবং এই জেলায় শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Advertisements

২০২১ সালে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের পর থেকে এই অঞ্চলে বিজেপির সমর্থন বাড়ছে। কশতলা দ্বারিকানাথ সমবায় নির্বাচনে বিজেপির জয় এই প্রবণতারই ধারাবাহিকতা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ফলাফল আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির জন্য মনোবল বাড়ানোর কাজ করবে।

নির্বাচনের দিন খেজুরীতে (Khejuri) কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ভোটকেন্দ্রের চারপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়, এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি ছিল। অতীতে নন্দীগ্রাম এবং খেজুরীতে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও, এবারের নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ফলাফল ঘোষণার পর বিজেপি কর্মীরা আনন্দ মিছিল এবং গেরুয়া আবির মেখে জয় উদযাপন করেন।

এক ঝাঁপে ১১ বছরের খরা কাটিয়ে নাটকীয় মুহূর্তে ‘সূর্যোদয়’ বিরাট-রোহিতদের

কশতলা দ্বারিকানাথ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে বিজেপির এই বিপুল জয় খেজুরী (Khejuri) এবং পূর্ব মেদিনীপুরে তাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রমাণ। নন্দীগ্রামের পর খেজুরীতে এই জয় তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে বিজেপির ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দেয়।

এই ফলাফল বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন গতিপথ তৈরি করতে পারে, এবং আগামী নির্বাচনের আগে উভয় দলের কৌশলকে প্রভাবিত করবে। বিজেপির দাবি, “বাংলা পরিবর্তন চায়, এবং বিজেপিই তাদের একমাত্র ভরসা,” এই জয়ের মাধ্যমে আরও জোরালো হয়েছে।