‘তৃণমূল না করলেই হবে চরম পরিণতি’, বাকিবুল্লাহর মৃত্যুতে বিস্ফোরক গেরুয়া শিবির

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার গোঘাটে বিজেপি কর্মী শেখ বাকিবুল্লাহর নৃশংস হত্যা রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে (Trinamool)। স্থানীয় সূত্র এবং বিজেপির অভিযোগ অনুযায়ী, শেখ বাকিবুল্লাহকে…

trinamool alleged by bjp

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার গোঘাটে বিজেপি কর্মী শেখ বাকিবুল্লাহর নৃশংস হত্যা রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে (Trinamool)। স্থানীয় সূত্র এবং বিজেপির অভিযোগ অনুযায়ী, শেখ বাকিবুল্লাহকে হাত বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে, যা স্পষ্টভাবে হত্যার ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।

বিজেপি দাবি করেছে, এই হত্যার পেছনে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool) সমর্থিত দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছে। এই ঘটনায় এখনও কোনো গ্রেপ্তার বা কঠোর পদক্ষেপ না হওয়ায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির দাবি, এটি কেবল একটি হত্যা নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনাধীন বাংলায় হিন্দু বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে লক্ষ্যভিত্তিক রাজনৈতিক হিংসার একটি উদাহরণ। তৃণমূল না করলেই তার চরম পরিণতি হবে এমনটাও দাবি করেছে বঙ্গ বিজেপি।

   

২০২৫ সালের ২১ জুন হুগলি জেলার গোঘাটে শেখ বাকিবুল্লাহর মৃতদেহ হাত বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত পাওয়া যায়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পরিবারের সদস্যরা এই ঘটনাকে হত্যা বলে দাবি করেছেন, কারণ মৃতদেহের অবস্থা স্বাভাবিক মৃত্যুর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় (Trinamool)। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও, ঘটনার রহস্যজনক প্রকৃতি এবং তদন্তে ধীরগতি নিয়ে বিজেপি নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পুলিশকে মৃতদেহ উদ্ধারে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে লিখেছেন, “শেখ বাকিবুল্লাহকে অপরাধীর মতো বেঁধে, বিশ্বাসঘাতকের মতো ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর একমাত্র অপরাধ ছিল তিনি বিজেপির গর্বিত কর্মী ছিলেন। মমতার বাংলায় টিএমসি-সমর্থিত ইসলামপন্থী দুষ্কৃতীরা তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।” তিনি আরও দাবি করেন, (Trinamool) এই হত্যার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে এবং রাজ্য সরকার এই ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে নীরবতা পালন করছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই ঘটনাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় একটি জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হিন্দু বিজেপি কর্মীদের উপর লক্ষ্যভিত্তিক হামলা চলছে।” তিনি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে “মেরুদণ্ডহীন” বলে সমালোচনা করে দাবি করেন, পুলিশ টিএমসি নেতাদের “পুতুল” হিসেবে কাজ করছে (Trinamool)।

বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও এই ঘটনায় সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, “শেখ বাকিবুল্লাহর হত্যা বাংলায় চলমান রাজনৈতিক হিংসার একটি প্রমাণ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুষ্টিকরণ নীতির কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা বাড়ছে।” তিনি আরও দাবি করেন, রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের উপর নিয়মিত হামলা এবং হত্যার ঘটনা ঘটছে, যার পেছনে টিএমসি-সমর্থিত দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছে।

এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক হিংসার প্রেক্ষাপটে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত কয়েক বছরে রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা এবং হত্যার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত ১ জুন কলকাতায় একটি সমাবেশে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী (Trinamool) হওয়ার পর থেকে বাংলায় শত শত বিজেপি কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।” তিনি রাজ্যে টিএমসি শাসনের সময় অনুপ্রবেশ, মহিলাদের উপর অত্যাচার এবং অপরাধ বৃদ্ধির জন্য মমতাকে দায়ী করেন।

Advertisements

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool) এই অভিযোগগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছে। টিএমসি নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে এই ধরনের ঘটনাকে বাড়িয়ে তুলছে। শেখ বাকিবুল্লাহর মৃত্যুর তদন্ত চলছে, এবং পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ নেবে।” তিনি বিজেপির অভিযোগকে “বাংলার শান্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র” বলে অভিহিত করেছেন। তৃণমূলের আরেক নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বিজেপি ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়। আমরা সব সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য কাজ করি।”

এই ঘটনা রাজ্যের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনার সঙ্গে মিলে যায়। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ এবং মালদায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনায় বিজেপি মমতা সরকারকে তুষ্টিকরণ নীতির জন্য দায়ী করেছে। মহেশতলায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ কর্মী আহত হয় এবং সরকারি গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনাও বিজেপি তুলে ধরেছে। এই প্রেক্ষাপটে শেখ বাকিবুল্লাহর হত্যা রাজ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার একটি ধারাবাহিকতা বলে বিজেপি দাবি করছে।

জগন্নাথের নামে বিতরণ হচ্ছে ‘হালাল প্রসাদ’, বিস্ফোরক দাবি বিজেপির

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গোঘাটে রাজনৈতিক উত্তেজনা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। বিজেপি এবং টিএমসির (Trinamool) মধ্যে ক্রমাগত সংঘর্ষ এবং অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের ঘটনা এলাকায় অশান্তির পরিবেশ তৈরি করেছে। শেখ বাকিবুল্লাহর পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, তাঁকে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে টার্গেট করা হয়েছে।

এই ঘটনা ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিজেপি এই হত্যাকে তাদের প্রচারের অংশ হিসেবে তুলে ধরে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, টিএমসি (Trinamool) এই অভিযোগকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তবে, শেখ বাকিবুল্লাহর হত্যার তদন্তের ফলাফল এবং এর রাজনৈতিক প্রভাব রাজ্যের ভবিষ্যত রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।