কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah) বৃহস্পতিবার ছত্তীসগড়ের বিজাপুর ও কানকার জেলায় দুটি আলাদা অপারেশনে ২২ জন নকশালকে নির্মূল করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করেছেন। তিনি এই ঘটনা “নক্সাল মুক্ত ভারত অভিযান”-এর দিক থেকে এক বড় সফলতা হিসেবে অভিহিত করেছেন। অমিত শাহ তার এক টুইট বার্তায় বলেন, “আজ আমাদের সেনারা ‘নকশাল মুক্ত ভারত অভিযান’-এর দিকে আরও একটি বড় সফলতা অর্জন করেছে। বিজাপুর ও কানকারে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী দুটি পৃথক অপারেশনে ২২ নকশালকে মেরে ফেলেছে।”
নিরাপত্তা বাহিনীর এই সাফল্যকে স্বীকৃতি দিয়ে তিনি নকশালদের বিরুদ্ধে সরকারের শূন্য সহিষ্ণুতা নীতির কথা উল্লেখ করেছেন। অমিত শাহ বলেছেন, “যারা আত্মসমর্পণ করতে রাজি নয়, তাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। মোদি সরকার নকশালদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে এবং আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ নকশাল মুক্ত হবে।”
পুলিশ সুত্রে খবর, বিজাপুর এবং কানকার জেলার দুটি পৃথক সংঘর্ষে ২২ জন নকশাল নিহত হয়েছেন। প্রথম অপারেশনটি বিজাপুর-দান্তেওয়াদা সীমান্তের একটি অরণ্য এলাকায় ঘটেছে। যেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৮ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে। বিজাপুর জেলা রিজার্ভ গার্ডের এক সদস্যও এই সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। সংঘর্ষটি বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা নাগাদ শুরু হয়।
অন্য অপারেশনটি কানকার-নারায়ণপুর সীমান্ত এলাকায় ঘটে, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী চতুবেতিয়া থানার করোসকোডো গ্রাম অঞ্চলে ৪ জন নকশালকে গুলি করে হত্যা করেছে। পুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, এই সংঘর্ষে কিছু স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখনও কিছু এলাকায় অন্তর্বর্তীকালীন গুলি বিনিময় চলছে।
পুলিশ সুত্রে আরও জানা গেছে, বিজাপুর ও কানকারে উদ্ধারকাজ চলছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী আরও অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
গত সপ্তাহে, ছত্তীসগড়ের বিজাপুর জেলায় ১৭ জন নকশাল আত্মসমর্পণ করেছেন, যা সরকারের জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে, নিরাপত্তা বাহিনী বিজাপুর জেলার তিনটি স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ জন নকশালকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার করে।
অমিত শাহ আরও বলেছেন, “আমরা আত্মসমর্পণের জন্য নকশালদের বিভিন্ন সুযোগ দিচ্ছি, কিন্তু যারা সেই সুযোগ গ্রহণ করছে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
অমিত শাহের কথায়, নকশাল মুক্ত ভারত অভিযানের আওতায় ভারত সরকার সারা দেশে মাওবাদী আন্দোলন দমন করার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের ফলে মাওবাদী বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড কমে গেছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে আরও অনেক মাওবাদী গ্রুপ আত্মসমর্পণ করবে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে তারা মূল স্রোতে ফিরে আসবে।
ছত্তীসগড়ের নিরাপত্তা বাহিনীর এই সাফল্যকে ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহ মোকাবেলার পথে বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। অমিত শাহের বক্তব্য অনুসারে, ৩১ মার্চের মধ্যে দেশকে নকশাল মুক্ত করার লক্ষ্য স্থির করেছে সরকার, এবং এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তারা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
এদিকে সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর এই কার্যক্রমের মধ্যে নকশালদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, যাতে দেশের অভ্যন্তরে শান্তি এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়।