ঘুমের দফারফা করে কেন কানের কাছেই ভনভন করে মশা?

বর্ষাকালে বেড়েছে মশার উপদ্রব। মশার অসহনীয় গানে রাতের প্রশান্তির নিদ্রাও নষ্ট হচ্ছে মাঝে মধ্যেই। এই পতঙ্গের ঘ্যানঘ্যানানিতে ভেস্তে যাচ্ছে সন্ধ্যার আড্ডাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশার এমন…

Why mosquitoes fly near the ears of the human body

বর্ষাকালে বেড়েছে মশার উপদ্রব। মশার অসহনীয় গানে রাতের প্রশান্তির নিদ্রাও নষ্ট হচ্ছে মাঝে মধ্যেই। এই পতঙ্গের ঘ্যানঘ্যানানিতে ভেস্তে যাচ্ছে সন্ধ্যার আড্ডাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশার এমন উপদ্রব স্থান, কাল, পাত্র নির্বিশেষে দস্তুর। তবে অন্য সব জায়গায় চেয়ে মানুষের কানের কাছেই মশার ভনভনানি বেশি। কেন?

বিষয়টি জানলেও এর কারণ জানা নেই? জীববিজ্ঞানের ব্যাখ্যায় অবশ্য এর কারণ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। অ্যানোফিলিস, কিউলেক্স, এডিস, হেমাগোগাস, এই কয়েক প্রজাতির মশা থাকলেও আমাদের দেহে সাধারণত কামড়ায় অ্যানোফিলিস প্রজাতির স্ত্রী মশা। এসব প্রজাতির মধ্যে বাড়িতে থাকা, আকারে বড় কিউলেক্স প্রজাতির মশাও বাড়ির দেওয়ালে বসে থাকতে দেখা যায়। তবে এই প্রজাতীর পুরুষ মশা মানুষের রক্ত খায় না। গাছের পাতার রস বা ফুলের রেনু থেকে তারা তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সঞ্চয় করে। কেবল স্ত্রী মশাই মানুষের রক্ত চুষে খায়।

   

মুচমুচে-রসে টইটুম্বুর, জানের ভারতের জাতীয় মিষ্টি কোনটা?

তবে পুরুষ কিংবা নারী, উভয় মশাকেই মানুষের কানের কাছে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের শরীর থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মশা কানের কাছে বেশি ঘোরাফেরা করে। কার্বন ডাই অক্সাইডের মাধ্যমেই মশা বুঝতে পারে, ঘরে প্রাণীর সংখ্যা কেমন হতে পারে। শরীরের অন্য অংশ থেকে কানের কাছে মশার উৎপাতের জোরালো কারণ হল- আমাদের শরীর থেকে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয় নাকের ঠিক পেছনে অর্থাৎ কানের কাছে বা মাথার পিছন দিকে।

২০৩৬ সালে কত কোটিতে পৌঁছবে ভারতের জনসংখ্যা? মিলল তথ্য

জীববিজ্ঞানীরা মনে করেন, কানের প্রতি মশার আলাদা কোনও আকর্ষণ নেই। তবে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড অনুভব করার কারণেই তাদের সেন্সরের নির্দেশনায় তারা উড়তে উড়তে কানের কাছে চলে আসে। আর তখনই তাদের পাখার আওয়াজ আমরা শুনতে পাই। তাই মাথার পিছনে, কানের কাছে মশা সবথেকে বেশি উড়ে বেড়ায়।

মশার সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো কানের সামনে এসে মশা যে গান শুরু করে, তা কিন্তু মশার গান নয়। অনেকেই মনে করে এটা মশার মুখের আওয়াজ। আসলে তা নয়। এই আওয়াজ মূলত ডানা ঝাপটানোর আওয়াজ। মশারা ৩ সেকেন্ডে ডানা প্রায় ৫০০ বার ঝাপটা দেয়। আর এই একটানা ডানা ঝাপটানোর শব্দকেই আমরা মনে করি মশার অসহনীয় গান।