Pakistan: পাক প্রধানমন্ত্রীর নজির ভেঙেছিলেন বাজপেয়ী, তখন বিজেপিতে মোদী পাত্তা পেতেন না

পাকিস্তানের (Pakistan) প্রধানমন্ত্রীরা কেউই পূর্ণ মেয়াদের ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। সর্বশেষ ইমরান খান এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন। তিনি পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিলেন ৩ বছর ৭ মাস।…

পাকিস্তানের (Pakistan) প্রধানমন্ত্রীরা কেউই পূর্ণ মেয়াদের ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। সর্বশেষ ইমরান খান এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন। তিনি পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিলেন ৩ বছর ৭ মাস। পাকিস্তানের ইতিহাসে তাঁকে নিয়ে মোট ২২ জন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সবার ক্ষেত্রে এসেছে বিঘ্ন। কখনও সেনা ষড়যন্ত্র, কখনও দলীয় রাজনীতির দাবা খেলার প্রধানমন্ত্রীরা এক নিমেষে ক্ষমতাহীন হয়েছেন।

পাকিস্তানের ৭৫ বছরেরর ইতিহাসে সবথেকে কম সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন নুরুল আমিন। মাত্র ১৩ দিন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মুসলিম লীগের অভ্যন্তরীণ পাশার দানে নুরুল আমিনকে পুতুল প্রধানমন্ত্রী বানানো হয়েছিল। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন পাকিস্তান দ্বিখণ্ডিত হয়ে বাংলাদেশ জন্ম নেয়। যে ১৩টি দিন হুকুমত-এ-পাকিস্তানের তখত আলো করে ছিলেন নুরুল আমিন সেই কয়েকটি দিন ছিল রক্তাক্ত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অংশ নেওয়া ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ অত:পর পাকিস্তানের পরাজয় সবই ঘটছিল অতি দ্রুত গতিতে। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর দীর্ঘ ১৩ বছর সামরিক আইন জারির পর সেনাশাসক ইয়াহিয়া খানের অধীনে নুরুল আমিনকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছিল৷ যুদ্ধে পরাজয়ের পর সেই বছর ২০ ডিসেম্বর আমিনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নুরুল আমিনের এই স্বল্পকালীন প্রধানমন্ত্রীত্বের নজির পাকিস্তানে এখনও অটুট।

পাকিস্তানে ১৩ দিনের প্রধানমন্ত্রীত্ব বেনজির থাকলেও ভারতে সেটি ভেঙেছিলেন অটল বিহারি বাজপেয়ী। তিনি ১৬দিন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে ভারতে এখনও পর্যন্ত অটলের এই নজির কেউ ভাঙতে পারেনি। ১৯৯৬ সালের ১৬ মে থেকে সেই বছরের ১জুন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বাজপেয়ী।

ভারতে তখন বিজেপির জয়জাত্রা শুরু হতে চলেছে। তীব্র ধর্মীয় আবেগ কেন্দ্রিক রাজনীতি ছড়াচ্ছিল। তবে বাজপেয়ীর মুখ ও ব্যবহার ছিল কিছুটা ব্যাতিক্রমী। ১৯৯৬ সালে বিজেপির প্রথম দিল্লি মসনদ দখল যেমন ঐতিহাসিক ঘটনা, তেমনই ১৬ দিনের মধ্যে সেই সরকার পড়ে যাওয়া আরও এক নজির। এর পর কংগ্রেস, দুই কমিউনিস্ট পার্টি ও আঞ্চলিক দলগুলির মিলিত তৃতীয় ফ্রন্ট শক্তির উত্থান হলেও সরকার ছিল নড়বড়ে। তবে কংগ্রেস নেতৃত্বে মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই জোট শক্তি চলেছিল ২০১৪ সাল পর্যন্ত।

নব্বই দশকের শেষ থেকে যখন বিজেপি কেন্দ্র সরকার গড়ার অভিমুখ নিয়ে রাজনৈতিক লাইন গ্রহণ করে, তখনও নরেন্দ্র মোদী নেহাতই প্রাদেশিক নেতা-মুখ্যমন্ত্রী। গুজরাট ভিত্তিক রাজনীতি। তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্বে ভয়াবহ গোষ্ঠী সংঘর্ষের পর বাজপেয়ী ছিলেন ক্ষুব্ধ। যদিও তিনি নিজেও হিন্দুত্ববাদী, কিন্তু তিনি মোদী কে রাজধর্ম পালনের বার্তা দেন। তখনও বিজেপিতে কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি বাজপেয়ীর পরবর্তী উত্তরসূরীর হাতে বিজেপি সর্বাধিক উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। তখনও মোদী নেহাতই ব্রাত্য।