ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার: গড়গড়িয়ে চলছে শিক্ষার সাইকেল ভ্যান ‘আনন্দ ভূবন’

বিশেষ প্রতিবেদন: তিনি সাইকেল অন্তপ্রাণ। সঙ্গে চান শিক্ষার প্রসার। ওই দুই ভালোলাগাকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেছেন তিনি। মেদিনীপুরের গ্রামে গ্রামে তিনি ঘুরে বেড়ান ভ্রাম্যমাণ…

mobile library

বিশেষ প্রতিবেদন: তিনি সাইকেল অন্তপ্রাণ। সঙ্গে চান শিক্ষার প্রসার। ওই দুই ভালোলাগাকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেছেন তিনি। মেদিনীপুরের গ্রামে গ্রামে তিনি ঘুরে বেড়ান ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার নিয়ে। সম্পূর্ণ একার উদ্যোগে এই গ্রন্থাগার বানিয়েছেন সুব্রত কুমার জানা।

সুব্রতবাবু মেদিনীপুরের বাসিন্দা। তাঁর ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগারের নাম ‘আনন্দ ভুবন’। পিংলা ও ডেবরা অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে শনি ও রবিবার ঘুরে বেড়ায় ‘সুব্রতদার সাইকেল-ভ্যান’। শুধু বই নয় সঙ্গে থাকে দূরবীন, বিভিন্ন রকম ম্যাপ, সামুদ্রিক প্রানী ও গাছ-গাছালির স্পেসিমেন, নয়াগ্রামের পটচিত্র। পশ্চিম মেদিনীপুরের বালিচক থেকে প্রথম যাত্রা শুরু হয়। তারপর থেকে গরগড়িয়ে গড়াচ্ছে শিক্ষার সাইকেল ভ্যান।

   

mobile library

সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, “কিছুদিন আগে ভ্রাম‍্যমান গ্রন্থাগার ‘আনন্দ ভুবন’ এর পথ চলা শুরু হয়। সব বয়সের জন‍্য ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের বই নিয়ে আনন্দ ভুবন পৌঁছবে পাঠকের দোরগড়ায়। পৌঁছবে প্রতন্ত গ্রামে নতুন নতুন পাঠকের সন্ধানে। আনন্দ ভুবনের একই ছাদের নিচে বই এর পাশাপাশি থাকছে শিক্ষন সামগ্রী এবং বাংলার লোকশিল্প।”

যাত্রাপথের সূচনাতে ছিলেন এলাকার বই প্রেমিক মানুষ। উপস্থিত ছিলেন পিংলার বিখ‍্যাত পটশিল্পী রাধা চিত্রকর ও তাঁর পরিবার। গাড়ি চালু হয় তাঁদের পটের প্রদর্শনী ও গানের মাধ্যমে। সবুজের বার্তার তরফে উপস্থিত সবাইকে দেওয়া হয় চারাগাছ। সুব্রতবাবুর কথায় , “আগামীদিনে একজন পাঠকও যদি তৈরি হয় তাহলেই আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস সার্থক হবে।”লাইব্রেরীর মতোই বই নিয়ে ফেরত দিতে হয়। সাত থেকে পনেরো দিন বই রাখা যায়। বই পৌঁছে দেওয়া থেকে ফেরত নেওয়া পুরো ব‍্যবস্থা সম্পূর্ণ অবানিজ‍্যিক।

mobile library

পাঠকের দোরগড়ায় বই সাথে পৌঁছে যায় গাছও। আসলে সুব্রতবাবু প্রকৃতপ্রেমী, তাই সবসময়েই সাইকেল তাঁর প্রিয় যান। সবুজ বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাই তিনি এর মাধ্যমে বেলান গাছও। সুব্রতবাবুর কথায় , “মনের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে প্রতিষেধক হিসাবে বই পড়া এবং গাছ লাগানো ও পরিচর্যার জুড়ি নেই।” করোনা অতিমারির জেরে লকডাউনের সময় ভ্রাম‍্যমান গ্রন্থাগার ” আনন্দ ভূবন” পছন্দমত বই পাঠকের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে।

mobile library

<

p style=”text-align: justify;”>অগাস্ট মাসেই যেমন ভ্রাম‍্যমান গ্রন্থাগারের তরফে সবুজের বার্তা নিয়ে গাছের চারা বেলান সুব্রতবাবু। একশ পাঠক পাঠিকাকে গাছ দিয়ে বলে এসেছিলেন, “সারা জীবনে অন্তত একটি গাছ লাগান এবং তাকে বড় করে তুলুন যাতে ভবিষ্যতে অক্সিজেন ও জল কিনতে না হয়”। ফলের গাছের তালিকায় ছিল জামরুল , সবেদা, গোলকুল, সুপারি, নারকেল, কামরাঙা, আম – পেয়ারার মতো বড় বড় গাছের চারা।