Yap: মানুষের চেয়েও বড় মুদ্রা, এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি! এ দেশবাসীর আকৃতির তুলনায় মুদ্রার আকার বড় হয়।মাইক্রোনেশিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র ইয়েপে (Yap) একমাত্র দেশ যেখানে মুদ্রার আকার সেখানকার মানুষের…

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি! এ দেশবাসীর আকৃতির তুলনায় মুদ্রার আকার বড় হয়।মাইক্রোনেশিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র ইয়েপে (Yap) একমাত্র দেশ যেখানে মুদ্রার আকার সেখানকার মানুষের চেয়েও বড়। অনন্য অসাধারণ এই মুদ্রা ইয়েপে ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। এই দেশের বিভিন্ন গ্রামে মাঝে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিশাল আকার এই পাথর গুলো এখানকার প্রচলিত মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পাথরগুলো ওজন এবং উচ্চতা অনুযায়ী এত বিশাল এবং ভারী যে এদের এক স্থান থেকে অন্যস্থান সরানো ভারী দুর্ভোগের ব্যাপার।

এই দ্বীপটিতে পৌঁছানো বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ইয়েপে দ্বীপটিতে যেতে হলে ম্যানগ্রোভ সোয়াম ফরেস্ট গভীর জঙ্গল পার হতে হয়। প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশের এই দ্বীপটিতে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই অভ্যর্থনা জানাবেন ইয়েপি নারীরা। তবে এসব ছাপিয়ে এই দ্বীপের বিস্ময়কর বিষয় হলো, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিশালাকার পাথরগুলো। প্রথমে দেখলে কল্পনাও করা যায় না যে এগুলো স্থানীয় মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

   

শত শত বিশাল এবং গোল চাকতির মত পাথর গুলো পুরো দ্বীপ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কিছু কিছু পাথর গ্রামের হোটেলের বাইরে অবস্থিত। আবার কিছু কিছু পাথর বনের গভীরে ও সমুদ্র সৈকতে পাওয়া যায়। প্রতিটি গ্রামে এই পাথরের মুদ্রার ব্যাংক রয়েছে। সাধারণত যেসব পাথরগুলো খুব ভারী এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরানো যায় না। সেগুলো ব্যাংকের সামনে রাখা হয়। এই অদ্বিতীয় মুদ্রা ব্যবস্থা এখানে প্রায় কয়েকশো বছর ধরে চলে আসছে।

তবে ঠিক কিভাবে এই মুদ্রা ব্যবস্থা প্রচলন হয়েছিল এ বিষয়ে কেউই তেমন কিছু জানে না। যতটুকু জানা যায় তা হল প্রতিটি পাথরের চাকতি একে অপরের থেকে আলাদা। এদের ওজনের উপর নির্ভর করে এক একটি পাথরের মূল্য নির্ধারণ হয়ে থাকে। ইয়েপিদের এই এলাকা থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে পালাও নামক দ্বীপ দেশ থেকে ইয়েপিরা এই পাথর খোদাই করে দীর্ঘ জলপথ ভ্রমণ করে নিয়ে এসেছিল।

সর্বপ্রথম যে পাথরটি খোদাই করে নিয়ে আসা হয়েছিল সেটি ছিল তিমি আকৃতির। যার নাম ছিল রাই। এই রাই থেকেই মুদ্রাটির নামকরণ করা হয়েছিল। এই পাথরটি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পাথরটি এখানে মুদ্রা হিসেবে প্রচলন হয়ে যায়। এই বিশাল আকৃতির মুদ্রা গুলোর মধ্যে ছিদ্র রয়েছে। যা এগুলোকে সমুদ্রপথে পরিবহন সহজ করেছিল।

কিন্তু এত কিছু রেখে কেনও পাথরকেই মুদ্রা হিসেবে প্রচলন করা হলো? তখনকার সময় ইয়েপির কোনও ধাতু, দামি মুদ্রা ছিলনা। যা দিয়ে মুদ্রার প্রচলন করা যায়। ফলে ইয়েপির ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা এই পাথরকে মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করে। পাথরের মূল্য নির্ধারণ করা হয় এর আকারের ভিত্তিতে। এছাড়াও পাথরের উপর অলংকরণ অর্থাৎ কে কাকে কোন কাজের ভিত্তিতে পাথরটি দিয়েছে তাও দাম নির্ধারণ করে।