US Coast Guard: তখন ড্রোন কোথায়! উদ্ধারকারী ছিল ক্যামেরা এক্সপার্ট পায়রা বাহিনী!

ড্রোন নয় সমুদ্রে বেপথুকে খুঁজতে একসময় ব্যবহার করা হত পায়রা বাহিনী। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। স্বাভাবিক ভাবে সমুদ্রের নাবিকদের পথ চলতে এবং বন্দর দেখাতে সহায়তা…

ড্রোন নয় সমুদ্রে বেপথুকে খুঁজতে একসময় ব্যবহার করা হত পায়রা বাহিনী। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। স্বাভাবিক ভাবে সমুদ্রের নাবিকদের পথ চলতে এবং বন্দর দেখাতে সহায়তা করে বাতিঘরের আলো। যুগ যুগ ধরে এমনটাই হয়ে আসছে, কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে এখন প্রশ্ন জাগতে পারে‌ বাতিস্তম্ভের আলো দেখে যে ফিরে আসতে পারবে না, তাকে কীভাবে খুঁজে বের করা হবে।‌এমন সমস্যা সমাধানে বর্তমানে উপকূলীয় বাহিনীর কাছে নানা কৌশল, নানা ব্যবস্থা থাকলেও পূর্বে তা ছিল না, তাই সেসময় ভরসা করতে হত অন্যকিছুর ওপর।

সেনাবাহিনীর কাজে প্রাণীদের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। পুলিশ কুকুর বা সেনা কুকুরের ব্যবহার তো আমরা প্রায়শই দেখে থাকি। বহু সময়ে জলের নীচে নজরদারির জন্য ডলফিনদের ব্যবহার নজির ছিল। কাজে লাগানো হতো উটকেও, এমনকি পায়রার পায়ে চিঠি বেঁধে আদান-প্রদানের গল্প কম-বেশি সবারই জানা আছে। কিন্তু সেই পায়রাই এনে দিতে পারে অতল সমুদ্রের মাঝখানে হারিয়ে যাওয়া বিপন্ন মানুষের খোঁজ তা ভাবা কঠিন।

   

একটা সময় এমন কাজ করেছিল মার্কিন উপকূল রক্ষা বাহিনী। পায়রাকে একসময় ড্রোন হিসেবে ব্যবহার করত। একবার মার্কিন উপকূল রক্ষা বাহিনী ঠিক করেন তারা এবার থেকে সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া মানুষের উদ্ধারের কাজে ব্যবহার করবেন পায়রাকে। ওই প্রকল্পের নাম রাখা হল প্রজেক্ট সি হান্সবুল। যন্ত্রের বদলে রিয়েল টাইম স্পটার কাজ দিয়ে উদ্ধার কাজ চালানো আরও বেশি সহজ হবে। এই বিশ্বাস থেকে শুরু হল পায়রাদের প্রশিক্ষণ। যদিও উপদ্রবকারী পাখি হিসেবে বেশ নাম ডাক ছিল পায়রার। তবু দুটো গুণের জন্য তাদের কাজে লাগানো হয়।

পায়রার প্রশিক্ষণ করতে কম সময় লাগে ও এদের চোখের দৃষ্টি মারাত্মক। সহজে অতি বেগুনি রশ্মি ইউভি লাইট চোখে দেখতে পারে পায়রারা, সেই গুণটাই কাজে লাগাতে চেয়েছিল মার্কিন উপকূল রক্ষা বাহিনী। তারা প্রায় ছয় মাস ধরে প্রশিক্ষণ দেয় একদল পায়রাকে। প্রশিক্ষণের পর হেলিকপ্টারের নীচে পায়রাদের জন্য তৈরি হয় বিশেষ চেম্বার। সেখান থেকে নীচটা স্পষ্ট দেখা যায়।‌ পায়রাদের এমন ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল যাতে‌ তারা উজ্জ্বল রঙ দেখতে পেয়ে সেই কক্ষে রাখা বিশেষ প্যাডেলে চাপ দেয় যার ছবি পৌঁছায় উপকূল রক্ষী বাহিনীর কাছে। ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই তারা সঠিক জিনিস চিনতে সক্ষম হয়েছে। বহুল সাফল্যের পরও ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। এই প্রকল্পের খরচ বেশি হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় পায়রা দিয়ে উদ্ধারের কাজ। সেই জায়গায় চালু হয় ড্রোন। যা জাহাজ, নৌকাকে সমুদ্র থেকে খুঁজে আনছে তারা‌। মার্কিন উপকূল রক্ষা বাহিনীর পায়রা ব্যবহার রয়ে গেছে ইতিহাসের পাতায়।