News Desk, Kolkata: বয়স সাত বছর। এই বয়সেই সে পৌঁছে গিয়েছে সিঙ্গালীলা টপে। অনেকেই ভেবেছিলেন সাত বছরের ছোট্ট ছেলেটি পারবে না। ভাবনা অস্বাভাবিক কিছু না। ১২হাজার ফুট ওইটুকু বয়সের ছেলে ট্রেক সম্পূর্ণ নাও হতে পারে। কিন্তু সেই কাজটাই করে দেখিয়েছে অরিশ।
খড়দার ছেলে অরিশ। মা বাবার সঙ্গেই গিয়েছিল ট্রেকে। সেখানে গিয়ে সে এই কান্ড করে ফেলেছে। তাঁর মা মৌ সিনহা জানিয়েছেন, “অরিশ সাত বছর বয়সে ২৩শে অক্টোবর ১২২০০ ফুট উচ্চতার পাহারে নিজে হেঁটে উঠেছে| আমরা প্রথম দিন ভাবিনি যে অরিশ ১২২০০ ফিট ওপরে উঠতে পারবে। অরিশ এর ট্রেকিং করতে যাওয়ার জন্য ওখানকার পুলিশও ভাবছিল ও যেতে পারবে না। আমাদের গাইডও ভেবেছিল অরিশ পারবে না উঠতে। শেষ অবধি ও সিঙ্গালীলা টপে একা হেঁটে উঠে আমাদের সবাইকে দেখিয়ে দিল যে ও পেরেছে| যে ট্রেকটা অনেকেই করতে পারেনা,মাঝপথে ফিরে আসে সেটা আমার ছেলের সফলতার সঙ্গে করেছে।”
পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে নেপাল, পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম সীমান্তে অবস্থিত সিঙ্গালীলা রেঞ্জ। দার্জিলিং জেলার অন্যতম আকর্ষণ এই স্থানের প্রধান মুকুট সান্দাকফু (১১,৯০৯ ফুট) ও ফালুট (১১,৮১১ ফুট)। তাদেরই কোলে রডোডেনড্রনের বন ঘিরে তৈরি হওয়া সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যান পর্যটকদর মূল আকর্ষণ। যা দুটি ভাগে বিভক্ত। দক্ষিণ অংশের (৭,৯০০ ফুট) শুরুটা হয় মানেভঞ্জন দিয়ে। প্রায় ১২ হাজার ফুট উচ্চতায় ফালুটে শেষ হয় রেঞ্জ। উত্তর অংশটি সংযুক্ত রিমবিকের সঙ্গে।
এখানে যেতে গেলে ট্রেনে বা বাসে শিলিগুড়ি পৌঁছে সেখান থেকে প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে পৌঁছতে হয় দার্জিলিং। এক রাত কাটিয়ে সেখান থেকেই সিঙ্গালীলা রেঞ্জের দিকে রওনা হন পর্যটকরা। অনেকে আবার শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি মানেভঞ্জন পর্যন্ত গাড়ি বুক করেন। সেখান থেকে ট্রেকিং করে সিঙ্গালীলা রেঞ্জের দিকে রওনা হন। কেউ আবার টামলিং গ্রামে (৯,৬০০ ফুট) এক রাত বিশ্রাম নিয়ে ফের ট্রেকিং শুরু করেন। রিমবিক থেকে চড়াই উতরাই পেরিয়েও জাতীয় উদ্যানে পৌঁছন অনেকে।
১৯৮৬ সালে সিঙ্গালীলা রেঞ্জের এই বনকে বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৯২ সালে এই জঙ্গলকে জাতীয় উদ্যান হিসেব ঘোষণা করা হয়।