করোনার জেরে দেশে আত্মহত্যা ১০ শতাংশ বেড়েছে: NCRB Report

News Desk: করোনার জেরে ২০২০ সালে দেশে আত্মহত্যার সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। আত্মঘাতীদের মধ্যে পড়ুয়া এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। করোনা মহামারীজনিত অতিরিক্ত…

corona

News Desk: করোনার জেরে ২০২০ সালে দেশে আত্মহত্যার সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। আত্মঘাতীদের মধ্যে পড়ুয়া এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। করোনা মহামারীজনিত অতিরিক্ত চাপ সহ্য করতে না পারার কারণেই এরা আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (NCRB) এক পরিসংখ্যান থেকে এই তথ্য মিলেছে।

বৃহস্পতিবার এনসিআরবির এই রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। ওই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে আত্মহত্যায় মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে। গত বছর সারাদেশে আত্মঘাতী হয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫২জন। ১৯৬৭ সালের পর এটাই আত্মহত্যার সর্বোচ্চ সংখ্যা। ২০১৯ সালের তুলনায় আত্মহত্যার সংখ্যা ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এনসিআরবির রেকর্ড বলছে, ২০২০ সালে প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ১১.৩ জন আত্মঘাতী হয়েছেন। বিগত ১০ বছরের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ।

প্রশ্ন হল, কেন আত্মহত্যার সংখ্যা এতটা বাড়ল।
এনসিআরবির রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, মূলত ক্ষুদ্র উদ্যোগপতি, পড়ুয়া এবং পেশাদার ব্যক্তিরাই আত্মঘাতী হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনাজনিত কারণে স্কুল-কলেজ গত দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে যারা উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা অনেকেই হতাশায় ভুগছেন। সেই হতাশা থেকেই তাঁরা আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন।

পাশাপাশি লকডাউনের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় চলছে অনলাইন ক্লাস। কিন্তু ভারতের প্রায় তিন কোটি পড়ুয়ার অনলাইন ক্লাস করার মত তেমন কোনও মোবাইল বা অন্যান্য পরিকাঠামো নেই। তাই পড়াশোনা করতে না পেরে তারা হতাশ হয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে প্রতিবছর ৭ থেকে ৮ শতাংশ পড়ুয়া আত্মহননের পথে হাঁটে। ২০২০ সালে সেটাই ২১.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাশাপাশি ২০২০ সালে বেতনভোগী ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬.৫ শতাংশ মানুষ আত্মঘাতী হয়েছেন। দৈনিক মজুরদের মধ্যে ১৫.৭ শতাংশ মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। ওই রিপোর্টে থেকে আরও জানা গিয়েছে, করোনার জেরে বেতনভোগীদের থেকেও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। ফলে বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদকদের ২৬.১ শতাংশ এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ আত্মহত্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার জেরে দীর্ঘদিনের লকডাউনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বহু ক্ষুদ্র উদ্যোগপতির। ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছিলেন তাঁরা। ঋণ মেটাতে না পেরেই তাঁরা আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। একই কথা প্রযোজ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রেও।