Hotel Rwanda: ‘ব্রহ্মা জানেন…’ কারামুক্ত হোটেল রুয়ান্ডার আসল নায়ককে বরণ করবে কাতার

ব্রহ্মা জানেন কি সেই দিন আসলে কী ঘটেছিল? আফ্রিকার রুয়ান্ডা (Rwanda) দেশের দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষের পিছনে কার মদত আছে?

Paul Rusesabagina, Hero of 'Hotel Rwanda' and Rwanda Genocide Survivor, in Custody

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: ব্রহ্মা জানেন কি সেই দিন আসলে কী ঘটেছিল? আফ্রিকার রুয়ান্ডা (Rwanda) দেশের দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষের পিছনে কার মদত আছে? চরম বিতর্কিত রুয়ান্ডা গণহত্যার সময় হাজার মানুষের জীবন বাঁচানো ‘নায়ক’ পল রুসেসাবাগিনা (Paul Rusesabagina) অবশেষে কারামুক্ত।

তিনি রুয়ান্ডা ত্যাগ করতে চলেছেন। প্রথমেই আসবেন কাতারে (Qatar)। পারস্য উপসাগরীয় দেশ কাতারেই সাময়িক বাসিন্দা হবেন। রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ সূত্র মারফত একটু আগে জানতে পারলাম হোটেল রুয়ান্ডার নায়ক বেলজিয়ামে পাকাপাকিভাবে চলে যাবেন। এত বছর কাতারে আছি, কত রথী মহারথীকে আসতে দেখেছি এ দেশে, এই তো সর্বশেষ ফুটবল বিশ্বকাপ তেমনই ঝলক দেখিয়েছিল। কিন্তু গণহত্যার হাত থেকে কমপক্ষে ১,২০০ মানুষের জীবন বাঁচানো পল রুসেসাবাগিনার আগমণ অনেক তারকার ঝলক ম্লান করে দেবে।

   

কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানির বিশেষ কূটনৈতিক উদ্যোগে কারামুক্ত পল রুসেসাবাগিনা আসছেন দোহা শহরে। আপাতত তিনি রুয়ান্ডাস্থিত কাতারি দূতাবাসের নিয়ন্ত্রণে। কাতার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

পল রুসেসাবাগিনার নাম বিশ্ব জুড়ে আলোচিত হবে ঠান্ডা মাথায় হাজারের বেশি মানুষকে গণহত্যা থেকে বা়ঁচিয়ে আনার জন্য। এই ভয়াবহ ঘটনার কেন্দ্র রুয়ান্ডা।আফ্রিকার এই দেশটিতে দুই জনগোষ্ঠী হুতু এবং তুতসিদের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষ হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। অভিযোগ, হুতু গোষ্ঠী নির্বিচারে গণহত্যায় জড়িত ছিল। ভয়াবহ সেই পরিস্থিতির সময় পল রুসেসাবাগিনা ছিলেন দেশটির রাজধানী শহর কিগালির একটি বিলাসবহুল হোটেলের ম্যানেজার। এর নাম হোটেল মিম কোলিন। সেই হোটেলের সামনেই গণহত্যা চলছিল। পল রুসেসাবাগিনা হোটেলের ভিতর বহু মানুষকে গোপনে আশ্রয় দেন। দমবন্ধকর সেই মুহূর্ত যা পরে হলিউডের বিখ্যাত সিনেমা হোটেল রুয়ান্ডা (Hotel Rwanda) নামে পরিচিত। ২০০৪ সালের এই ছবির একটি গানের সাথে আশ্চর্যরকম মিল পাওয়া যায় পশ্চিমবঙ্গের একটি ব্যান্ড দলের গান ‘ব্রহ্মা জানেন…’।

রুয়ান্ডার গণহত্যায় কমপক্ষে নিহতের সংখ্যা ৮ লাখ। সহশ্রাধিক জনতাকে বাঁচানোর পর ১৯৯৬ সালে রুয়ান্ডা ছেড়েছিলেন পল রুসেসাবাগিনা। এরপর তিনি বেলজিয়াম চলে যান। তবে রুয়ান্ডা সরকারের প্রবল সমালোচক ছিলেন। ২০২০ সালে পল রুসেসাবাগিনাকে বহনকারী বিমানটি জবরদস্তি রুয়ান্ডায় অবতরণ করানো হয় বলে অভিযোগ। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায় রুয়ান্ডা সরকার। সেই বিমানটি আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডি যাচ্ছিল। মাঝপথে রুট পাল্টে রুয়ান্ডায় অবতরণের পিছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে অ়ভিযোগ ওঠে। রাষ্ট্রসংঘের তরফে রুয়ান্ডা সরকারের উপর চাপ তৈরি করা হয়। অবশেষে তিন বছরের মাথায় মুক্ত হয়ে কাতার ঘুরে ফের বেলজিয়াম চলে যাবেন রুসেসাবাগিনা।

গণহত্যা থেকে মানুষের জীবন রক্ষাকারী পল রুসেসাবাগিনার ভবিষ্যৎ একমাত্র “ব্রহ্মা জানেন …” আর জানেন কাতারের আমির।