বিশেষ প্রতিবেদন: পেরিয়ে গিয়েছে ১০২ বছর। তিনি ফেরেননি। অপেক্ষাও করে না কেউ। তবু তিনি এক রহস্য, যা হারিয়ে গিয়েছে সমুদ্রের অতলে। বিখ্যাত অভিনেত্রীর হারিয়ে যাওয়া ১০২ বছর ধরে রয়ে গিয়েছে এক চির রহস্য হয়ে। তিনি মেরি এম্প্রেস (Mario empress)।
১৯১৯ সাল। শুটিং শেষ। নিজের দেশ ইংল্যান্ডে ফিরবেন বলেই জাহাজে চড়েছিলেন এম্পেস। জাহাজ ফিরেছিল, ফেরেননি সেই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। নানাভাবে তাঁর খোঁজ করা হয়েছিল। পাওয়া যায়নি। বার্মিংহামের বাসিন্দা ছিলেন এম্পেস। ১৯০০ সালের শুরু থেকেই তিনি ইংল্যান্ডের থিয়েটারের জগতে বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন। ১৯১৫ সালে সিনেমা জগতে প্রবেশ করেন এম্পেস। ছবির নাম ছিল ‘ওল্ড ডাচ’। কমেডি সিনেমা ছিল সেটি। প্রথম থেকেই সাফল্যের মুখ দেখেছিলেন তিনি।
সেবার আমেরিকার ওয়েস্ট এন্ড থিয়েটারে কাজ শেষ করে বার্মিংহাম ফিরছিলেন। ১৯১৯ সালের ২৭ অক্টোবর ‘অর্ডুনা’ জাহাজ এসে পৌঁছয় নিউইয়র্কের কানার্ড লাইন জেটিতে। এখানেই প্রথম খবর পাওয়া যায় জাহাজে এম্পেস নেই। স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল পড়ে যায়। এত বড় ব্যাক্তিত্ব মাঝ সমুদ্রে কীভাবে উধাও হয়ে যেতে পারে? তদন্ত শুরু করেন গোয়েন্দারা। কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
জাহাজের এক কর্মী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন ঘটনা যেদিন সামনে আসে তার আগের রাতেই নিখোঁজ হয়েছিলেন এম্পেস। সে খাবার দিতে গিয়ে দেখেছিল কেবিনে তিনি নেই। সে ভেবেছিল কোথাও গিয়েছেন অভিনেত্রী। খাবার রেখে দিয়ে চলে যায় সে। পরের দিন ওই খাবার ওখানেই পড়েছিল, অভিনেত্রী ছিলেন না। মেরির কেবিন থেকে কিছু ছবি মিলেছিল। পাওয়া গিয়েছিল একটি টেলিগ্রাম কপি। তাতে লেখা ছিল, ‘সোমবার আসছি। আমার জন্য একটা ঘর রাখবেন’।
তদন্তে নানা সম্ভাবনার মত জাহাজ থেকে তার ঝাঁপ দেওয়ার তত্ব উঠে এলেও পরে তা খারিজ হয়ে যায়, কারণ এম্প্রেসে আনুমানিক যে সময়ে উধাও হন তখন জাহাজ গমগম করছিল লোকে। সবার চোখ এড়িয়ে ওইরকম একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী জলে ঝাঁপ দেবেন অথচ কেউ তা দেখতেই পাবেন না তা হয় না। পরে অনেকে এও দাবী করেছিলেন ওটা অভিনেত্রীর প্রচার পাওয়ার কৌশল ছিল। কিন্তু তা বলে ১০০ বছর!
জাহাজে তাঁর ব্যবহৃত ট্রাঙ্ক প্রায় একমাস নিউইয়র্কে পড়েছিল। কোনও দাবিদার মেলেনি। পরে ব্রিটিশ সরকার এম্পেস উধাও মামলকে ‘ওভারবোর্ডে লাফিয়ে ডুবে যাওয়া’ উল্লেখ করে কেস বন্ধ করে দেয়। রহস্য থেকে যায় রহস্যতেই।