Tashirojima: বেড়ালের ‘রাম রাজত্ব’ চলে এই দ্বীপে

বিশেষ প্রতিবেদন: আফ্রিকায় সিংহের রাজত্ব। সুন্দরবনে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের রাজত্ব। আর এখানে বেড়ালের রাজত্ব। ঘটনাচক্রে বাঘ , সিংহ এরা সবাই ‘ক্যাট ফ্যামিলি’র। কিন্তু বেড়ালের এমন…

tashirojima cat-island

বিশেষ প্রতিবেদন: আফ্রিকায় সিংহের রাজত্ব। সুন্দরবনে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের রাজত্ব। আর এখানে বেড়ালের রাজত্ব। ঘটনাচক্রে বাঘ , সিংহ এরা সবাই ‘ক্যাট ফ্যামিলি’র। কিন্তু বেড়ালের এমন রাম রাজত্ব আফ্রিকায় সিংহ কিংবা সুন্দরবনে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারেরও নেই। এখানে মানুষের থেকে মার্জারের সংখ্যা বেশি। যেদিকেই তাকাবেন কিলবিল কড়ছে বেড়াল আর ‘ম্যাও’ ডাক। বেড়ালের এমন রাম রাজত্ব রয়েছে জাপানে তাশিরোজিমায় (Tashirojima)।

তাশিরোজিমা, জাপানের একটি ছোট্ট দ্বীপ। আয়তন দেড় বর্গকিলোমিটার। এই দ্বীপটি ‘দ্য কিংডম অফ ক্যাটস’। এখানে মানুষ থাকেন মেরেকেটে ১০০ জন। বেড়ালের সংখ্যা কত জানেন ? জানলে চমকে যাবেন। প্রায় ৬০০। বিশ্বাস করতে না পারলেও এটাই বাস্তব। এখানে যেদিকেই তাকাবেন বিভিন্ন ধরনের বেড়াল দেখতে পাবেন। রাস্তাঘাট, বাজার দোকান, শ’খানেক মানুষের বাড়ির ছাদ ঘর সর্বত্র ওদের রাজ চলে। এই দ্বীপের নামই হয়ে গিয়েছে ‘বেড়াল দ্বীপ’ (cat island)।

cat island of japan

কিন্তু কীভাবে গড়ে উঠল এমন বেড়াল সাম্রাজ্য? এখানকার মানুষ নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে এই কাণ্ড করেছেন।
৭৫ থেকে ৭৭ বছর পিছনে যেতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সময়ে তাশিরোজিমায় প্রায় তিন হাজার মানুষের বাস। প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চল। জলরাশিতে ঘেরা সুন্দর সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরতি দ্বীপ। মাছ শিকার করে মানুষ জীবিকা চালাতেন। পাশাপাশি শুককীট চাষের প্রচলন ছিল। যা থেকে তৈরি হত রেশমের পোষাক। সব বেশ সুন্দর ছিল। বাধ সাধল ইঁদুরের দল।

হঠাৎ করেই এখানে শুরু হয় ইঁদুরের উৎপাত। তারা শুককীটের ব্যাপক ক্ষতি করতে শুরু করে। রেশমের পোষাক উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতেই থামেনি ইঁদুরের দল। মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার জালও কেটে দিতে শুরু করে এই তারা।

cat island of japan

মূষিক তাড়াতে স্থানীয় বাসিন্দারা এক অভিনব পন্থা অবলম্বন করেন। তারা কিছু বেড়াল নিয়ে এসে ছেড়ে দেন দ্বীপে। দারুন ফল পেল তারা। ইঁদুরের উৎপাত কমে গেল। কিন্তু কিছুদিন পরে ‘গল্প’ অন্যদিকে ঘুরে গেল। বেড়ালের সংখ্যা হু হু করে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

সুখ সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বেড়াল রেশমের ক্ষতি করেনি। মৎস্যজীবীরা যে মাছ কষ্ট করে ধরে আনত তা মনের আনন্দে সাবাড় করে দিতে শুরু করে বেড়ালের দল। তাদের খাটতেও হয় না। মাছ একদম মুখের সামনে। গপাগপ খেয়ে ফেলতে শুরু করে তারা।

tashirojima cat

<

p style=”text-align: justify;”>আর ঝামেলা না নিয়ে বাসিন্দারা অন্য জায়গায় চলে যেতে শুরু করেন। থেকে যায় বয়স্ক মানুষরা। তাদের নিঃসঙ্গ জীবনের সঙ্গ হয়ে ওঠে বেড়ালের দল। তারাই এখন সেখানকার বাসিন্দা। প্রসঙ্গত, জাপানিদের কাছে বেড়াল সৌভাগ্যের প্রতীক। ২০১১ সালের সুনামি হয়। সৌভাগ্যের প্রতীক বেড়াল দ্বীপে কিচ্ছুটি হয়নি। এই দ্বীপে বেড়াল রক্ষা করতে কুকুরের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা করেছে জাপান সরকার।