‘আমরে মিও…’ সংসার পাতলেই লাখ লাখ টাকার অনুদান ইতালির শহরে

ইতালির ক্যালিপিয়া শহরে সংসার পাতলেই মিলবে 35 লাখ টাকা। দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি এই সুযোগটি নিতে পারবেন বিদেশিরাও। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত ছোট্ট এই শহরে মাত্র…

ইতালির ক্যালিপিয়া শহরে সংসার পাতলেই মিলবে 35 লাখ টাকা। দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি এই সুযোগটি নিতে পারবেন বিদেশিরাও। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত ছোট্ট এই শহরে মাত্র তিন হাজার মানুষের বাস। ওই শহরের জনসংখ্যা বাড়াতে ক্যালিপিয়া এসে পাকাপাকি বসতি স্থাপন করার অনুরোধ জানাচ্ছে সেখানকার প্রশাসন। অনুরোধ মানলে প্রশাসন থেকে ২৮ থেকে ৩০ হাজার ইউরো দেওয়া হবে যে কাউকেই।

সেখানে সন্তানের জন্ম দিলে রয়েছে বিশেষ বোনাস এর ব্যবস্থা। তবে এর জন্য রয়েছে একটি শর্ত। সমুদ্রের কিরে গড়ে ওঠা এই শহরে আগ্রহী ব্যক্তিকে অবশ্যই একটি বাড়ি কিনতে হবে। আবার তার বয়স ৪০ বছরের বেশি হওয়া যাবে না। তাকে এই শহরে একটি নতুন ব্যবসা শুরু করতে হবে। যিনি ক্যালিপিয়ায় থাকার জন্য অনুমোদন করবেন ৯০ দিনের মধ্যে সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে তাকে। ক্যালিপিয়ায় যারা নতুন জীবন শুরু করবেন তাদের প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ তিন বছরের মধ্যে ৩৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

ক্যালিপিয়ায় ৭৫ শতাংশের বেশি অঞ্চলে ৩২০ সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে। তবে ২০২১ এর পরিসংখ্যান বলছে, সেখানকার জনসংখ্যা পাঁচ হাজারেরও কম। এই পরিস্থিতি ক্যালিপিয়ার প্রশাসনের কাছে উদ্বেগজনক। তাই শহরের হাল ফেরাতে এই উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। কেবল ক্যালিপিয়াতেই শুধু এমন অফার দেওয়া হচ্ছে তা কিন্তু নয় ইতালির দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত প্রেসিস শহরে চলছে এমন লোভনীয় অফার। কেউ যদি তিন বছরের বেশি সময় বাড়ি কিনে সেখানে থাকেন পেয়ে যাবেন প্রায় ৩০ হাজার ইউরো। শহরটিতে বসবাসে রাজি থাকলে অর্থ দুই ধাপে দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে শহরের একটি পুরনো বাড়ি কেনার জন্য অর্থ ছাড় করা হবে ও বাকি অর্থ বাড়িটি সংস্কারের প্রয়োজনে দেওয়া হবে।

ক্যালিপিয়ার মতো প্রেসিসে আছে কিছু শর্ত। আগের মতো বয়স বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৪০ বছর। অর্থাৎ ৪০ বছরের বেশি বয়সী কেউ সেখানে যেতে পারবে না। একসময় শহরটির দুই ধার দিয়ে গড়ে ওঠা দালানগুলিতে ছিল অনেক মানুষের বসবাস। শহরটা ছিল প্রাণময় কোলাহলপূর্ণ। অতীতে এই শহর জলপাই তেল উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। ছবির মতই এই শহরটি জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অজস্র জলপাই বাগানের জন্য একে ডাকা হতো সবুজ বর্ণের নগরী হিসেবে। কিন্তু এ শহরটির প্রাণবন্ত রূপ এখন শুধুই অতীত। পুরনো সব বাড়ি গুলির অধিকাংশই জনশূন্য। এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্যের সোনালী দিনও আর নেই।

শহরের কাউন্সিলর আলফ্রেদো পালাসে বলেন, শহরটিতে ১৯৯১ সালের আগে নির্মাণ করা অনেকবারই খালি পড়ে আছে। সেই বাড়িগুলি কেনার জন্যই অর্থ দেওয়া হবে। তারা চান বাড়িগুলি আবার ভরে উঠুক। প্রেসির শহরে মানুষের জন্ম হওয়া প্রায় দিনকে দিন কমেই যাচ্ছে এতে শহরের জনসংখ্যা কমে আসছে বলে জানান পালাসে। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন ইতিহাস সুন্দর সুন্দর স্থাপনা ও শিল্প শহরটি খালি হয়ে যাচ্ছে এটা চোখের সামনে দেখা কষ্টের। তাই এখানে বসবাসের বিনিময় অর্থ প্রদানের পরিকল্পনাটি প্রশাসন হাতে নিয়েছেন বলে জানান পালাসে।