Advertising psychology: পণ্যনির্মাতা ছোট-বড় কোম্পানিগুলোর আপনার -আমার কাছে পৌঁছানোর সবচেয়ে বড় হাতিয়ার – বিজ্ঞাপন। দশ টাকার কুলফি থেকে শুরু করে লাখ টাকার গাড়ি, ভোক্তাসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজ্ঞাপনের কমতি রাখে না। কেন তারা বিজ্ঞাপনের পেছনে কাড়ি কাড়ি টাকা ও প্রচুর সময় ব্যয় করে? ভোক্তারাই বা কীভাবে বিজ্ঞাপনের প্রতি আকৃষ্ট হয়? এর পেছনে যেসব সাইকোলজিকাল ব্যাপার স্যাপার আছে, তারই কয়েকটা নিয়ে একটু বলি।
রঙ বা কালার :
লাল রঙ দেখলে খিদে পায়। নীল রঙ দেখলে প্রশান্তি অনুভব হয়। কালো রঙ এলিগেন্ট ভাইব দেয়। হলুদ রঙ পজিটিভিটি তৈরি করে। কাস্টমার পণ্য কিনবে কি না- সেই সিদ্ধান্তকে কালার বা রঙ ৮৫% পর্যন্ত প্রভাবিত করতে পারে। ব্লু হচ্ছে বিশ্বের মানুষের সবচেয়ে প্রিয় রঙ। তাই অনেক ব্র্যান্ডের লোগোতে নীল রঙ থাকে। ফেসবুকই একটা প্রমাণ। নীল রঙ ব্র্যান্ডগুলোর ট্রাস্ট ও নির্ভরযোগ্যতা তৈরি করে। কমলা রঙ আত্মবিশ্বাস, সাহস ও সৃজনশীলতার মেসেজ বহন করে। পার্পল রঙ রাজকীয় ভাব আনে। সবুজ রঙ সতেজতা ও স্বাস্থ্যের অনুভব দেয়।
নিউরোমার্কেটিং :
কী ভাবছেন? নিউরোলজির সাথে মার্কেটিং? হ্যাঁ, এরকমটাই অনেকটা। অ্যাডভার্টাইজিং ও অন্যান্য প্রচারণার ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক কীভাবে রেসপন্স করে সেটা জানার জন্য ব্রেন ওয়েভ,আই ট্র্যাকিং ও স্কিন রেসপন্স পরীক্ষা করা হয়।
যেমন, ২০০৪ সালের এক স্টাডি দেখিয়েছিল যে, সিগারেটের প্যাকেটের উপর স্মোকিং সংক্রান্ত সতর্কবার্তা থাকার পরও তা মস্তিষ্কের ক্রেভিং সেন্টার কে উদ্দীপ্ত করে।
জাগারনিক এফেক্ট :
এই যে সিনেমার ট্রেলার, বা বিভিন্ন প্রিমিয়াম সার্ভিসের প্রিভিউ থেকে ‘আসিতেছে’ পোস্টার, এসবকিছুই আপনার মনে বিষয়টি সম্পর্কে প্রত্যাশার জন্ম দেয়। আপনি সমাপ্ত বিষয়ের চেয়ে অসমাপ্ত বিষয়াদি বেশি মনে রাখেন। তাই সিরিয়ালের সম্পূর্ণ পর্বের চেয়ে নেক্সট পর্বে কী হবে তার ট্রেইলার আপনাকে বেশি আচ্ছন্ন করে রাখে।
রিপিটিশন বা পুনরাবৃত্তি :
টিভিতে বারবার বিজ্ঞাপন আসতেই থাকে। মানুষ যত বেশিবার দেখে, ততবেশি বিজ্ঞাপন মনে থাকে। এটা নিয়ে সে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে আলাপ করে। আবার দেখা যায় যে কোনো কোম্পানি একটা নতুন এডভার্টাইজমেন্ট এনে সেটা তিন-চার সপ্তাহ ব্যাপকভাবে চালায়, এরপর তেমন বেশি একটা পুরোনো এড দেখা যায় না। নতুন পণ্যের ক্ষেত্রে বারবার এমন নতুন এড দেখানো কার্যকর তবে খুব বেশি সময়ের জন্য নয়, যাতে ভোক্তারা বিরক্ত হয়ে যায়৷ এটাকে বলে টু-ফ্যাক্টর থিওরি বা worn-in/worn-out।
অ্যাংকরিং বায়াস:
মানুষ প্রথম যে তথ্য শোনে, সেটার উপর অনেক বেশি নির্ভর করে। সেটাকেই ছড়াতে থাকে, সেটাকেই সত্য বলে ধরে নেয়। এমন অনেক ধরনের কগনিটিভ বায়াস নিয়ে মার্কেটিং এক্সপার্টরা কাজ করে থাকেন।