Auroville: যেখানে থাকতে কোনো টাকার দরকার নেই, ভারতেই রয়েছে সেই শহর

প্রায় আড়াই হাজার জনসংখ্যার এক ছিমছাম শহর। যেখানে নেই কোনো টাকা পয়সার প্রচলন। বর্তমান পৃথিবীতে যেখানে টাকা ছাড়া একমুঠো চাল পাওয়া মুশকিল। সেখানে টাকা ছাড়া…

Auroville City

প্রায় আড়াই হাজার জনসংখ্যার এক ছিমছাম শহর। যেখানে নেই কোনো টাকা পয়সার প্রচলন। বর্তমান পৃথিবীতে যেখানে টাকা ছাড়া একমুঠো চাল পাওয়া মুশকিল। সেখানে টাকা ছাড়া দিব্যি জীবন পার করে দিচ্ছে সেখানকার মানুষরা। ভারতের বুকেই রয়েছে এমন এক শহর।চেন্নাই থেকে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার ও পুদুচেরি হতে প্রায় বারো কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ছোট্ট নগর অরোভিল (Auroville)। ধর্ম, বর্ণ, ভাষার বৈষম্য ও বৈচিত্রময় ভারতের এক অদ্ভুত শহর এই অরোভিল। এই শহরে ধর্ম, বর্ণ, অর্থ, ভাষার কোনও ভেদাভেদ নেই। এমনকি এখানে কোনও সরকারও নেই। তবুও শহরে কোনও বিশৃঙ্খলা নেই। শহরের বাসিন্দারা নিজস্ব নিয়ম কানুন মেনেই তাঁদের জীবন চালান। এ যেন এক রূপকথার নগরী।

অরোভিল শহরটিকে বলা হয় ইউনিভার্সাল সিটি। যার অর্থ এখানে যে কেউ এসে বসতি স্থাপন করতে পারেন। তথ্য অনুসারে, প্রায় ৫০ টি দেশের মানুষ এখানে বসবাস করেন। শহরের জনসংখ্যা প্রায় ২৪ হাজার। থাকার জন্য শুধু একটাই শর্ত, আপনাকে এখানে সেবক হিসেবে থাকতে হবে।

শুনলে অবাক হবেন যে, অরোভিলে সরকার বা ধর্মের কোনও ধারণা নেই। এই শহর প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত সমাবেশ দ্বারা পরিচালিত হয়। সদস্যরা সকলে ভিন্ন সংস্কৃতির, ভিন্ন জাতির মানুষ। তা সত্ত্বেও এঁদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ বা বিশৃঙ্খলা নেই। এমনকি ধর্মীয় বিশ্বাসের বাইরে সত্যের পথ অনুসরণে বিশ্বাসী এই শহরের মানুষ। শহরের মাঝখানে একটি মন্দির আছে, যাকে বলা হয় “মাতৃমন্দির”। এখানে নির্জনে যোগসাধনা এবং আধ্যাত্মিক চর্চা করা যায়। মন্দিরটি কোনও নির্দিষ্ট ধর্ম বা সম্প্রদায়ের অন্তর্গত নয়।

অরোভিলে নগদ অর্থ প্রদানের চল নেই, এখানে কাগজের মুদ্রার বিনিময় করা হয়। যদিও বহিরাগতদের সঙ্গে অর্থ বিনিময় করা হয়। প্রায় ৩৫ বছর আগে এই শহরে একটি আর্থিক পরিষেবা কেন্দ্রও চালু হয়েছিল। এই কেন্দ্রটিকে এখানকার মানুষ ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেন। এখানকার বাসিন্দারা এই ব্যাঙ্কে অফলাইন এবং অনলাইনে তাঁদের টাকা জমা দিয়ে থাকেন।

অরোভিলের নিজস্ব স্থাপত্য এবং শহর পরিকল্পনা ব্যুরো রয়েছে। এখানে রয়েছে সংরক্ষাগার, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, অডিটোরিয়াম, ৪০টি শিল্প, রেস্তোঁরা, খামার, গেস্টহাউস ইত্যাদি। স্কুল থেকে হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ও এখানে উপস্থিত। শুধু তাই নয়, বাসিন্দাদের জন্য রয়েছে একটি কম্পিউটার, একটি ই-মেইল নেটওয়ার্ক (ওরনেট)।