বিশেষ প্রতিবেদন: ৪৬০০ বছরের সৌরনৌকা আজও অক্ষত। মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো যে, এসব নৌকায় চড়ে তারা মৃত্যুর পরের জীবনে পাড়ি জমাবে। মিশরের ফারাও খুফুর বিখ্যাত পিরামিডের ভেতর কবর দেওয়ার কামরাগুলোর পাশেই একটি গর্তে মাটিচাপা ছিল এমনই একটি বিশাল নৌকা। চার হাজার ৬০০ বছরের পুরানো সেই নৌকা এখনও অক্ষত রয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় সৌরনৌকার তকমা পেয়েছে এটি। ফেরাউন সম্রাটের সবচেয়ে প্রিয় ছিল এই সৌরনৌকাটি। সৌরনৌকাটি ফারাও কুফুর ব্যবহৃত ছিল বলে ধারণা করা হয়। প্রথম নৌকাটি ১৯৫৪ সালে আবিষ্কৃত হয়। গ্রেট পিরামিডের দক্ষিণ কোণে এটিকে পাওয়া যায়। এতগুলো বছর পেরিয়ে এসে অবশেষে এই নৌকার জায়গা হবে গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়ামে। যাতে দর্শনার্থীরা হাজারও বছরের পুরনো নৌকাটি দেখতে পারে। জানান যায়, গ্র্যান্ড জাদুঘর পর্যন্ত নৌকাটি টেনে নেয়ার জন্য একটি বিশেষ রিমোট-কন্ট্রোল গাড়ি বেলজিয়াম থেকে আমদানি করেছে মিশর।
মিশরীয়রা মৃত্যুর পর মৃতদেহ কিংবা মমির সঙ্গে তার ব্যবহৃত ও প্রিয় বিভিন্ন জিনিস সমাধি দিত। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকের সম্রাট ছিলেন খুফু। তার এই সৌরনৌকাটি লম্বায় ৪২ মিটার (১৩৮ ফুট) এবং এর ওজন ২০ টন। এই নৌকাটিকে ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও প্রাচীনতম কাঠের তৈরি নিদর্শন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। ফারাও সম্রাট খুফুকে খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬৬ সালে এখানে সমাহিত করা হয়।
খুফু ছিলেন প্রাচীন মিশরের পুরাতন রাজত্বের সময়কালীন এক ফারাও। তিনি ২৫৮৯-২৫৬৬ খ্রিস্টপূর্ব পর্যন্ত রাজত্ব করেন। চতুর্থ রাজবংশের তিনি ছিলেন দ্বিতীয় ফারাও। সাধারণভাবে তাকে গিজার মহা পিরামিডের নির্মাতা হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে। এই বিশাল পিরামিডটিকে প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি বলে ধরা হয়ে থাকে। গিজার তিনটি পিরামিডের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো আর বড় এটি। মিশরের এল গিজা নামক স্থানের কাছে অবস্থিত গিজার মহা পিরামিড বা খুফুর পিরামিড।।১৪০ মিটার (৪৬০ ফুট) উঁচু পিরামিডে তিনটি প্রধান প্রকোষ্ঠ আছে। এর গ্র্যান্ড গ্যালারির দৈর্ঘ্য ৪৭ মিটার এবং উচ্চতায় ৮ মিটার। বিজ্ঞানীরা পিরামিডটির ভেতরে একটি ‘বড় শূন্যস্থানের’ সন্ধান পেয়েছেন।
ইতিহাসের তথ্য অনুসারে, এই পিরামিডটি তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৫০০০ বছর আগে। এর উচ্চতা প্রায় ৪৮১ ফুট। এটি ৭৫৫ বর্গফুট জমির উপর স্থাপিত। এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল প্রায় ২০ বছর। এটি নির্মাণ করতে প্রায় লাখখানেক শ্রমিক খেটেছিল।