Offbeat: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একা ৮০০০ শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন

ডায়ানা বুডিসাজেভিক(budisazevic)। নামটা চেনে চেনা ঠেকছে কি? ফিরে যাওয়া যাক ১৯৩৯ সালে। দ্বিতীয় যুদ্ধের প্রকোপে বিধ্বস্ত চারিদিক। মানুষের প্রতি মানুষের চরম নির্মমতা, হিংসার বহিঃপ্রকাশ সর্বত্র।…

budisazevic

ডায়ানা বুডিসাজেভিক(budisazevic)। নামটা চেনে চেনা ঠেকছে কি? ফিরে যাওয়া যাক ১৯৩৯ সালে। দ্বিতীয় যুদ্ধের প্রকোপে বিধ্বস্ত চারিদিক। মানুষের প্রতি মানুষের চরম নির্মমতা, হিংসার বহিঃপ্রকাশ সর্বত্র। সেই অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পায়নি শিশুরা। ১৯৪৫ সালে গিয়ে শেষমেশ শান্ত হয় বিশ্ব। তবে ধ্বংসের রেশ ছিল পরবর্তী আরও কয়েক বছর। (Offbeat ) ডায়ানা বুডিসাজেভিক যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন নাৎসিদের হত্যালীলার মধ্যেই প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন প্রায় ৮০০০ জন শিশুর।

যুদ্ধ শেষে ওই শিশুরা তাঁকেই মা হিসেবে মনে করত। শিশুগুলোর এই জ্ঞানটুকু ছিল যে ডায়না তাদের জন্মদাত্রী মা নয়, তবে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে তিনি একরকম নতুন জীবন দিয়েছিলেন ওদের। সেদিক থেকে ডায়নাই ছিলেন তাদের দ্বিতীয় মা। আর এই ভালবাসাটুকুই ছিল তাঁর কাছে পরম তৃপ্তির। ( Offbeat )

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তিনি কীভাবে বাঁচিয়েছিলেন হাজার হাজার শিশুকে। ক্ষমতা লাভের নেশায় একজোট হয় জার্মানি-ইটালি-জাপান। সারা বিশ্বে রাজত্ব করবে তারা, এটাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। তাদের সেই চক্রান্তের বিরুদ্ধে আক্রমণ এনেছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো শক্তিধর দেশগুলো। সেই থেকেই সূত্রপাত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের। আর যেকোনোও যুদ্ধের ফলেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ। তার বিরূপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও হয়নি। সেই হিংসা থেকে রেহাই পায়নি শিশুরাও। তেমনই যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন ডায়ানা। ( Offbeat )

তিনি ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার বাসিন্দা। ক্রোয়েশিয়া ছিল নামেই স্বাধীন, রাজ চলত জার্মানির নাৎসি সরকারের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বিপুল অস্ত্রের প্রয়োজনে, অস্ত্র কারখানাগুলোতে শ্রমিকের জোগান বাড়াতে জার্মানির নজর পড়েছিল ক্রোয়েশিয়ায়। সেখান থেকে সুস্থ নারী-পুরুষদের বন্দি করে জার্মানি নিয়ে যেতে শুরু করে নাৎসি বাহিনী। তবে ওই সকল নারী-পুরুষের সন্তানরা থেকে যায় ক্রোয়েশিয়াতেই। প্রথমে ওই সকল শিশুগুলোকে হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। তবে হোমের হাল ছিল অতিব জঘন্য এবং অস্বাস্থ্যকর। তাই স্বাভাবিকভাবেই শিশুরা অসুস্থ হতে শুরু করে। অপরদিকে চিকিৎসাব্যবস্থাও তেমন ভালো ছিল না।

এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে ক্রোয়েশিয়ার জ্যাগ্রেবের এক হাসপাতালে যান ডায়ানা। সেখানকার এক ডাক্তারের স্ত্রী ছিলেন তিনি। হাসপাতালের ভিতরে তিনি ঢুকতেই দেখতে পান, মেঝেতে অসুস্থ পড়ে রয়েছে শতাধিক শিশু। এমনকি তাদের অনেকে বেঁচেও ছিল না। ওই দিনই তিনি মনঃস্থির করে নিয়েছিলেন, এই অনাথ শিশুদের বাঁচাবেন, যেভাবেই হোক। আর যেমন ভাবনা তেমন তার কাজ। সমস্ত শিশুগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। নতুন করে বাঁচার আলো দেখান তাদের। এভাবেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন ৮০০০ শিশুর মা।