সারাবছর যেন আমরা জীবন যুদ্ধে অপরাজেয় থাকতে পারি, জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে পারি। এই লক্ষ্য নিয়ে বিজয়া দশমীর দিন দেবী বিসর্জনের মন্ত্র পাঠের ঠিক পরেই হয় অপরাজিতা পূজা।
দশমী পূজোর দিন দেবী দুর্গার বিসর্জনের পরে বিজয় লাভের সঙ্কল্প নিয়ে হয় অপরাজিতা পূজা। “অপরাজিতা” দুর্গার আর এক রূপ। তিনি চতুর্ভূজা। দেবীর হাতে শঙ্খ, চক্র, বর ও অভয়মুদ্রা। গায়ের রং নীল। ত্রি নয়না ও মাথায় চন্দ্রকলা। বিজয়া দশমীর দিন দুর্গা বিসর্জনের মন্ত্র পাঠের ঠিক পরেই মণ্ডপের ঈশাণ কোণে অষ্টদল পদ্ম এঁকে অপরাজিতা লতা রেখে এই দেবীর পূজা হয়।
সেকালের রাজারা শরৎকালে নবরাত্রি ব্রতের পরে বিজয়া দশমীতে যুদ্ধ যাত্রা করতেন। কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্র’-তে এ সময়কেই যুদ্ধ যাত্রার শ্রেষ্ঠ সময় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পণ্ডিত রঘু নন্দন তাঁর ‘’তিথিতত্ব’’ গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে বলেছেন, যে রাজা দশমী ত্যাগ করে যাত্রা করেন, সারাবৎসর যাবৎ তাঁর কোথাও জয় লাভ হয় না।
একটি সাদা অপরাজিতা গাছকে দেবীরূপে কল্পনা করে পূজা করা হয়। কেউ কেউ আবার ঘট স্থাপন করেও দেবী অপরাজিতার পূজা করে থাকেন। পূজার ফল লাভের জন্য হাতে অপরাজিতা লতা বাঁধার রীতিও রয়েছে। দেবীর কাছে প্রার্থনা জানানো হয় ‘‘হে অপরাজিতা দেবী– তুমি সর্বদা আমার বিজয় বর্ধন করো, আমার মঙ্গল ও বিজয় লাভের জন্য আমি দক্ষিণ হাতে তোমাকে ধারণ করছি– তুমি শত্রু নাশ করে নানা সমৃদ্ধির সহিত আমাকে বিজয় দান করো, রামচন্দ্র যেমন রাবণের উপর বিজয় লাভ করেছিলেন, আমারও যেন সেরূপ জয় লাভ হয়’’।