কলকাতায় ইংরেজরা পাকাপোক্ত ভাবে ঘাঁটি গাড়লেও আর্মেনিয়ান সম্প্রদায়ই প্রথম কলকাতায় গির্জা নির্মাণ করে। এই গির্জা নির্মাণের পরে পরেই কলকাতায় একে একে তৈরি হয়েছিল পর্তুগিজ ও ইংরেজদের গির্জাগুলি। কলকাতার নাগরিকরা খ্রিষ্টীয় অনুষ্ঠান বড়দিনের (Christmas) আস্বাদ পেতে থাকে এই গির্জাগুলির সূত্রে।
এই প্রসঙ্গে স্বপন ঘোষ চৌধুরী তাঁর ব্যাখ্যায় লিখেছেন যে, কলকাতার প্রথম আর্চ বিশপ রেজিনাল্ড হেবার ১৮২৩ সে তাঁর জার্নালে উল্লেখ করেছেন “সে সময় ট্যাঙ্ক স্কোয়ার ও চৌরঙ্গী অঞ্চলের প্রত্যেক সাহেব বাড়িই নতুনকরে রঙ করা হত আর দেবদারু গাছের পাতা, ফুল লতাপাতা দিয়ে সাজানো হত।
দক্ষিণে ঠাকুরপুকুরের রেভারেন্ড লঙ সাহেবের গির্জা, গড়েরমাঠের সেন্টপলস্ ক্যাথিড্রাল, ট্যাঙ্কস্কয়ারের (ডালহৌসি) সেন্ট জনস চার্চ থেকে শুরু করে শহরের সমস্ত খৃষ্টান উপাসনা মন্দির গুলিতে উৎসবের বান ডেকে যায়। আকাশচুম্বি গির্জার চূড়ো থেকে ঝুলতে থাকে লাখ-লাখ
টুনিলাইটের চিলমীলিকা। বৈদ্যুতিক আলো আর মোমবাতির শিখায় মায়াবি জগৎ তৈরি হয় গির্জার ভিতরে। ক্রিসমাসের ক্যারল গাইতে-গাইতে মানুষের শোভাযাত্রা পরিক্রমা করে শহরের অলিগলি।
ওদিকে নিউমার্কেট যেন ডিজনিল্যান্ড। বানভাসি আলোর মালায় তার,জৌলুস শহরবাসীদের চুম্বকের মতো আকর্ষন করতে থাকে। ‘ক্রিসমাস স্পেশাল’ কেক ও অন্যান্য জিনিস কেনাকাটায় ধুম পড়েযায় সেখানে।বড়দিনে বাঙালির এরকম মাতোয়ারা রুপ দেখে, কেউ-কেউ একে ‘বিলিতি দুর্গোৎসব বলেও বর্ণনা করেছেন।
২৪ তারিখের রাত ১২ টায় গির্জায় গির্জায় শুরু হতো চার্চ অর্গান, পাইপ অর্গান বাজনা সহযোগে ভজনা-সঙ্গীত। শেতাঙ্গ সাহেব-বিবিরা বছরভোর আমোদ ফুরতিতে কাটাতে ভালোবাসতেন। তাঁরা পারতপক্ষে গির্জা মুখো হতেন না অন্য সময়ে। শুধু বছরের এই দিনটিতে তাঁরা প্রভু যীশুর সম্মুখে মিলিত হয়ে পুণ্যি অর্জন করতেন। বড়দিন উপলক্ষ্যে বিলেতের বাড়িতে-বাড়িতে টাঙানো হতো মিশলটো আর হলি নামক চিরসবুজ লতাপাতা। খ্রিস্টমাসের বার্তা বহন করে আনতো রবিন পাখি। শীতের,পাতা ঝরার দিনে রোমে চির হরিৎ বৃক্ষের ডাল দিয়ে ঘর সাজানোর প্রথা ছিল। আইভি লতার পান পাতার মতো হৃদয় আঁকা আকৃতির পাতা ও লাল বেরি দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হতো।এখানে আর সেসব মিলবে কোথা থেকে। ফলে ইংরেজ বাবু-বিবিদের বাড়ির ফটকে দুদিকে থাকত হিন্দু মতে বড়-বড় কলাগাছ। দরজা ও থামে ঝোলানো হতো ফুলের শিকল। ছাদের নিচে ঝুলত সুলভ লতাপাতা সমেত রঙিন কাচের গোলক। এটাই এখানকার ক্রিসমাস ট্রি। এখানেই তাঁরা বসাতেন জবড়জং নাচ ও খানাপিনার আসর।
সাবেক কলকাতায় খ্রিষ্টমাস ইভের জমকালো আসর বসত উইলসন হোটেল বা আজকের গ্রেটইস্টার্ন হোটেলের একতলার বিরাট হলঘরে। রাধাপ্রসাদ গুপ্তের লেখা থেকে জানা যায় ” ক্রিসমাস ডিনার ” যা সারা বছরের সবচেয়ে বড় ভোজের একটা বিশেষ চরিত্র ছিল। অভিজাত সাহেব-বিবিরা সন্ধ্যা হতে-না-হতেই এখানে এসে মিলিত হতেন।পরস্পর পরস্পরকে কোলাকুলি করতেন। সেই সঙ্গে চলত উপহার দেওয়া নেওয়া। সে সন্ধ্যায় হলঘরের নাম দেওয়া হতো ‘হল অফ নেশনস্। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জাতীয় পতাকা সেদিন টাঙানো হতো এখানে।শুরু হত ইংরেজি কায়দার নাচ
‘বল নাচ’। বিবি সাহেবারা গাউনের দুপাশ ধরে পা মেপে মেপে নাচতেন আর সেই সাথে তাল ঠুকে নাচতেন সঙ্গী সাহেবরা। এর পর ডিনার। তা সাঙ্গ করে সাহেব-বিবিদের হল ছেড়ে বেরিয়ে গুড বাই বলার অপেক্ষা মাত্র। এবার গোটা হল প্রায় ভোররাত পর্যন্ত দখল করে রাখতেন কাঁচা পয়সার নতুন কাপতেন কলকাতার ফিরিঙ্গি বাবু-বিবিরা। শুরু হতো সঙ্গে আনা পেশাদার খ্যমটা নাচের বাইজিদের উদ্দাম নৃত্য। সেতো নাচ নয়, ডিনার সেরে বেরিয়ে যাওয়া মেমসাহেবদের গাউন ধরে নাচার ভঙ্গিমাকে নকল করে নেচে মজা করা আর তাই নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়া। একসময় ঢালাও স্বাধীনতায় তাঁদের মোচ্ছব যে মাত্রা ছাপিয়ে গুটি গুটি পায়ে অশ্লীলতার দোরগোড়ায় পৌঁছাত, সেকথা বলাই বাহুল্য।
বিলিতি খাবার পদগুলিও ছিল বিশেষভাবে তৈরি। যেমন ; রোজমেরি ও বে-লিফ (তেজপাতা) দিয়ে রান্না করা বোরস্ হেড বা শুয়োরের মাথা আপেল ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সাজিয়েগুজিয়ে পরিবেশন করা হত।টার্কির রোস্ট, ডাক রোস্ট, জাঙ্গল ফাউল রোস্ট, জঙ্গলী খরগোসের রোস্ট, সসেজ। এর সঙ্গে থাকত বিরাট খ্রিসটমাস মিন্স পাই, বিশেষ ধরনের টার্ট, ডেসার্ট, ফ্রুটকেক, খ্রিস্টমাস প্লাম পুডিং, ট্যাঞ্জারিন লেবু, মনাক্কা, কাজু, আখরোট, পেস্তা, কাঠবাদাম, কিসমিস, নানা ধরনের চকোলেট, ক্যান্ডি ইত্যাদি। এবং অবশ্যই থাকত খোদ টেমস নদীর দেশ থেকে আনা বিলিতি পানীয় পোর্টার, ম্যাডিরা, ক্ল্যারেট,সাইবার, শেরি এবং অবশ্যই দেশী বিয়ার।
এতো গেল অভিজাত ধনীদের কথা। কিন্ত এই ধনী অভিজাতদের সঙ্গে বড় বড় সাহেবদের হৃদ্যতা থাকলেও তাঁরা নাবিক সৈনিক বা লোফার বিদেশিদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। নব্য বাঙালি ধনী অভিজাতদের বাড়িতে সাহেবদের নিয়ে নাচসভা ভোজসভার আয়োজন হতো যথেষ্ঠই, কিন্ত টাভার্ন বা পাঞ্চ হাউসে গিয়ে তাঁরা কখনও গোরা পল্টনদের বারোয়ারি নাচ গান হল্লায় যোগদান করতেন না। তবে উৎসবতো ছোট বড় সকলের জন্য, তাই এই উৎসবের ভাগিদার ডাচ, ওলন্দাজ,
পর্তুগিজ, ফরাসি, ইংরেজ নাবিক, নেভির সাহেব, গোরা পল্টন, ট্যাঁস ফিরিঙ্গি অজ্ঞাতকুলশীল হল্লাবাজ লোফার সাহেবদের দল এদেশীয় পচাই মদের আকর্ষণে এদের প্রধান আড্ডাখানা ট্যাঙ্ক স্কয়ার ( ডালহাউসি ) লালবাজার, কসাইতলা ( বেনটিঙ স্ট্রীট ) ডেকারস লেনের ট্যাভার্ন ও পাঞ্চহাউসগুলোতে(একধরনেরশুঁড়িখানা) বসে নাচ গান আর হল্লাবাজিতে মেতে উঠতো।তবে ১৭৮০ সালে লালবাজারের ও আলিপুরের হারমনিক ট্যাভার্ন কলকাতার উচ্চ সমাজের সেরা মজলিস মহলে পরিণত হয়েছিল।আলিপুর পুলিশ কোর্ট এখন যেখানে সেখানেই ছিল আলিপুর হারমনিক ট্যাভার্ন।
রেল চলাচল বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজ শাসক গোষ্ঠীর বশংবদ ভারতের রাজা মহারাজারা ,দলে দলে কলকাতায় আসতেন প্রভূত অর্থ ব্যয় করে বড়লোক হিসাবে নাম কেনার,শাসক সাহেবদের খুশি করার, নানা রকম বিনোদনের আর জাঁকজমকে বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ পালনের জন্যে।
প্রতি বছরই বড়দিনে উইলসন হোটেলের বিলাসবহুল স্যুটগুলোতে এসে উঠতেন দ্বারভাঙ্গার মহারাজা, কোচবিহারের মহারাজা, পাতিয়ালার মহারাজা, গোয়ালিয়ার মহারাজা, নবাব অব পতৌদি, ইন্দোরের মহারাজাদের মতো অভিজাতরা। স্যুট গুলির ভাড়াও ছিল সবচেয়ে বেশি। এই স্যুটগুলো ঐসব অভিজাতরাই ব্যবহার করতেন। তাঁদের হোটেলের কামরার সামনে উর্দিপরা সব নিজস্ব পরিচারকরা ভিড় করে থাকত। তাদের কোমরের বেল্টে নিজ নিজ মনিবের নাম খোদাই করা থাকত, যেমন পাতিয়ালা মহারাজার পরিচারকের বেল্টে খোদাই করা থাকত এইচ এইচ পাতিয়ালা। অর্থাৎ হিজ হাইনেস পাতিয়ালা। এখানেই শেষ নয় আরো অনেক কিছু আছে। যেমন গ্রেটইস্টার্ন হোটেলের সামনে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থাটা। খ্রিস্টমাসের এই সময় যেহেতু সম্ভ্রান্তরা উইলসনে অবস্থান করছেন তাই তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই অন্য সময়ের দেশী পুলিশ সরিয়ে হোটেলের নিরাপত্তার দায়িত্ব ভার দেওয়া হত কেবল লালমুখো গোরা পল্টনদের। এই বড় মানুষদের যাতায়াতের পথে যাতে কোন অনাহুত বা গরুর গাড়ি ( তখন পথে আকচার চলাচল করত ) এসে না পড়ে। একজন ইউরোপীয়ান পুলিশ অফিসারের কাজই ছিল এই রকম লোক বা গাড়িকে হোটেলের সামনে দিয়ে যাতায়াতের বদলে আশপাশের গলি বা রাস্তা দিয়ে যেতে বাধ্যকরা । ১৮৮৭ সালে স্টেটসম্যন পত্রিকায় এমনই এক খবর
বড়দিনের সবচেয়ে জমজমাপিনার আসর বসত বড়লাটের প্রাসাদে বা আজকের রাজভবনে। যাকে বলে রাজকীয় ভোজের আসর। এই আসরে ডাক পেতেন সুবে বাংলার ডাকসাইটের ইংরেজ রাজ কর্মচারীরা, ফোর্ট উইলিয়ামের উচ্চপদস্থ সেনাকর্তারা,আর সম্ভ্রান্ত রাজা মহারাজারা । এখানে মোচ্ছব শুরু হত ব্রেকফাস্ট দিয়ে আর শেষ হত বল নাচ দিয়ে। এই রীত রেওয়াজ ও ঢালাও খরচের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন লর্ড কর্ণওয়ালিস যিনি তাঁর সাদাসিধে জীবনযাত্রার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। এই কারনেই ১৭৮৫ সাল থেকে এই রাজকীয় ভোজের আয়োজন সম্পূর্ণ ভাবে তুলে দেন। অবশ্য তিনি এর চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে যেতে পারেননি, তাই তাঁর লাটসাহেবির মেয়াদ ফুরোতেই আবার যে-কে-সেই !
ইঙগ-বঙ্গীয় সমাজ তখন যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কলকাতার ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত মিস মার্গারেট ম্যাকপিস-এর রিপোর্টে আছে ১৯৩৮এ বাংলার গবর্ণর লর্ড ব্র্যেবোর্ন আয়োজিত ক্রিসমাস “বল” পার্টির এলাহি ব্যবস্থার কথা । রাজা মহারাজা ও ১৪০ জন গন্যমাণ্য অতিথির নামে কার্ড পাঠানো হয়েছিল। রাতভর চলেছিল খানা-পিনা। ভদ্রলোকেরা রেড ওয়াইন পান করে গড়াগড়ি যেতেন এমন কথাও রিপোর্টে আছে। এই এলাহি ভোজসভার খরচ পড়েছিল তখনকার দিনে ৫,২৯৬টাকা।
ওয়ারেন হোস্টিংস-এর আমলে ১৭৮০ সালের মে মাসে ইংল্যান্ড থেকে কলকাতায় এসেছিলেন এলিজা ফে। তাঁর স্বামী আইন ব্যবসায়ী অ্যান্টনি ফে কলকাতার সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার ছিলেন। এলিজা ফে তাঁর বোনকে লেখা ১৭৮১ সালের ২৭শে জানুয়ারির এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন : “গত চিঠি লেখার পর থেকে আমরা এখানে ক্রিসমাসের ফুর্তিতে মশগুল হয়ে আছি। ইংল্যান্ডে বোধহয় ক্রিসমাসে এত সমারোহ হয় না, কিন্ত এখানে প্রাচীন কালের উৎসবের মতো বেশ ধুমধাম করে ক্রিসমাস পর্ব পালন করা হয়।”
আর এক ইংরেজ মহিলা ফ্যানি পার্কস কলকাতায় এসেছিলেন ১৮২২ সালের নভেম্বর মাসে। তিনি তাঁর ভ্রমন কাহিণিতে লিখেছেন : ” ক্রিসমাসের দিন দেখেছি বাড়ির ভৃত্যরা গাছ লতাপাতা দিয়ে গেট সাজায় এবং চারিদিকে ফুলের মালা ঝুলিয়ে দেয়। বেয়ারা ধোপা, আর্দালি, সহিস, কোচম্যন ও অন্যান্য সকলে রেকাবে ও ট্রেতে করে নানা রকমের ফলমূল, কেক, মিস্টি, মাছ, মাংস ইত্যাদি সাজিয়ে ফুলের মালা দিয়ে নিয়ে আসে এবং বকশিস চায়। ” ফ্যানি পার্কস এই বকশিসের নাম দিয়েছিলেন কিসমিস বকশিস যা আসলে ‘ডলি’ নামে পরিচিত ছিল। ফ্যানি পার্কস-এর লেখায় আরো পাওয়া যায় যে সাহেব বাড়ির বেয়ারা,খানসামা, কোচম্যন ও অন্য কাজের লোকেরা বড়দিনে তাদের ইংরেজ মনিবদের ‘ডলি’ বা ভেট পাঠাতেন। এছাড়াও ইংরেজদের প্রতি আনুগত্য দেখাতে ‘ডলি’ পাঠাতেন ইংরেজদের সঙ্গে কাজের সূত্রেযুক্ত কেরানি, বেনিয়া, মুৎসুদ্দি ও দালালরা । এখন যেমন বড়দিন মানেই কেক উপহার দেওয়া সেকালে কিন্ত তেমন ছিল না। তখনকার ‘বাবু-কলকাতার’ উপহারের মধ্যে থাকত গাঁদাফুল, কমলালেবু আর ভেটকি মাছ। ‘ বসন্তক ‘ পত্রিকাতেও সেকথা লেখা আছে।
কলকাতার সুপ্রিম কোর্টের চিফ জাস্টিস স্যর এলাইজাইম্পে এখন যেখানে পার্ক স্ট্রিট সেখানে তৈরি করালেন একটা ডিয়ার পার্ক যাতে বলগা হরিণের টানা স্লেজগাড়ি চড়ে সান্টা ক্লজ সোজা সেই পার্কেই ল্যান্ড করতে পারেন। এখন সে পার্কও নেই হরিণও নেই। কিন্ত লোকের বিশ্বাস সান্টা পার্ক স্ট্রিটে অবশ্যই আসবেন।
বড়দিনের অপরিহার্য অঙ্গ ক্যারল। আসলে ক্যারল বলে পরিচিত গানগুলি ছিল বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকসঙ্গীত। পরবর্তি কালে গির্জায় ক্যারল গাওয়ার সূচনা হয়।পুরানো কলকাতার ক্যারল বা খ্রিস্টকীর্তনের দলে সামিল হতেন রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়,কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, গুরুদাস মৈত্র এবং ম্যাকডোনাল্ড সাহেব। এঁদের পিছনে খোল-করতাল বাজাতে-বাজাতে উদ্বাহু নৃত্য সহযোগে আসতেন গোরা সাহেবের দল।
এই কীর্তনের দল পরে এক জায়গায় সমবেত হয়ে মুরগির মাংস বাদ দিয়ে নাকি নিরামিষ খাবার অর্থাত লুচি ও মন্ডা দিয়ে ফলার সেরেছিলেন। যাকে বলে খাঁটি বৈষ্ণবমতে পাত পেড়ে খাওয়া। তাই নিয়ে সেকালের বিভিন্ন সাময়িকপত্র ব্যঙ্গবিদ্রুপে সরব হয়েছিল সেসময়। বড়দিনের এসব কীর্তিকলাপ দেখে লোকে ব্যঙ্গ করে বলত খ্রিস্টাষ্টমী।
খ্রিস্টের জনম দিন, বড়দিন নাম ।