Saturday, December 6, 2025
HomeOffbeat Newsবাগনানের গ্রামে চন্ডীমন্ডপ, শতবর্ষের দোরগোড়ায় ঐতিহ্যবাহী সর্বজনীন কালীপুজো

বাগনানের গ্রামে চন্ডীমন্ডপ, শতবর্ষের দোরগোড়ায় ঐতিহ্যবাহী সর্বজনীন কালীপুজো

কয়েক দশক আগেও গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল চন্ডীমন্ডপ

- Advertisement -

Special Correspondent, Kolkata: ‘আমাদের চণ্ডীমন্ডপ হইতে বিলাতি কারখানাঘরের প্রভূত জঞ্জাল যদি ঝাঁট দিয়া না ফেলি, তবে দুই দিক হইতেই মরিব — অর্থাৎ বিলাতি কারখানাও এখানে চলিবে না, চণ্ডীমন্ডপও বাসের অযোগ্য হইয়া উঠিবে।’ ‘আত্মশক্তি’ প্রবন্ধে উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর নগরায়ণ এবং গ্রামীণ সভ্যতার দ্বন্দ্বকে এভাবেই তুলে ধরতে চেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শুধু এই প্রবন্ধ নয় রবীন্দ্রনাথের ‘চোখের বালি’, ‘রাজর্ষি’র মতো উপন্যাসে গল্পে উঠে এসেছিল চণ্ডীমন্ডপের কথা। রবীন্দ্রনাথের পরেও বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ইছামতী’ উপন্যাসেও ‘গ্রামীণ জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ’ হিসেবে উঠে এসেছিল চণ্ডীমন্ডপের কথা। বাংলার ধূলিধূসরিত গ্রাম্যজীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ চন্ডীমন্ডপ। বর্তমান প্রজন্ম এই শব্দটির সাথে সেভাবে পরিচিত না হলেও বেশ কয়েক দশক আগেও গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল চন্ডীমন্ডপ।
এবার কালীপুজোয় বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসা চন্ডীমন্ডপকেই থিম হিসাবে তুলে ধরল বাগনানের বাঙালপুর বয়েজ ক্লাব। এবার তাদের পুজো ৯৯ তম বর্ষে পদার্পণ করল।
শতবর্ষের দোরগোড়ায় বাঙালপুর বয়েজ ক্লাবের পক্ষ থেকে গড়ে তোলা হচ্ছে চণ্ডীমন্ডপ। উদ্যোক্তারা জানান, মাটি, খড়, কাঠের মাধ্যমে মন্ডপটি নির্মাণ করা হয়েছে। আল্পনার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে রং। গ্রামীণ হাওড়ার অন্যতম প্রাচীন এই সর্বজনীন কালীপুজোর রন্ধ্রে, রন্ধ্রে জড়িয়ে ইতিহাস। শোনা যায়, দেশে স্বাধীনতা আন্দোলন যখন জোরকদমে চলছে তখন হাওড়া জেলার অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী বিভূতিভূষণ ঘোষ তাঁর সহযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে এই পুজোয় এসে মাতৃশক্তির আরাধনা করেছিলেন। বাঙালপুর বয়েজ ক্লাবের অন্যতম কর্তা দীপঙ্কর ঘোষ জানান, বিগত প্রায় দশবছর ধরে আমরা থিমের পুজো করছি।
গতবছর থেকে করোনার জেরে বাজেট সহ আয়োজনে বেশ কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। এবার আমাদের বাজেট প্রায় দু’লক্ষ টাকা। কীভাবে এলো চন্ডী মন্ডপের ভাবনা? — দীপঙ্কর বাবুর কথায়, আমাদের গ্রামে রয়েছেন মা সিংহবাহিনী। মা’য়ের বাপেরবাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি রয়েছে। পূর্ব পুরুষদের থেকে শুনেছি মায়ের মন্ডপ ছিল চন্ডীমন্ডপ সদৃশ। সে-ই মন্ডপকেই আমরা আমাদের পুজোয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। রাত পোহালেই দীপাবলি। শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বাঙালপুর বয়েজ ক্লাবের সদস্যরা।

Advertisements
Advertisements
- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular