Sir Birendranath Mukherjee: দেশের ভারী শিল্পের রূপকার হয়েও বিস্মৃত এই বাঙালি

Special Correspondent, Kolkata: দেশের ইস্পাত শিল্পের প্রথম রূপকার তিনি। তাও এক বাঙালি তিনি। অথচ তিনি বিস্মৃত আজ। তিনি হলেন প্রখ্যাত বাঙালি শিল্পপতি স্যার বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়…

Birendranath Mukherjee

Special Correspondent, Kolkata: দেশের ইস্পাত শিল্পের প্রথম রূপকার তিনি। তাও এক বাঙালি তিনি। অথচ তিনি বিস্মৃত আজ। তিনি হলেন প্রখ্যাত বাঙালি শিল্পপতি স্যার বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (Birendranath Mukherjee)।

বীরেন্দ্রনাথের জন্ম কলকাতায়। বাবা বিশিষ্ট শিল্পপতি স্যার রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। মাতা লেডি যাদুমতী। বীরেন্দ্রনাথের বাবা দেশে শিল্পের পথপ্রদর্শক ছিলেন। বীরেন্দ্রনাথ শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার পর কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজ হতে বি.এ ও এম.এ পাশ করেন। দেশে ফিরে ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে মার্টিন অ্যান্ড কো কোম্পানিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৪২ সালে নাইট উপাধি পান।

মার্টিন এণ্ড কোম্পানিতে যোগদানের সাত বছরের মধ্যে তিনি বার্ন কোম্পানির এবং ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে মার্টিন কোম্পানির অংশীদার হন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ওই দুই কোম্পানির যুক্ত হয়ে মার্টিন-বার্ন কোম্পানিতে পরিণত হলে বীরেন্দ্রনাথ তার ম্যানেজিং ডিরেক্টর হন। এদিকে ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে পিতার মৃত্যুর পর শিল্প সমস্ত ভার তার উপর এসে পড়ে । স্টিল কর্পোরেশন অব বেঙ্গলের সভাপতি হন। তার উদ্যোগে বার্নপুরে ইণ্ডিয়ান আয়রন অ্যাণ্ড স্টিল কোম্পানির প্রতিষ্ঠা হয়। বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতায় তিনিই দেশে প্রথম বৈদেশিক মুদ্রায় ভারী শিল্পের প্রসার ঘটান। তারই কর্মোদ্যমে দেশে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ব্যাপক বিস্তার ঘটে। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে বীরেন্দ্রনাথ স্যার উপাধি পান। পশ্চিমবঙ্গের তিনিই শেষ ‘স্যার’ উপাধিপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব

১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে বারাণসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনশাস্ত্রের অধ্যাপক ফণীভূষণ অধিকারীর কন্যা রাণু অধিকারীকে বিবাহ করেন। ঠাকুরবাড়ির আঙিনায়, আবহে রবীন্দ্র সান্নিধ্যে বেড়ে ওঠা রাণু প্রকৃত অর্থে শিল্পানুরাগী লেডি রাণু মুখার্জি হয়ে উঠেছিলেন। স্বামীর পর তিনি নাইট উপাধি পান। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, কলকাতা স্থাপন করেন। তিনি এবং স্যার বীরেন মুখোপাধ্যায়ের দুই কন্যা এবং একটি পুত্র ছিল। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ২০১২ সালের উপন্যাস, রাণু ও ভানু, মূলত আংশিকভাবে তার অসম্পূর্ণ আত্মজীবনী নিয়ে রচিত।

স্যার বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ১৯৪০-৪১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার শেরিফ হয়েছিলেন। তৎকালীন ইম্পিরিয়াল ব্যাঙ্ক অব ইণ্ডিয়ার (বর্তমানে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইণ্ডিয়া র) কলকাতা পর্ষদের সভাপতি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফেলো, শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পরিচালন পর্ষদের সভাপতি, ও আই আই টি খড়্গপুরের গভর্নিং বডির সদস্যসহ বহু সাম্মানিক পদে বৃত ছিলেন। স্যার বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ৮৩ বছর বয়সে কলকাতায় ১৯৮২ সালে ৪ নভেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।