পাখির মতো ঘুমন্ত ডাইনোসর পেলেন বিজ্ঞানীরা

৭০ মিলিয়ন বা সাত কোটি বছর আগের একটি ডাইনোসরের অদ্ভুত প্রজাতির খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা। তাও আবার ঘুমন্ত। নতুন ডাইনোসরের এই জীবাশ্ম ও রীতিমত আলোড়ন ফেলে…

৭০ মিলিয়ন বা সাত কোটি বছর আগের একটি ডাইনোসরের অদ্ভুত প্রজাতির খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা। তাও আবার ঘুমন্ত। নতুন ডাইনোসরের এই জীবাশ্ম ও রীতিমত আলোড়ন ফেলে দিয়েছে দক্ষিণ মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমির এক জনশূন্য এলাকায়।

PLOS 1 জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে এই নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের নাম জ্যাকুলিনিকাস ইয়ারুই। এরই মধ্যে এই প্রাণীটিকে ঘিরে বিভিন্ন গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের অনুসন্ধান থেকে উঠে আসছে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য। লক্ষ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীতে ডাইনোসরের মতো দৈত্যাকার প্রাণীরা রাজত্ব করত একথায় নেই কোনও ভুল।

এই ডাইনোসর সম্প্রদায় তথা অতিকায় প্রাণীদের নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহলের শেষ নেই। সুতরাং স্বাভাবিকভাবে অতীত খুঁড়ে নিত্য নতুন তথ্য অনুসন্ধানের চেষ্টায় থাকেন বিজ্ঞানীরা। এই বিশাল প্রাণীদের মৃত্যু কবে হয়েছিল এই নিয়ে মোটামুটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় দেখা যায় যে, পৃথিবীর সঙ্গে এক বিশাল উল্কা পিণ্ডের সংঘর্ষ হয়। যার ফলে পৃথিবীতে উপস্থিত সব ডাইনোসর ধ্বংস হয়ে যায়।

এমনকি প্রমাণ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ডাইনোসরের হাড় ও কঙ্কাল পাওয়া যায়। উনবিংশ শতাব্দীতে প্রথম ফসিল খুঁজে পাওয়ার পর থেকে আজও ডাইনোসর নিয়ে নতুন নতুন আবিষ্কার হয়ে চলেছে। আর এবার সেখানে যোগ হলো আরেকটি নতুন ডাইনোসরের জীবাশ্ম। সম্প্রতি জীবাশ্মটি পাওয়ার পর অত্যন্ত যত্ন সহকারে উদ্ধার করেন বিজ্ঞানীরা। কোন হার যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে তারা সতর্ক ছিলেন।

জীবাশ্ম বিদ্যের প্রথম কাজ ছিল এই উদ্ধার হওয়া জীবাশ্মটি আগের ডাইনোসরের প্রজাতির নাকি নতুন কোনও প্রজাতির সে বিষয়ে পরীক্ষা করা। রিপোর্ট অনুযায়ী যে ডাইনোসরের জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া গিয়েছে তার ৭ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে বসবাস করত। এর দেহে কিছু অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বৈশিষ্ট্যটি ছিল এর ঘুমানোর পদ্ধতি।

বিজ্ঞানীরা জীবাশ্মটি উদ্ধার করতে গিয়ে দেখেছেন এটি এমন ভাবে রয়েছে যেন ঘুমিয়ে রয়েছে। অর্থাৎ যখন মারা গিয়েছিল তখন ঘুমোচ্ছিল। এই ডাইনোসর পাখির মত করে ঘুমায়। জীবাশ্মবিদদের এটি এক বিরল আবিষ্কার। এটিকে পরীক্ষা করলে পরবর্তীকালে আরো অনেক নতুন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। সেই থেকে হয়তো আরো অনেক নতুন বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানা যাবে।

সমীক্ষা অনুযায়ী জ্যাকুলিনিকাস ইয়ারুই খুব একটা বড় ছিল না। এটি একটি ছোট ডাইনোসর ছিল যা তিন ফুট লম্বা এবং ৬৫ কিলো ওজনের ছিল। এদের ছিল পাখির মত মাথার খুলি, বড় চোখ, পা দুটো ছোট। বিজ্ঞানীদের মতে তারা খুব দ্রুত দৌড়াতে পারতো।