Offbeat: গুহার গায়ে মৌর্য বংশের বিপুল গুপ্তধনের সন্ধান

কথায় বলে এই দেশের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে রহস্য এবং গুপ্তধনের খনি। সেরকমই সন্ধান পাওয়া গেল বিহারের রাজগিরে ভাইভার পর্বতের সোন ভান্ডার গুহায়। যেখানে গুহার…

কথায় বলে এই দেশের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে রহস্য এবং গুপ্তধনের খনি। সেরকমই সন্ধান পাওয়া গেল বিহারের রাজগিরে ভাইভার পর্বতের সোন ভান্ডার গুহায়। যেখানে গুহার দেওয়ালে দেওয়ালে স্থাপত্যের নিদর্শন। ইতিহাস থেকে জানা যায় মৌর্য বংশের রাজা বিম্বিসারের বিশ্রাম করবার জায়গা ছিল পশ্চিম দিকের গুহা। নিজের ছেলের কাছ থেকে বিপুল সম্পত্তি রক্ষা করতেই নাকি এই গুহার গোপন স্থানে সেগুলি লুকিয়ে রাখেন।

যার খোঁজ ২০০০ বছর পরও জানা যায়নি। শুধু যে তাই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাজা বিম্বিসার ও অজাতশত্রুর নামও। ছেলের হাতে গৃহবন্দি অবস্থাতেই ৪৯১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বিম্বিসার মারা যান। এরপর বহু বছর ধরে অনেক খোঁড়াখুড়ি করেও খুঁজে পাওয়া যায়নি সেইসব মহামূল্য সোনাদানা।

প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানান, এই গুহা প্রাকৃতিক নয়, মানুষের হাতে তৈরি। সম্ভবত তৃতীয় বা চতুর্থ শতাব্দীতে খনন করা হয়েছিল এই গুহা। বৈভব পর্বতের মধ্যে এই দুটো গুহা নাকি তৈরি করেছিলেন ভৈরদেব নামে এক জৈন সন্ন্যাসী।

এই গুহাগুলোর সঙ্গে বৌদ্ধধর্মের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। পাহাড়ের গায়ে সেই গুহার দেয়ালে রয়েছে দরজার মতো একটি কাঠামো। আর সেখানেই এক আশ্চর্য অজানা ভাষায় লেখা রয়েছে কিছু কথা। এই গুহাকেই স্থানীয়রা চেনেন বিম্বিসারের গুহা বলে। এই গুহার মধ্যেই লুকোনো আছে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন সোনা, মণিমাণিক বোঝাই সিন্দুক, বিম্বিসারের লুকিয়ে রাখা গুপ্তধন।

মনে করা হয়, গুহার দেওয়ালে দরজার পাশে অজানা ভাষায় লেখা সেই লিপিগুলি পড়তে পারলেই হাতের মুঠোয় চলে আসবে রাজা বিম্বিসারের সেই লুকোনো রত্নভাণ্ডার। সত্যিই কি নিজের ধনসম্পত্তি এমন জনমানবহীন গুহার ভিতরে লুকিয়ে রেখেছিলেন বিম্বিসার। সে নিয়েও রয়েছে নানারকম গল্প, নানারকম উপকথা। মৌর্য বংশের অন্যতম প্রধান রাজা ছিলেন বিম্বিসার।

মাত্র ১৫ বছর বয়সেই বাবা মহাপদুম তাকে মগধের রাজা হিসাবে অভিষিক্ত করেন। জানা যায় , বিম্বিসারের চেয়ে বয়সে প্রায় পাঁচ বছরের ছোট ছিলেন গৌতম বুদ্ধ৷ বোধিলাভের বেশ কিছু আগেই তরুণ গৌতমের সঙ্গে দেখা হয়েছিল বিম্বিসারের।

ছেলেকে কিছু না বললেও ছেলের কুসঙ্গের হাত থেকে নিজের মহামূল্য ধনসম্পদ বাঁচানোর জন্য সেসব তিনি লুকিয়ে ফেলেছিলেন কোনো এক গোপন দুর্গম এলাকায়। আজীবন বহু তল্লাশ চালিয়েও সে ধনসম্পত্তি খুঁজে পাননি অজাতশত্রু।
একজোড়া কৃত্রিম গুহার মধ্যেই না কি বছরের পর বছর ধরে এক আশ্চর্য উপায়ে লুকোনো আছে রাজা বিম্বিসারের গুপ্তধন। এই নিয়ে অনুসন্ধান কম হয়নি, কিন্তু সেই কুবেরের ধন সম্পদের খোঁজ পায়নি কেউ। ইংরেজ আমলেও অর্থের লোভে কম খোঁড়াখুঁড়ি হয়নি সোন ভাণ্ডারে। তবে হাজার চেষ্টা করেও খোঁজ পাওয়া যায়নি সেই রত্নভাণ্ডারের। লিপি উদ্ধার করতে না পেরে শেষে অস্ত্রের আঘাতেই পথ করে নিতে চেয়েছিল ইংরেজরা।