Bangladesh: সফলতার ৭০০ পর্ব, ‘বালিকা বধূ’ রুখতে অপারেশন চালায় কিশোরী রেবা

করোনা সংকট জীবন স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে। লকডাউন পরিস্থিতিতে যখন বিশ্ব থমকে গেছিল তখন উপমহাদেশের গ্রামীণ জীবনে নেমে এসেছিল ভয়াবহ আরও এক সমস্যা- বালিকা…

Bangladesh: সফলতার ৭০০ পর্ব, 'বালিকা বধূ' রুখতে অপারেশন চালায় কিশোরী রেবা

করোনা সংকট জীবন স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে। লকডাউন পরিস্থিতিতে যখন বিশ্ব থমকে গেছিল তখন উপমহাদেশের গ্রামীণ জীবনে নেমে এসেছিল ভয়াবহ আরও এক সমস্যা- বালিকা বধূ। বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুবাদে বাল্যবিবাহের হার ভারত, (Bangladesh)বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মত দেশগুলিতে অতি দ্রুত বাড়তে থাকে। সেই সংকট কাটাতে বাংলাদেশি দোলা আক্তার রেবা নিয়ে ফেলে এক সংকল্প। তার নেতৃত্বে চলে বাল্যবিবাহ আটকানো অভিযান। ৭০০ বাল্যবিবাহ আটকেছে। সামাজিক গোঁড়ামি ভাঙার এক অভূতপূর্ব লড়াই করেছেন বাংলাদেশি দোলা। লিখলেন সহেলী দে।

বাল্যবিবাহ কোনও মতেই মেনে নিতে পারেননি দোলা। প্রায় ৭০০ টি বাল্য বিয়ে রোধ করেছেন তিনি। দোলার মা বাল্যবিবাহের শিকার। মায়ের গল্পই অনুপ্রেরণা দেয় ১৭-বছর বয়সী তরুণী দোলা আক্তার রেবাকে। দোলা এবং তার শিশু ফোরামের বন্ধুরা মিলে করোনা সংকট সময়ে ৭০০ টি বাল্যবিবাহ রুখেছেন। ১০ বছর বয়স থেকে শুরু করেছেনন প্রতিবাদ। কাজটি মোটেই সহজ ছিলনা। পেয়েছেন একাধিক হুমকি। তবে সেগুলোর কোনটাই তাকে রুখতে পারেননি। আজ সকলের পরিচিত বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে দোলার যুদ্ধ।Bangladesh: সফলতার ৭০০ পর্ব, 'বালিকা বধূ' রুখতে অপারেশন চালায় কিশোরী রেবা

এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে মায়ের বাল্যবিবাহ নিয়ে দোলা বলেন, “একদিন আমি আমার মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমার সবচেয়ে সুন্দর শৈশব স্মৃতি কোনটি? আমার মা আমাকে বলেন, যদি একটা মেয়ে ১৩ বছর বয়স থেকে সংসার সামলায়, তাহলে তার আবার কিসের সুন্দর শৈশবস্মৃতি?”

বাংলাদেশের রক্ষণশীল সমাজে বদল এনেছেন দোলা। বাল্যবিবাহ নিয়ে দোলা বলেন, “এই জিনিসটা আমাকে খুব ছুঁয়ে যায়। এখন যদি আমারও এই বয়সে বিয়ে হয়ে যায় তাহলে আমারও কোন বন্ধুবান্ধব থাকবে না, খেলাধুলা করতে পারব না, শৈশবটা শেষ হয়ে যাবে।“

Advertisements

১৭ বছর বয়সী দোলা আক্তার রেবা একজন শিশু অধিকার কর্মী এবং তিনি বাল্যবিবাহ রোধে কাজ করেন। কীভাবে শুরু হল এইযাত্রা? “দেখলাম যে শিশু ফোরাম নামে একটি সংগঠন মাঠে বসে মিটিং করছে। আমার কাছে ইন্টারেস্টিং লাগে যে, আমার বয়সী ছেলেমেয়েরা মাঠে বসে কী মিটিং করছে। ওদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, ওরা বাল্যবিবাহ ও শিশু নির্যাতন এসব বন্ধে কাজ করে। একটি ফর্ম পূরণ করে তাদের সঙ্গে যুক্ত হলাম। এরপর তারা আমাদের নানা প্রশিক্ষণ দিলেন। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাজ শুরু হয়। আমি দশ বছর বয়স থেকে শিশু ফোরামের সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের শিশু ফোরাম ২০২০ সালে করোনার শুরু থেকে ২০২১ সাল প্রায় ৭০০-র মতন বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে পেরেছি।“Bangladesh: সফলতার ৭০০ পর্ব, 'বালিকা বধূ' রুখতে অপারেশন চালায় কিশোরী রেবা

করোনার সময় শিশু সুমাইয়ার (ছদ্মনাম) বিয়ে ঠেকিয়েছেন দোলা ও তার দল। মেয়ে বিয়েতে রাজি নয় এবং তার মা ভাবে যে করোনাকালে স্কুল হয়ত আর খুলবেনা। পড়াশোনার খরচ চালানোও কঠিন ছিল, তার ওপর এতগুলো ছেলেমেয়ে। তাই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিয়ের দুদিন আগে রাত ১১ টার সময় দোলা জানতে পারে বিষয়টা। এরপর রাতেই দোলা দলের সবার সঙ্গে কথা বলে রাখেন। এরপর সংগঠনের স্টাফ ও এলাকার প্রভাবশালীদের নিয়ে পরিবারকে অনেক করে বোঝানোর পর তারা বিয়ে না দিতে রাজি হন। এইভাবেই শত শত বাল্যবিবাহ রোধ করেছেন তিনি।