ধনতেরাস বা ধনত্রয়োদশী—দীপাবলির সূচনা ঘটে এই শুভ দিন থেকে। ২০২৫ সালে ধনতেরাস পড়ছে শনিবার, ১৮ অক্টোবর। সাধারণত এই দিন মা লক্ষ্মী, ভগবান ধনভন্তরী ও ভগবান গণেশের আরাধনা করা হয়। তবে এ বছর দিনটি শনিবারে পড়ায় এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে শনিদেবের প্রভাব। ফলে এ বছরের ধনতেরাস জ্যোতিষশাস্ত্রের দিক থেকেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
পাঁচ দেবতার পূজা
প্রথাগতভাবে ধনতেরাসে গণেশ, মা লক্ষ্মী, ভগবান বিষ্ণু, ভগবান শিব ও ভগবান ব্রহ্মার পূজা করা হয়। এ ছাড়া আয়ুর্বেদের দেবতা ধনভন্তরীকেও আরাধনা করা হয়। বিশ্বাস করা হয়, এই দিন তাঁর পূজা করলে দীর্ঘায়ু, সুস্থতা ও আর্থিক স্থিতি লাভ হয়।
কিন্তু যেহেতু ২০২৫ সালের ধনতেরাস শনিবারে পড়ছে, তাই এ দিন শনিদেবের আরাধনা করাও জরুরি। জ্যোতিষ মতে, শনিদেবের পূজা করলে জীবনে শৃঙ্খলা আসে, অশুভ শক্তি দূর হয় এবং ধনসম্পদ টিকে থাকে।
শনির প্রভাবে এ দিনে কী কেনা উচিত নয়
ধনতেরাস মানেই শুভ কেনাকাটা। তবে এ বছর শনির প্রভাব থাকায় কিছু জিনিস কেনা একেবারেই এড়ানো উচিত—
লোহার বা ইস্পাতের জিনিসপত্র
কালো রঙের পণ্য বা সামগ্রী
সরিষার তেল
চামড়াজাত দ্রব্য
বিশ্বাস করা হয়, এগুলি শনিদেবের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এ দিন এগুলি কিনলে অশুভ প্রভাব নেমে আসতে পারে।
ধনতেরাস ২০২৫: শুভ কেনাকাটার টিপস
👉 এ বছরও সোনা, রূপা ও তামার পাত্র কেনা অত্যন্ত শুভ বলে ধরা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে—
রূপার বা তামার পাত্র কিনে তাতে জল বা ধনিয়া ভরে রাখলে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ মেলে।
সোনার অলঙ্কার কেনা সমৃদ্ধির প্রতীক।
পিতলের (Brass) বাসনও এই বছরে অত্যন্ত শুভ।
এই সব পাত্রে মিষ্টি বা শস্য ভরে পূজা করলে তা পরিবারের জন্য সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্য বয়ে আনে বলে বিশ্বাস করা হয়।
শনিদেবের আশীর্বাদ কিভাবে পাবেন?
শনিদেবকে তুষ্ট করতে এ দিন—
প্রদীপে তিলের তেল না দিয়ে ঘি ব্যবহার করা ভালো।
গরিবদের খাদ্য ও পোশাক দান করলে শনির কৃপা লাভ হয়।
কালো কাক বা কুকুরকে খাবার খাওয়ানোও শুভ বলে ধরা হয়।
২০২৫ সালের ধনতেরাস শুধুই সোনা-রূপার কেনাকাটার দিন নয়, এটি আধ্যাত্মিক ও জ্যোতিষীয় দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। শনিদেবের ছায়ায় পড়া এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃত সম্পদ শুধু বস্তুগত নয়, বরং মানসিক শান্তি ও শৃঙ্খলাতেও নিহিত।
যদি মা লক্ষ্মীর সমৃদ্ধির সঙ্গে শনিদেবের শৃঙ্খলা একত্রে থাকে, তবে জীবনে আসে সৌভাগ্য, স্থিতি এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি। তাই এ বছরের ধনতেরাসে সামান্য সতর্কতা মেনে চললে আপনার ঘরে প্রবাহিত হবে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ ও শনিদেবের সুরক্ষা।