Chinese Kali Temple: ট্যাংরার চাইনিজ কালি মন্দির : হিন্দু-চিনার মিলনস্থল

জয় কালী, কলকাত্তাওয়ালি! থুড়ি চাইনিজওয়ালি।কলকাতাতে রয়েছে চাইনিজ কালী মন্দির৷ ট্যাংরা এলাকার চায়না টাউনের এই মন্দির খুবই প্রসিদ্ধ৷ কলকাতার চিনা পাড়ার আলাদাই ঐতিহ্য রয়েছে৷ আর চিনা…

chinese-kali-temple-in-tangra

short-samachar

জয় কালী, কলকাত্তাওয়ালি! থুড়ি চাইনিজওয়ালি।কলকাতাতে রয়েছে চাইনিজ কালী মন্দির৷ ট্যাংরা এলাকার চায়না টাউনের এই মন্দির খুবই প্রসিদ্ধ৷ কলকাতার চিনা পাড়ার আলাদাই ঐতিহ্য রয়েছে৷ আর চিনা পাড়ায় অবস্থিত কালীমন্দিরে রয়েছে নিত্য পুজোর রীতি৷ আর সেখানেই পুজোর পর প্রসাদের জন্য হাত পাতলে পাওয়া যায় চাইনিজ খাবার৷ মাকে পুজো দেওয়া হয় নানান পদের চাইনিজ় খাবার দিয়ে যার মধ্যে থাকে নুডলস, চপস়ি, আরও কত কী!পাশাপাশি মিষ্টি ও ফল প্রসাদও নিবেদন করা হয়ে থাকে দেবীকে। মন্দিরে আগত সকল দর্শনার্থীদের সেই প্রসাদ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে তা সম্পুর্ণ নিরামিষ।

   

শহরে চিনারা বহু শতাব্দী আগে ঘাঁটি গাড়লেও, এই কালী মন্দির তৈরি করেন এক চিনা ব্যবসায়ী, প্রায় ছ’দশক আগে।সে মন্দির প্রতিষ্ঠার একটা ইতিহাসও রয়েছে বইকি। আজ থেকে প্রায় বছর ৬০-৭০ বছর আগে,এক বৌদ্ধ চিনা দম্পতির সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। চিকিৎসকরাও কোনওভাবেই কোনও নিরাময়ের পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। সেই সময়ে এলাকার একটি গাছের নীচে থাকা দুটি পাথরের সামনে হত্যে দিয়ে পড়েছিলেন। তারপর একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে তাদের সন্তান। আর তারপর থেকেই শক্তির আরাধনায় বিশেষ বিশ্বাস জন্মায় তাদের। সেই ভক্তি ও বিশ্বাসের ওপর ভর করে চিনা পাড়ায় চিনা কালী মন্দির প্রতিষ্টিত হয়।

chinese-kali-temple-in-tangra

অবশ্য নামে চিনা কালী মন্দির হলেও, এই মন্দিরের পুজোপাঠ সবই হয় কিন্তু হিন্দু রীতিতে। বাঙালি বামুন পুরোহিত নিত্যপুজো সারেন। কিন্তু ট্যাংরার চাইনিজ মা কালীর অভিভাবক চিনা পড়শিরাই। মন্দিরের কেয়ারটেকার চেং ইয়ি শেং-এর বউ-মেয়েরা কানাডায়। দেবীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে নিজের ধর্মও পরিবর্তন করেছেন বৃদ্ধ চেং। বৌদ্ধ থেকে হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন তিনি।

নিয়ম মেনে সন্ধ্যারতি, প্রসাদ নিবেদন সবটাই একাই সামলান তিনি। প্রতিদিন প্রায় অগণিত বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টার ধর্মাবলম্বীরা এখানে এসে মা’কে আরতি করেন। আবার, মন্দিরে গেলে দেখতে পাওয়া যায় দুটি কালী মূর্তিকে। মাতৃ আরাধনার পাশাপাশি, পুজো করা হয় দেবাদিদেব মহাদেবেরও।

আজও ট্যাংরার এই চিনা কালীই কিন্তু প্রমাণ করে দেন বিশ্বাসে মিলায় বস্তু…. কারণ শক্তির দেবীর প্রতি টান থেকেই ধর্মের বেড়াজাল ছিন্ন করে চিনা বৌদ্ধরা জ্বালেন মোমবাতি।মাথা ঠেকান দেবী কালীর চরণে।বোধ হয় এখনও সীমান্তের সমস্ত বিপদ দূর করতে হিন্দু-চিনা একসঙ্গে মা কালীর সামনে পুজোয় বসেন।