দীপাবলির পাঁচ দিনের উৎসবের সূচনা ঘটে ধনতেরাস দিয়ে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতেই পালিত হয় এই শুভ দিনটি। পুরাণ মতে, এই তিথিতেই সমুদ্র মন্থনের সময় ভগবান ধন্বন্তরী ও দেবী লক্ষ্মী আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাই এই দিনটি ধন ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
ধনতেরাস ২০২৫ তারিখ ও শুভ মুহূর্ত:
এই বছর ধনতেরাস পড়েছে শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫। পঞ্জিকা অনুযায়ী, কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষ ত্রয়োদশী তিথি শুরু হবে দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে এবং শেষ হবে পরের দিন ১৯ অক্টোবর দুপুর ১টা ৫১ মিনিটে। উদয়তিথি অনুসারে ধনতেরাস উদযাপন করা হবে ১৮ অক্টোবরেই। ক্রয়-বিক্রয় ও পূজার শুভ সময় থাকবে ১৮ অক্টোবর দুপুর ১২টা ১৮ মিনিট থেকে ১৯ অক্টোবর দুপুর ১টা পর্যন্ত।
ধনতেরাসে কী কিনবেন? Things Not Be Donated on Dhanteras
ধনতেরাসে সোনা, রূপা, তামা ও পিতলের জিনিস কেনা অত্যন্ত শুভ বলে ধরা হয়। গয়না, বাসনপত্র বা এই ধাতুগুলির জিনিস ঘরে আনলে ধনসম্পদ বৃদ্ধি ও সৌভাগ্য আসে বলে বিশ্বাস। যাঁরা সোনা-রূপা কিনতে পারেন না, তাঁদের জন্য ঝাড়ু কেনাও শুভ বলে মনে করা হয়। ঝাড়ু দেবী লক্ষ্মীর প্রতীক এবং এটি ঘর থেকে অশুভ শক্তি দূর করে বলে বিশ্বাস করা হয়।
ধনতেরাসে যেসব জিনিস দান করা অনুচিত:
টাকা বা মুদ্রা দান – এই দিনে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়, তাই টাকা দান করলে সম্পদ গৃহ থেকে বেরিয়ে যায় বলে মনে করা হয়। প্রয়োজনে একদিন আগে বা পরদিন দান করা উত্তম।
কালো রঙের জিনিস দান – কালো রং নেতিবাচক শক্তির প্রতীক। কালো পোশাক, জুতো বা ব্যাগ দান করা অশুভ বলে গণ্য।
তেল বা ঘি দান – আলো ও উজ্জ্বলতার প্রতীক এই উপকরণ দুটি দান করলে গৃহের ইতিবাচক শক্তি কমে যায়। বরং ঘি বা সরিষার তেলে প্রদীপ জ্বালানো শুভ।
লোহার বা কাঁচের জিনিস দান – জ্যোতিষ মতে, লোহা শনির এবং কাঁচ রাহুর সঙ্গে যুক্ত। তাই এই জিনিস দান করলে অর্থক্ষতি ও মানসিক অশান্তি হতে পারে।
দেবী লক্ষ্মীর কৃপা পেতে যা করবেন:
ধনতেরাসের সন্ধ্যায় যমদীপ ও লক্ষ্মী পূজা করুন। ঘর পরিষ্কার রাখুন এবং প্রবেশপথে প্রদীপ জ্বালান। “শ্রী শ্রী মহালক্ষ্ম্যৈ নমঃ” মন্ত্র জপ করে লক্ষ্মী ও কুবের দেবের আরাধনা করুন। এদিন কেনা জিনিস কেবল শুভ কাজে ব্যবহার করুন—এতেই ঘরে আসবে ধন, সৌভাগ্য ও সুখ-সমৃদ্ধি।