বাঙালি সাজের অন্যতম প্রধান অঙ্গ বেনারসি শাড়ি, যা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। কিন্তু বেনারসি শাড়ির জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে নকল বা কৃত্রিম বেনারসি শাড়ির সংখ্যাও বেড়ে গেছে। তাই আসল বেনারসি শাড়ি চিনে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন দাম অনেক বেশি থাকে। আসল বেনারসি সিল্ক শাড়ি চেনার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দিয়েছেন ফ্যাশন বিশেষজ্ঞ নীশিত গুপ্ত এবং ডিজাইনার দীপিকা গোবিন্দ।
১. শাড়ির বিপরীত দিকে দেখে নিন
আসল বেনারসি শাড়ি হাতে বোনা হয়, তাই এর শাড়ির বিপরীত ভাসমান সুতো বা ফ্লোটিং থ্রেড দেখা যায়। মেশিনে তৈরি শাড়ি সাধারণত একদম মসৃণ থাকে, এবং কম সুতোর কাজ থাকে।
২. বেনারসি GI (Geographical Indication) ট্যাগ
একটি আসল বেনারসি শাড়ি GI ট্যাগসহ আসে, যা তার আসলত্ব এবং ভারতীয় শহর বারাণসী থেকে আসার প্রমাণ দেয়। শাড়ি কেনার আগে এই সিলিটি চেক করতে ভুলবেন না।
৩. শাড়ির ওজন পরীক্ষা করুন
আসল বেনারসি শাড়ি তুলনামূলকভাবে একটু ভারী হয়, কারণ এতে ব্যবহৃত সিল্ক থ্রেড এবং আসল জরি কাজ থাকে। যদি শাড়িটি হালকা মনে হয়, তবে তা হয়তো আসল নয়।
৪. জরি পরীক্ষার উপায়
আসল বেনারসি শাড়িতে সোনালী এবং রুপালী জরি থাকে। যদি জরি নমনীয় হয় এবং রেড বা সিলভার থ্রেড বের হয়ে আসে, তবে তা আসল। যদি সাদা বা প্লাস্টিকের মতো থ্রেড বের হয়, তবে তা নকল।
৫. রিং টেস্ট
শাড়িটি একটি ছোট রিংয়ের মধ্যে দিয়ে পাস করান। যদি এটি সহজে পাস হয়, তবে তা সিল্ক শাড়ি। সিন্থেটিক শাড়ি রিংয়ের মধ্যে আটকে যাবে।
৬. মূল্য এবং আসলত্ব পরীক্ষা
আসল বেনারসি শাড়ি একটি মূল্যবান ইনভেস্টমেন্ট, এবং এর দাম যথাযথ হতে হবে। যদি দাম খুব কম থাকে, তবে সেটা হয়তো কৃত্রিম বা পাওয়ার লুমের শাড়ি।
অতিরিক্ত টিপস
ডিজাইনার দীপিকা গোবিন্দ বলেন, “বেনারসি শাড়ির মটিফস খুবই সূক্ষ্ম ও বিস্তারিত হয়। সাধারণত ফুলের পাতা, বেল আমরু, আম্বি ইত্যাদি মটিফ থাকে। এছাড়া, আসল শাড়ির পেছনে সুতোর দাগ বা পিন মার্ক থাকে, যা হাতে বোনা শাড়ির পরিচয়।”
তিনি আরও বলেছেন, “শাড়ির সুতোর উপর পোলে পলিয়েস্টার কিনা, এটি যাচাই করতে এক পিস সুতো পুড়িয়ে দেখতে পারেন। যদি সুতোটির গন্ধ মানুষের চুলের মতো হয়, তবে তা সিল্ক।”
এভাবে কিছু সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি সহজেই চিনতে পারবেন আসল এবং নকল বেনারসি সিল্ক শাড়ির মধ্যে পার্থক্য।