Durga Puja: আড় চোখে হাসি, তারপরেই জিলিপি

উৎসব মানেই মুখ মিষ্টির ব্যাপার স্যাপার। সেই মিষ্টি রসে চুপচুপে প্যাঁচালো জিলিপি (Jalebi)হয় তাহলে কামড়ে দেওয়াটা প্রথমে হোক। গরম জিলিপি পেটে ঢুকে যাওয়ার আগে আর…

উৎসব মানেই মুখ মিষ্টির ব্যাপার স্যাপার। সেই মিষ্টি রসে চুপচুপে প্যাঁচালো জিলিপি (Jalebi)হয় তাহলে কামড়ে দেওয়াটা প্রথমে হোক। গরম জিলিপি পেটে ঢুকে যাওয়ার আগে আর একটা, আর একটা এমন চলতেই থাকুক। মন ভরে জিলিপি খান আর আড় চোখে হাসুন। সেই হাসি জিলিপির প্যাঁচের মত হবে। মানে হাজারো ইঙ্গিত কথা। চ্যাটচ্যাটে আঙুল চুষে নিন।

জিলিপি মানেই ঘোর প্যাঁচের কথা। সেটা এই মিষ্টির রকম সকম দেখেই মালুম হবে। আসলে প্যাঁচালো এই মিষ্টির অতীতটাও যে ঘোর প্যাঁচের। শত শত বছর ধরে জিলিপি খেয়ে চলেছে মানুষ। লম্বা সফরের হরেক কাহিনী জুড়েছে।

  • জিলিপির জন্মকথা লেখা আছে তুরস্কের গ্রন্থাগারে।
  • জিলিপির বংশ পরিচয় লিখেছেন মহম্মদ বিন হাসান আল বাগদাদি।
  • জিলিপির কম করেও ছশো বছর বয়স। তখন তার নাম জালেবিয়া।

খাচ্ছেন খান। জিলিপি কাহিনীও শুনুন। বাংলা ভাষার জিলিপি শব্দ আসলে ফার্সিতে জালেবিয়া নামে সুপরিচিত। সেখান থেকে উর্দুতে হয় জালেবি। তবে এসব আধুনিক জিলিপির কথা। মানে মাত্র ছশো বছর আগের কথা। ১৬০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দে সংস্কৃত ভাষায় জিলিপি প্রস্তুতের তালিকা মিলছে। এটি যে আক্ষরিক অর্থে জিলিপি তার প্রমাণ নেই।

জিলিপির বংশ পরিচয় ঘাঁটতে গিয়ে মিলছে বাগদাদের কথা। যিনি জিলিপি চর্চা করেছিলেন তাঁর নাম মহম্মদ বিন হাসান আল বাগদাদি। তিনি রান্নার গবেষক। ত্রয়োদশ শতকের মানুষ বিন হাসান বাগদাদি। তিনি রান্নাবিদ। সেই হাসান বাগদাদি একটি বই লিখেছিলেন। দুনিয়ার হরেক রান্না পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করে হাসান বাগদাদির নজরে পড়ল রসে চোবানো প্যাঁচালো মিষ্টি। তিনি খেলেন। মজলেন। লিখলেন।

হাসান আল বাগদাদির সেই কিতাবে লেখা আছে জিলিপির জন্ম পরিচয়। বইটি সংরক্ষিত আছে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। সেখানে আছে জিলিপি কথা। তবে ইরানে এই মিষ্টান্ন ‘জেলেবিয়া’ নামে পরিচিত। এই মিষ্টি ইরানে রমজানের সময় বিতরণ করা হত। তবে জিলিপির আরও পুরনো কিছু বংশ পরিচয় খুঁজে পান রান্নাবিদ বাগদাদি। মিশর থেকে জিলিপির উৎস বলে মনে করছেন তিনি।

বাগদাদির লেখা এই বইটির পাতায় পাতায় ছশো বছর আগের দুনিয়ার খাদ্যাভ্যাস ধরা রয়েছে। বিশ্বজোড়া রান্নাবিদরা এই বইটির দর্শন পেতে মরিয়া হন। তাঁদের কাছে এটা পড়া মানে মোক্ষ লাভ করা।

জিলিপির তো জন্ম হয়ে গেল। তারপর দ্যাখো আমি বাড়ছি মাম্মি বলে গুটি গুটি সে চলে এল ভারতে। মধ্যযুগে তুর্কিরা তাদের ‘জেলেবিয়া’ খাবারটি ভারতবর্ষে নিয়ে আসেন।  তারপর আর কে একে আটকায়। শুরু হয়ে গেল জিলিপি যাত্রা।

ভারত ভেঙেছে পাকিস্তান তৈরি হয়েছে। পাকিস্তান ভেঙেছে বাংলাদেশ তৈরি হয়েছে। আর আছে আফগানিস্তান। এই সব দেশে জমিয়ে আছে জিলিপি। একে একমাত্র কামড়েই ভাঙা যায়। সীমান্ত দিয়ে নয়।