গরমে স্বস্তি দিচ্ছে শীতলপাটি, নতুন করে রোজগারের পথ পাচ্ছেন শিল্পীরা

এ বছর গরমের মরশুম শুরু হতে না হতেই হিট ওয়েভ, ২০ কিমি. থেকে ৩০ কিমি. বেগে লু ঝড় এবং হিট স্ট্রোক এর সতর্কতা জারি হয়েছে।…

Madur mat

এ বছর গরমের মরশুম শুরু হতে না হতেই হিট ওয়েভ, ২০ কিমি. থেকে ৩০ কিমি. বেগে লু ঝড় এবং হিট স্ট্রোক এর সতর্কতা জারি হয়েছে। বাড়িতে থাকলেও বিন্দুমাত্র স্বস্তি নেই। এই গরমের দাবদাহ থেকে বাঁচাতে পারে একমাএ বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি কিছু জিনিস। বাড়ির কিছু জিনিসের পরিবর্তন এই গরম থেকে আপনাকে দিতে আরাম।

তবে, মাদুর শিল্প আজ তার ঐতিহ্য হারিয়েছে কালের নিয়মে প্রয়োজনীয়তা ও ক্রেতার অভাবে। এছাড়া বাজারে প্লাস্টিকের মাদুর হাতে বোনা শীতল পাটির বাজার প্রায় দখল করেছে বললেই চলে।

   

আগেকার দিনে, ঘরে ঘরে কেউ এলে মেঝেতে মাদুর বা চাটাই পেতে মানুষকে আপ্যায়ন করার এক বিশেষ রেওয়াজ ছিল। গ্রাম -মফঃস্বল-এ এই চল এখনো থাকলেও, শহরতলীতে মাদুরের গুরুত্ব এখন হারিয়েছে।

উত্তর ২৪ পরগণার চারঘাট থেকে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘরে ঘরে মানুষদের মাদুর শিল্পই রুটি – রুজির একমাত্র পথ। কয়েক বছর আগেও ২৫ – ৩০ টি পরিবার এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সময়ের কালে তারাও এখন জীবিকা পরিবর্তন করেছে। বাঁচার তাগিদ তাদের অন্য পেশায় নিযুক্ত করছে।

তবুও “ইকো ফ্রেন্ডলি” বা “পরিবেশ বান্ধব” এই শব্দ গুলোর চল বিগত কয়েক বছরে বাজারে আসায় আবার মাদুর, জুট, শীতল পাটি, চট —- এই জিনিস দিয়ে নানা রকম প্রয়োজনীয় ও ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি হচ্ছে। যা অনলাইন বিপনি ও শহরের কিছু জায়গা, সরকারি দোকানে পাওয়া যায়। তবে সে সংখ্যা তেমন না হলেও, যদি জেনে নেওয়া যায় এই জিনিসের প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা; তাহলে আবারও এই শিল্প মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে।

জেনে নেওয়া যাক মাদুরের কিছু ব্যবহার যা এই গরমে বাড়িতে এনে দেবে স্বস্তি:

১) ঘরের মেঝেতে শীতল পাটি বা মাদুর বিছিয়ে দিতে পারেন। এর ফলে আপনার ঘর অনেকটাই ঠাণ্ডা থাকবে।

২) ঘরের বা ডাইনিং টেবিলের জানলা কিংবা বারান্দায় পর্দার পাশাপাশি বাঁশের চিক ব্যবহার করলে ঘর অনেক মনোরম থাকে। বাইরে থেকে সূর্যের আলো তির্যকভাবে ঘরে পড়তে পারে না। হালকা বাতাসও ঘরে ভালোই উপভোগ করা যায়।

৩) গরমকালে বাড়িতে হালকা আলো ব্যবহার করলে গরম ভাব কমই লাগে। তার সঙ্গে জুটের ল্যাম্পশেড থাকলে তা ঘরের শোভাও বাড়াবে আর আপনাকে দেবে এক অমোঘ শান্তি।

এই প্রাচীন জিনিসের ব্যবহার ও চাহিদা বাড়ালে মাদুর শিল্প অস্তিত্ব সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। এমন অনেক শিল্পী আছেন যারা ৩০-৩৫ বছর ধরে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ব্যবসায় মন্দা গেলেও এই কাজ থেকে বিরত থাকতে পারছেন না। বরং, এই জিনিসকে কাজে লাগিয়ে আরও আধুনিক মানের গ্রহণযোগ্য পণ্য উৎপাদনে মরিয়া শিল্পীরা।