রাজ্যসভায় নতুন বিল! পাশ হলেই অভিজিৎ গাঙ্গুলীকে ছাড়তে হবে রাজনীতি?

রাজ্যসভায় পেশ করা বিলের জন্য চাপে পড়তে চলেছেন সদ্য নির্বাচিত লোকসভা সংসদ অভিজিৎ গাঙ্গুলী (Abhijit Ganguly)? সেই সম্ভাবনা কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না (Abhijit…

Abhijit Ganguly, MP of Tamluk: A photo of Abhijit Ganguly, a Member of Parliament (MP) representing the Tamluk constituency, with a serious expression, likely taken during a political event or meeting.

রাজ্যসভায় পেশ করা বিলের জন্য চাপে পড়তে চলেছেন সদ্য নির্বাচিত লোকসভা সংসদ অভিজিৎ গাঙ্গুলী (Abhijit Ganguly)? সেই সম্ভাবনা কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না (Abhijit Ganguly)। শুরু হতে চলা বাদল অধিবেশনে লোকসভার পাশাপাশি রাজ্যসভাতেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বিচারপতিদের সরাসরি রাজনীতিতে যোগদানের প্রবণতা ঠেকাবার জন্য একটি বিশেষ বিলও পেশ হওয়ার কথা রয়েছে (Abhijit Ganguly)। আর এই বিল নিয়েই ইতিমধ্যে জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

বাদল অধিবেশনে আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় মোট ২৩ টি প্রাইভেট মেম্বার্স বিলের কথা শোনা যাচ্ছে। তার মধ্যে সর্বাধিক আলোচিত হতে চলেছে আরজেডি সাংসদ এ ডি সিংয়ের পেশ করতে চলা এই বিল। ‘দ্য কনস্টিটিউশন বিল ২০২৪’ অনুযায়ী যে সমস্ত ব্যক্তি তাদের কর্মজীবনে কোনো সাংবিধানিক পদে থাকবেন, অবসরের পর তাঁরা রাজনীতিতে কোনওভাবেই যোগ দিতে পারবেন না। এই তালিকায় একাধিক সাংবিধানিক পদের উল্লেখের পাশাপাশি রয়েছে অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি এবং নির্বাচন কমিশনারদের পদও। তবে এই বিল পাশ করবার জন্য সংবিধানের বেশ কিছু ধারার সংশোধনও করতে হবে। যোগ করতে হবে বিশেষ কিছু ধারাও।

   

ধর্মতলার মঞ্চে দাঁড়িয়েও মমতার হারের হাহাকারে অশনিসংকেত তৃণমূলে?

স্বাভাবিকভাবেই এই বিলের কথা শোনার পর বঙ্গের রাজনৈতিক মহলে যে নামটা সবার আগে আলোচিত হচ্ছে তাহলে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী (Abhijit Ganguly)। ২০১৮ সালের ২রা মে কলকাতা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন অভিজিৎবাবু 9v)। ২০২০ সালের ৩০ শে জুলাই থেকে স্থায়ী বিচারপতির পদ পান জাস্টিস গাঙ্গুলী।

তাঁর এজলাসে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলেছে। যার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য হল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। মামলার পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে রাজ্যের শাসক শিবির কে করা বিভিন্ন তীক্ষ্ণ মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বারবার। এমনকী তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর করা মন্তব্যের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা পর্যন্ত করেছেন। একটা সময়ে রাজ্যের শাসক শিবির বনাম হাইকোর্টের বিচারপতির বেনজির সংঘাত লক্ষ্য করেছে বঙ্গের রাজনৈতিক মহল। দুর্নীতির মামলাতে অভিজিৎবাবুর একের পর এক কড়া নির্দেশ শাসক দলকে রীতিমত বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছিল।

সেই সময় বঙ্গের শাসকদলের একাধিক নেতা-নেত্রী এবং মুখপাত্ররা জাস্টিস গাঙ্গুলীর রায় এবং মন্তব্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ তুলেছেন। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও নাম না করে সেই একই অভিযোগ শোনা গিয়েছে। পরবর্তীকালে চলতি বছরের ৫ই মার্চ জাস্টিস অভিজিৎ গাঙ্গুলী পদত্যাগ করেন। দিন দুয়েক পরেই বিজেপির দপ্তরে গিয়ে হাতে তুলে নেন বিজেপির পতাকা। যোগদানের পুরস্কার হিসেবে সঙ্গে সঙ্গেই পেয়েছিলেন লোকসভায় বিজেপির টিকিট। তমলুকের লোকসভায় বিজেপির হয়ে জয়লাভ করে তিনি বর্তমানে সাংসদ।

আরজেডি সাংসদের প্রস্তাবিত এই বিলে তাহলে কি অভিজিৎ গাঙ্গুলিরও কোনো অসুবিধা আছে? তাঁকেও কি তাহলে সংসদীয় রাজনীতি থেকে অবসর নিতে হবে? সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, আপাতত এখনই সেই সমস্যার সৃষ্টি না হলেও, সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না একেবারেই। কিন্তু সবার আগে বিল পাশ হওয়া দরকার।

১০ লাখ চাকরি তৈরি, বড় ঘোষণা করেও শঙ্কিত মমতা! কেন ?

বিল পাশ হওয়ার পর তাতে কি পরিমার্জন সংশোধন হয় সেটাও লক্ষণীয় বিষয়। এবং তাতে আগামী দিনে কি কি ক্ষেত্র কিভাবে সেটিও লক্ষণীয় বিষয়। সব থেকে বড় কথা সংসদের উভয় কক্ষেই এই বিল পাশ হতে হবে। তবে কেন্দ্রের বর্তমান শাসক দলে প্রাক্তন বিচারপতিদের যোগদানের একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। মধ্যপ্রদেশের আরেক প্রাক্তন বিচারপতি রোহিত আর্যও বিজেপি শিবিরের নাম লিখিয়েছেন। ফলে কেন্দ্রের শাসক শিবিরের তরফ থেকে এই বিল নিয়ে প্রবল বিরোধিতা আশা করাই যাচ্ছে।

ফলে আগামী দিনে এই বিল পাস হওয়ার পরে তার ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতির উপরেই অনেকাংশে নির্ভর করবে বিচারপতিদের রাজনীতিতে যোগদানের বিষয়টি। ফলে আসন্ন বাদল অধিবেশনে রাজ্যসভার এই বিলের পেশ হওয়ার ওপরে চোখ রাখবেন অভিজিৎ গাঙ্গুলি এবং রোহিত আর্য দুজনেই। দুজনেরই রাজনৈতিক ভবিষ্যতের আঁচ হয়ত সে সময় কিছুটা হলেও পাওয়া যাবে।