নিউজ ডেস্ক: ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডে। কিন্তু সেখানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে প্রাণ হারালেন ৫ বাঙালি ট্রেকার। পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরাখণ্ডে গিয়ে আটকে রয়েছেন বহু বাঙালি পর্যটক। হাওড়া থেকে ট্রেকিংয়ের যাওয়া একটি প্রতিনিধিদলের এখনও কোনও খোঁজ নেই। তাঁদের উদ্ধারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা চলছে।
যে ৫ বাঙালি ট্রেকারের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের সঙ্গে একজন গাইড ও চারজন পোর্টার ছিলেন। চারজন পোর্টার ফিরে এলেও গাইডের কোনও খোঁজ মেলেনি। মৃত ৫ বাঙালির মধ্যে তিনজন হাওড়া বাগনানের বাসিন্দা। একজন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঠাকুরপুকুরের এবং অন্যজন নদিয়া জেলার রানাঘাটের বাসিন্দা। মৃতদের মধ্যে চন্দ্রশেখর দাস, সরিৎশেখর দাস ও সাগর দে বাগানের বাসিন্দা। সাধনকুমার বসাকের বাড়ি ঠাকুরপুকুরে এবং প্রীতম রায়ের বাড়ি রানাঘাটে।
মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ অক্টোবর শেষবার তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ হয়েছিল। তারপর বহুবার চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। একটি বেসরকারি সূত্রের খবর, ট্রেকারদের আরও দুটি দেহ পাওয়া গিয়েছে। তবে তাদের নাম জানা যায়নি। ওই ট্রেকিং দলে থাকা মিঠুন দাড়ি নামে এক যুবককে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
আরও পড়ুন: Uttarakhand: দুর্গম সুন্দরডুঙ্গার খাঁজে পড়ে আছে ৪ বাঙালি পর্বতারোহীর দেহ
উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর জেলা প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যেই ওই পাঁচ পরিবারকে ফোনে দুঃসংবাদ জানানো হয়েছে। মৃতদের পরিবার উত্তরাখান্ড থেকে দেহ ফিরিয়ে আনার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।
উত্তরাখণ্ড প্রশাসন জানিয়েছে, ১৪ অক্টোবর এক দল ট্রেকার উত্তরাখণ্ডের হর্ষিল থেকে হিমাচল প্রদেশের ছিটকুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু ১৭ অক্টোবর থেকে ওই অভিযাত্রী দলের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ১৮ অক্টোবর ওই দলটি ঝড়ের কবলে পড়ে। তারপর থেকেই তাদের কোনও খোঁজ নেই। ওই দলেরই ৫ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
এরই মধ্যে হাওড়ার আমতার ১৪ জন একটি দল কাঠগোদামে আটকে আছেন। ওই ১৪ জনের পরিবারের অভিযোগ, হোটেলে খাবার বা পানীয় জল কিছুই মিলছে না। এমনকি বিদ্যুৎ সংযোগও নেই। তাই মোবাইলে চার্জ না থাকায় সেগুলিও অচল হয়ে রয়েছে।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিধ্বস্ত উত্তরাখণ্ডে চরম কষ্টের মধ্যে রয়েছেন পর্যটকরা। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই বাঙালি। আটকে থাকা এই সমস্ত বাঙালি পর্যটকদের উদ্ধারের জন্য ইতিমধ্যেই সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নবান্ন থেকে জানানো হয়েছে, উত্তরাখণ্ড সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বাঙালি পর্যটকদের কিভাবে দ্রুত ফিরিয়ে আনা যায় তার পরিকল্পনাও শুরু হয়েছে। রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী উত্তরাখণ্ড সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
হাওড়া জেলা থেকে অনেকেই উত্তরাখণ্ডে গিয়ে আটকে আছেন। তাদের উদ্ধারের বিষয়ে জনসাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায় বলেছেন, আটকে থাকা পর্যটকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। সরকার চেষ্টা করছে সকলকেই দ্রুত ফিরিয়ে আনার।