৯ লক্ষ চাষিকে শস্যবিমার টাকা প্রদান রাজ্য সরকারের

ঘূর্ণিঝড় দানার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষকদের সহায়তার জন্য রাজ্য সরকার একটি বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। রাজ্য সরকার শস্যবিমার আওতায় মোট ৩৫১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করেছে। এই…

ঘূর্ণিঝড় দানার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষকদের সহায়তার জন্য রাজ্য সরকার একটি বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। রাজ্য সরকার শস্যবিমার আওতায় মোট ৩৫১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করেছে। এই ক্ষতিপূরণ মূলত খারিফ মরশুমে ধান চাষে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। যারা ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে অতিবৃষ্টির সম্মুখীন হয়েছিলেন এবং এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাদের ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় দানা, অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসি (ড্যাম ও জলবিদ্যুৎ কর্পোরেশন) থেকে জল ছাড়ানোর কারণে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি, হাওড়া এবং বর্ধমান জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার কৃষকদের ক্ষতি মেটাতে তাদের জন্য শস্যবিমা প্রদান করার ঘোষণা দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে শস্য বিমা দেওয়া হবে। সেইমতো, প্রায় ৯ লক্ষ কৃষককে ‘বাংলা শস্য বিমা’ প্রকল্পের আওতায় এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

   

নবান্ন সূত্রে খবর, ৩৫১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মধ্যে বেশিরভাগই দেওয়া হয়েছে হুগলি, হাওড়া ও বর্ধমান জেলার কৃষকদের, যাদের ধান চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। শস্যবিমা পরিমাণ নির্ধারণে ‘ইসরো’র উপগ্রহ চিত্র ব্যবহার করা হয়, যার ফলে ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত এবং সঠিকভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছিল।
এছাড়া শস্যবিমা প্রকল্পের আওতায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কৃষকদের সহায়তার জন্য আরো নানা পরিকল্পনা চলছে। শনিবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্তের নেতৃত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পের নথিভুক্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং রবি ও বোরো মরশুমে কৃষকদের শস্যবিমায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে মোট ৭১ লক্ষ ৯৮ হাজার কৃষক নথিভুক্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ১২ লক্ষ ১৩ হাজার আলু চাষি এবং অন্যান্য কৃষকরা অন্তর্ভুক্ত। উল্লেখযোগ্য যে আগের বছর থেকেই আলু এবং আখ চাষিদের জন্য কিছু প্রিমিয়াম অর্থ প্রদান করতে হত, তবে এই বছর থেকে আলু এবং আখ চাষিদের জন্য কোনও প্রিমিয়াম দিতে হচ্ছে না। গত বছরেই বাজেট বক্তৃতায় এই ঘোষণা করা হয়েছিল, যা এবার কার্যকর হচ্ছে।
বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১.১২ কোটি কৃষক মোট ৩৫৬২ কোটি টাকা সহায়তা পেয়েছেন। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ কৃষকদের জন্য একটি বিরাট সহায়ক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা কৃষকদের আর্থিক সংকট মেটাতে এবং তাদের কৃষিকাজ পুনরুদ্ধারে সাহায্য করছে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজ্য সরকার কৃষকদের প্রতি তার দায়িত্ববোধ প্রদর্শন করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত কৃষি পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।