অকাল বৃষ্টি এবং ডিভিসি’র জল ছাড়ার কারণে বাংলায় আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কৃষকরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার কৃষকদের সাহায্য করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছিলেন, আলুর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়িয়ে ৯০০ টাকা করা হবে। কৃষকদের এই ঘোষণার পর কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও, প্রশ্ন ছিল কবে সেই সহায়তা পাওয়া যাবে। এবার রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, যা কৃষকদের সন্দেহ দূর করেছে।
এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, সহায়ক মূল্য বাড়ানোর পাশাপাশি, রাজ্য সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে আলু কিনবে। ১ মার্চ থেকে শুরু হয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলবে আলু কেনার প্রক্রিয়া। মোট ১১ লক্ষ টন আলু কেনার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি কৃষক ৩৫ কুইন্টাল পর্যন্ত আলু বিক্রি করতে পারবেন এবং প্রতি কুইন্টালের জন্য ৯০০ টাকা পাবেন।
আলু কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে পশ্চিমবঙ্গের ১২টি জেলার কৃষকদের জন্য। এই ১২ জেলা হলো—হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার। এই সিদ্ধান্তটি কৃষকদের জন্য বিশাল সাহায্য হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে যারা ফসলের ক্ষতির কারণে বিপদে পড়েছিলেন। রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে এবং তাঁরা নির্দ্বিধায় আলু বিক্রি করতে পারবেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্বে জানিয়েছিলেন যে, অকাল বৃষ্টি এবং ডিভিসি’র জল ছাড়ার কারণে আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সরাসরি আলু কেনার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এটি কৃষকদের আর্থিকভাবে সহায়তা করবে এবং কৃষকরা বাজারের ওঠানামা থেকে রক্ষা পাবেন।
এছাড়া সরকার ছোট এবং প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ৩০ শতাংশ আলু হিমঘরে রাখার ব্যবস্থা করেছে, যাতে তাদের উৎপন্ন আলু পচে নষ্ট না হয়। কৃষকবন্ধু প্রকল্প, কিষান ক্রেডিট কার্ড এবং বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পের নথি দিয়ে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন এই সুবিধার জন্য।
এই পদক্ষেপগুলি সফল হলে, পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা সারা বছর সস্তায় আলু বিক্রি করতে পারবেন, ফলে সাধারণ মানুষও কম দামে আলু কিনতে পারবেন।