নিশানা ২০২৬-এর বিধানসভা ভোট। সেই লক্ষ্যেই রাজ্যের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল—তৃণমূল কংগ্রেস এবং (BJP) বিজেপি—নিজ নিজ কৌশলে এগিয়ে চলেছে। বিহারে চালু হওয়া SIR প্রকল্পকে হাতিয়ার করে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে আক্রমণাত্মক প্রচার। তারা এই SIR (Special Investigation Report)-কে বাংলার ‘অধিকার কেড়ে নেওয়ার’ কেন্দ্রীয় ষড়যন্ত্র হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। বিপরীতে, সেই প্রচারের জবাবে কী হবে বিজেপির রণকৌশল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বুধবার রাতে কলকাতায় বসেছিল বঙ্গ বিজেপির বিশেষ বৈঠক।(BJP)
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপি(BJP) সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য সহ দলের একাধিক শীর্ষ নেতা। আলোচনা হয়, তৃণমূলের প্রচারকে কীভাবে পাল্টা দেওয়া যায়, এবং রাজ্যের প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্র ধরে ধরে সাংসদদের কীভাবে সক্রিয় করা যায় সেই বিষয়েও।
এই বৈঠক কিন্তু হঠাৎ করে নয়। এর আগে দিল্লি থেকে জেলা সভাপতিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন সুকান্ত মজুমদার ও শমীক ভট্টাচার্য। সেই বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দেন, তৃণমূল যেভাবে SIR-কে হাতিয়ার করে প্রচারে নেমেছে, তার পাল্টা প্রচার কেমন হবে, তার একটি সুসংহত পরিকল্পনা চাই। সেই মোতাবেকই বুধবার রাতে রাজ্য স্তরে চূড়ান্ত পরিকল্পনা তৈরির বৈঠক হয়।
বৈঠক সূত্রে খবর, বিজেপির (BJP) প্রতিটি সাংসদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যে, তাঁদের নিজ নিজ লোকসভা এলাকায় আগামী বিধানসভা ভোটের আগে কীভাবে সাংগঠনিক কাজ করবেন, প্রচার করবেন এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে তুলে ধরবেন, সেই রূপরেখা তৈরি করতে হবে। স্থানীয় ইস্যু, বেকারত্ব, শিল্প, কৃষি সমস্যা—এই সব বিষয়েই মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে হবে বলে জানানো হয়।
তৃণমূল সংসদে যেভাবে বিজেপিকে (BJP) আক্রমণ করছে, বিশেষ করে বেকারত্ব, বন্যা পরিস্থিতি, কেন্দ্রীয় বরাদ্দ—এই সব ইস্যুতে, তার মোকাবিলায় কী কৌশল হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, তৃণমূল যেসব অভিযোগ সংসদে তুলছে, বিজেপির সাংসদরা পাল্টা তথ্যসহ তার জবাব দেবেন। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারীর ওপর হামলার বিষয়টি এবং বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও সংসদে সরব হবেন তাঁরা।
এই প্রেক্ষাপটে বিজেপির(BJP) এক নেতার কথায়, “তৃণমূলের SIR প্রচার আসলে মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার প্রচেষ্টা। আমরা মানুষকে বোঝাব যে এই প্রচার ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। আসল ইস্যু থেকে নজর ঘোরাতে তৃণমূল এই পথ নিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় প্রকল্প, উন্নয়নমূলক কাজ, এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান মানুষের কাছে পৌঁছে দেব। এটাই হবে আমাদের প্রচারের মূল কৌশল।”
সব মিলিয়ে ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের রণভূমিতে এখন থেকেই পা ফেলেছে বঙ্গ রাজনীতি। তৃণমূল SIR-কে সামনে রেখে যে আগ্রাসী প্রচারে নেমেছে, তার পাল্টা হিসেবে বিজেপিও ধীরে ধীরে ময়দানে ঘুঁটি সাজিয়ে ফেলছে। এখন দেখার, এই রাজনৈতিক পাল্টা-পাল্টিতে শেষ হাসি কে হাসে।