কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ (WBCHSE) ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য নতুন নিয়ম (WBCHSE Introduces) চালু করেছে। পরীক্ষার স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ বছর থেকে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, পরীক্ষার সময় যদি কোনও পরীক্ষার্থী অসদাচরণে লিপ্ত হয়, তবে তার পুরো পরীক্ষা সরাসরি বাতিল করা হবে।
এই বছরই প্রথমবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সেমেস্টার পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা। এই সেমেস্টার পদ্ধতি চালুর ফলে পরীক্ষার গঠন এবং মূল্যায়নে আরও বেশি স্বচ্ছতা আনতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট ৬৬টি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রতিটি বিষয়ে দুটি সেট প্রশ্নপত্র তৈরি করা হলেও পরীক্ষায় ব্যবহার করা হবে শুধুমাত্র ‘সেট-১’। এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্ভাবনা কার্যত শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা সংসদ।
পরীক্ষার দিন পরীক্ষার্থী ছাড়াও পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের আচরণের দিকেও কড়া নজর রাখা হবে। শিক্ষা সংসদ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, যদি কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষার সময় ইনভিজিলেটর বা পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক কিংবা কর্মীকে হেনস্থা করে বা শারীরিক আঘাত করে, তবে তার পুরো পরীক্ষাই সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করা হবে। এমনকি পরীক্ষাকেন্দ্রে ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলার মতো ঘটনা ঘটালে তা সরাসরি ‘RA’ (Reported Against) হিসাবে নথিভুক্ত হবে।
ডিজিটাল নজরদারিও বাড়ানো হচ্ছে। পরীক্ষক এবং ইনভিজিলেটররা চাইলে সরাসরি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষা সংসদকে কোনও অনৈতিক ঘটনার খবর জানাতে পারবেন। এতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে এবং পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকবে।
শিক্ষা সংসদের এই নতুন উদ্যোগ রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মান আরও উন্নত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সিরিজ, ডিজিটাল রিপোর্টিং সিস্টেম এবং কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালুর ফলে পরীক্ষায় অসদাচরণ বা প্রশ্ন ফাঁসের মতো সমস্যা অনেকটাই কমবে। এই সিদ্ধান্তে শিক্ষক মহল ও অভিভাবক মহলও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা গত কয়েক বছর ধরে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর করার চেষ্টা করছে। সেমেস্টার পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া আরও নির্ভুল হবে এবং পরীক্ষার মানদণ্ড আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নত করার সুযোগ তৈরি হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিজিটাল নজরদারি এবং RA সিস্টেম চালু হলে পরীক্ষার পরিবেশ আরও নিরাপদ এবং নিয়ন্ত্রিত হবে।