শীতকালীন সবজি (vegetable price) যেমন বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিমলা মরিচ, শাকসবজি, ইত্যাদি প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের শুরুতে সাধারণত কিছুটা সস্তা হয়ে যায়। তবে এবছর শীতকালীন সবজির দাম (vegetable price) এখনও অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ থাকে, যা অনেক ক্রেতার কাছে হতাশাজনক। বিশেষ করে কলকাতা শহরের বাজারে, যেখানে অধিকাংশ শীতকালীন সবজি (vegetable price), এমনকি ফুলকপি বা বাঁধাকপি, এখনও যথেষ্ট উচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
বর্তমানে শীতকালীন সবজির বাজারের (vegetable price) পরিস্থিতি নিয়ে Bengal Agricultural Marketing Task Force (বেঙ্গল কৃষি বিপণন টাস্ক ফোর্স) সদস্যরা দাবি করেছেন যে, পাইকারি বাজারে (vegetable price) উৎপাদন পর্যায়ে দামের তুলনায় খুচরা বাজারে দাম অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। এই বছরের শীতে অনেক শীতকালীন সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিমলা মরিচ, পালং শাক ইত্যাদি উৎপাদন যথেষ্ট ভাল হয়েছে। তবে পাইকারি বাজারে দাম কম থাকলেও, খুচরা বাজারে এসব সবজির দাম (vegetable price) আগের মতোই বেশি রাখা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন যে, “শীতকালীন সবজির দাম এত বেশি হওয়া উচিত নয়। বর্তমানে ফুলকপি একটির দাম ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা (vegetable price) কেজি। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের পক্ষে বাজার করা কঠিন হয়ে পড়বে।” বিশেষত, এই সময়ে শীতকালীন সবজির দাম কমার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না।
তবে বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে যে, কলকাতার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিশেষত কোলে মার্কেট (সিয়ালদহ), বাঁধার বাজার এবং বাসিরহাট থেকে বিভিন্ন শীতকালীন সবজি পাইকারিতে সস্তা দামে পাওয়া যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, বাঁধাকপি পাইকারিতে ১৫ টাকা কেজি, ফুলকপি ১০-১৫ টাকা প্রতি পিস, এবং শাকসবজি ১৫-২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব সস্তা দামের পণ্য খুচরা বাজারে পৌছানোর পরও দাম অব্যাহতভাবে উচ্চ থাকে।
এজন্য কৃষি বিপণন টাস্ক ফোর্সের সদস্য কামাল দে মন্তব্য করেছেন, “আমরা চেষ্টা করছি বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে, তবে ৫৫৮টি বাজারের উপর নজর রাখা আমাদের জন্য কঠিন।” তিনি আরও বলেন, “এ বছর বাঁধাকপি এবং ফুলকপি উৎপাদন ভালো হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই রাঁচির ফুলকপির পরিবর্তে স্থানীয় ফুলকপি বাজারে আসতে শুরু করেছে।”
একদিকে পাইকারি বাজারে দাম কমে গেলেও খুচরা বাজারে দাম কেন একইভাবে রয়ে গেছে? এর পিছনে একাধিক কারণ কাজ করছে। প্রথমত, কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা আগের দামে পণ্য কিনে থাকেন, ফলে নতুন উৎপাদনের দাম কমলেও তারা পুরনো দামে বিক্রি করতে থাকেন। আবার, পরিবহন খরচ এবং বিভিন্ন মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে খুচরা বাজারে দাম বেড়ে যায়। এর পাশাপাশি, বাজারে পণ্য সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে একটি অসমতা থাকলেও দাম কিছুটা অস্থিতিশীল থাকে।
এছাড়াও, শিমলা মরিচ বা টমেটোর মতো কিছু সবজি এখনও বিভিন্ন রাজ্য থেকে আনা হচ্ছে, যেমন কর্ণাটক বা হিমাচল প্রদেশ। এই সবজির দাম পাইকারি বাজারে কমলেও, সেগুলি খুচরা বাজারে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে শিমলা মরিচ পাইকারিতে ৪০-৫০ টাকা কেজি, কিন্তু খুচরা বাজারে এখনও ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এমনকি টমেটোও এখনও ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যদিও স্থানীয় উৎপাদন পর্যাপ্ত পরিমাণে আসেনি।
অবশ্য, এটি এমন একটি সময় যখন সাধারণ মানুষ বাজারে যেতে সংকোচিত অনুভব করছেন। এক মহিলা ক্রেতা শ্রীওষী গাঙ্গুলি জানালেন, “গত শুক্রবার আমি শিমলা মরিচ ১২০ টাকা কেজি কিনলাম, টমেটো ৬০ টাকা কেজি। স্থানীয় শাকসবজির দামও অনেক বেশি।”
এ সকল পরিস্থিতির মধ্যে কৃষি বিপণন টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে জানিয়েছেন, “স্থানীয় টমেটো এখনও কলকাতা বাজারে আসেনি, ফলে দাম বাড়ছে। তবে আমাদের লক্ষ্য কৃষকদের সহযোগিতা ও উৎপাদনের উন্নতির মাধ্যমে বাজারে সঠিক দাম নিশ্চিত করা।”
সম্ভবত, একমাত্র যদি সমস্ত পক্ষ সঠিকভাবে এই সমস্যাগুলি সমাধান করতে পারে, তবে শীতকালীন সবজির বাজারে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই বাজার করতে পারে।