‘দানা’র তান্ডবের মধ্যেই চেনা ছন্দে শিয়ালদহ ও হাওড়া শাখায় শুরু ট্রেন পরিষেবা

বৃহস্পতিবার রাত থেকে যে আতঙ্কের ছায়া ছড়িয়ে পড়েছিল, তা ছিল কলকাতা এবং আশেপাশের অঞ্চলে ‘দানা’ (cyclone dana) বাঁধা একটি বিশাল ঝড়ের পূর্বাভাস। প্রকৃতির এই রোষানলে…

train service

বৃহস্পতিবার রাত থেকে যে আতঙ্কের ছায়া ছড়িয়ে পড়েছিল, তা ছিল কলকাতা এবং আশেপাশের অঞ্চলে ‘দানা’ (cyclone dana) বাঁধা একটি বিশাল ঝড়ের পূর্বাভাস। প্রকৃতির এই রোষানলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছিল। ‘দানা’র (cyclone dana) আশঙ্কায় সেদিন রেল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। তবে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই হাওড়া ও শিয়ালদহ শাখায় চালু রেল পরিষেবা৷ 

বৃষ্টি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিয়ালদহ ডিভিশন এবং হাওড়া ডিভিশনের সমস্ত লোকাল ট্রেনের পরিষেবা রাত ৮টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

   

তবে,নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি ছিল। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১২ মিনিটে ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া শুরু হয়। পূর্বাভাস মতোই ধামড়া এবং ভিতরকণিকার মাঝামাঝি এলাকায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ডানা। প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া চলেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত ল্যান্ডফল হয়েছে ‘দানা’র।

শুক্রবার সকালে, যখন অবশেষে পরিষেবা পুনরায় শুরু হল, তখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। প্রথমে স্টেশনগুলো ছিল জনশূন্য। কিছু প্রয়োজনীয় যাত্রী ছাড়া কেউই বাড়ির বাইরে বের হয়নি। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনের চেনা দৃশ্য একেবারে পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ মানুষ নিজেকে নিরাপদে রাখতে চেয়েছিলেন। সকাল থেকে স্টেশনগুলোতে যে নিঃসঙ্গতা বিরাজ করছিল, তা ছিল মনমরা।

তবে,সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যখন ট্রেন পরিষেবা শুরু হল, তখন জনসংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে শুরু করল। শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশন থেকে একের পর এক ট্রেন ছেড়ে যেতে লাগল। পরিবহণের এই সুরাহার ফলে জনজীবন ধীরে ধীরে ফিরতে লাগল চেনা ছন্দে। 

এমন পরিস্থিতির মধ্যে, অনেক যাত্রীই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলেন, কীভাবে এক রাতে সবকিছু বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অনেকে বললেন, “এমন অশান্তির মধ্যে আসলে বাইরে বের হতে ভয় লাগে।” আরেক যাত্রী বললেন, “আমাদের জন্য এই রেল পরিষেবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তবে নিরাপত্তা তো আগে। তাই পরিস্থিতি বুঝে বেরিয়েছি।”

শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনের পরিস্থিতি ছিল কার্যত আলাদা। ধীরে ধীরে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে লাগল। কিন্তু আগের দিনের তুলনায় তা অনেক কম ছিল। যাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ ও অস্থিরতা স্পষ্ট ছিল। যাঁরা ট্রেন ধরতে এসেছেন, তাঁদের মধ্যে এক ধরনের দ্বিধা দেখা গিয়েছিল। অনেকেই বলছিলেন, “এবার যেন কিছু হবে না। নিরাপত্তা তো নিশ্চিত হোক।”

রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই ট্রেনগুলো আবারও ছুটে চলবে।

এক রাতের এই বিরতি অনেকের কাছে মনে রেখে যাওয়ার মতো হয়ে থাকবে। এই পরিস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, প্রকৃতির রোষের সামনে আমরা কতটা অসহায়। যদিও রেল পরিষেবা ফিরে এসেছে, তবুও মানুষ যেন নিরাপদে ও সুরক্ষিত থেকে চলাফেরা করে।