তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক এবং ডায়মন্ড হারবারের সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) আগামী ৩০ নভেম্বর প্রথমবারের মতো চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আমতলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্মন্বয় অডিটোরিয়ামে।
গত আগস্টে আর জি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর এই প্রথম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসবেন।
এই ডাক্তারের সম্মেলনে প্রায় ৫০০ চিকিৎসক অংশগ্রহণ করবেন, যারা সরকারি ও বেসরকারি উভয় হাসপাতাল থেকে আসবেন। “স্বাস্থ্য সবার জন্য” শীর্ষক আলোচনায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখবেন এবং মূলত স্বাস্থ্য পরিষেবাকে কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়, সে বিষয়েই তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন। স্বাস্থ্য খাতে সুশাসন ও পরিষেবার উন্নয়নের জন্য এই আলোচনাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)তাঁর ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে স্বাস্থ্য শিবির পরিচালনার পরিকল্পনা করছেন। আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এক মাসব্যাপী এই স্বাস্থ্য শিবিরগুলো চলবে। এই শিবিরে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরামর্শ দেবেন। মূলত প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ডাক্তারের সম্মেলনের পাশাপাশি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) জেলা প্রশাসক (ডিএম), পুলিশ সুপার (এসপি), মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করবেন। এতে বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। এই বৈঠকে স্বাস্থ্য শিবিরগুলি কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। শিবিরগুলোতে নিরাপত্তা, লজিস্টিকস, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং অন্যান্য চাহিদার বিষয়ে এই বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এটি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে তিনি তাঁর নিজস্ব লোকসভা কেন্দ্রে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে মনোনিবেশ করছেন। এর মাধ্যমে কেবলমাত্র চিকিৎসা সেবার প্রসার ঘটবে না, বরং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আরও জানা গেছে, এই স্বাস্থ্য শিবিরে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও উপস্থিত থাকবেন, যারা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, চক্ষু রোগ এবং অন্যান্য বিশেষ চিকিৎসার জন্য রোগীদের পরামর্শ দেবেন। স্থানীয় জনগণ যাতে এই শিবির থেকে সর্বোচ্চ সুফল পান, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পদক্ষেপ দলীয় রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করার একটি দৃঢ় প্রয়াস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এমন একটি সম্মেলনের আয়োজন পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর আরও প্রসার এবং মানোন্নয়নে সহায়ক হতে পারে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা আরও সহজলভ্য এবং দ্রুতগামী করার লক্ষ্যে কাজ করা হবে।
এই উদ্যোগগুলি তৃণমূল কংগ্রেসের স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন, যা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নতুন মাত্রা পেতে পারে। তিনি বিশ্বাস করেন যে, স্বাস্থ্য সেবা কেবলমাত্র কিছু গোষ্ঠীর জন্য সীমিত না থেকে সর্বসাধারণের নাগালের মধ্যে থাকা উচিত।
এই সমস্ত পরিকল্পনা এবং উদ্যোগগুলি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবকাঠামোকে আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপনে এই পদক্ষেপগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সম্মেলন এবং পরবর্তী স্বাস্থ্য শিবিরগুলো যে নতুনভাবে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে এবং জনস্বাস্থ্যের পরিসেবার প্রসার ঘটাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ আশেপাশের এলাকার মানুষ এই সুযোগের মাধ্যমে সুস্থ জীবনযাপনে সহায়ক পরিসেবা পেতে পারেন।