যেমন কথা তেমন কাজ! কল্যাণের বাড়িতে ৬৩টি রসগোল্লা পাঠালেন কুণাল

কথা রাখলেন কুণাল (Kunal Ghosh)! মানিকতলার পরাজিত বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবের বাড়িতে পাঠালেন ৬৩টি রসগোল্লা। কয়েক ঘণ্টা আগে কুণাল বলেছিলেন, ‘কল্যাণ চৌবে যত ভোটে হারবেন, ততগুলি রসগোল্লা ওঁর বাড়িতে পাঠাব।’ ফলাফল বেরোতেই দেখা যায়, কল্যাণ ৬২,৩১২ ভোটে তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডের কাছে পরাজিত হয়েছেন।

Advertisements

এদিন বিকেলে কুণালের দূতেরা পৌঁছে যান উল্টোডাঙায় কল্যাণের বাসস্থানে। আবাসনের কর্মী অবশ্য তাঁদের জানান, কল্যাণের ফ্ল্যাটে কাউকে যেতে দেওয়া যাবে না। উপায় না দেখে ওই ব্যক্তির হাতে রসগোল্লার হাঁড়িটি তুলে দেন তৃণমূল কর্মীরা। কুণাল ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, দাদা গত মঙ্গলবার হাটে হাঁড়ি ভেঙেছিলেন। শনিবার হাঁড়িভর্তি রসগোল্লা পাঠিয়ে দিলেন।

লোকসভা ভোটে মানিকতলা বিধানসভা থেকে প্রায় ৩ হাজার ভোটে জিতেছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। উপনির্বাচনে লক্ষ্য ছিল ৫০ হাজারের ব্যবধান। অনায়াসেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়েছে তৃণমূল। অবশ্য রিগিংয়ের অভিযোগ তুলে তৃণমূলের এই জয়কে ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। যা নিয়েই এ দিন কল্যাণকে কটাক্ষ করেছেন মানিকতলা কেন্দ্রে জোড়-ফুলের ‘চাণক্য’ কুণাল ঘোষ। সঙ্গে করেছিলেন বড় ঘোষণা।

বিশাল জয়ের পরই নবনির্বাচিত চার প্রার্থীকে কী পরামর্শ নেত্রী মমতার?

মানিকতলা বিধানসভার কাউন্টিং সেন্টার ছিল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে। এ দিন গণনা শেষ হতেই সেখানে যান কুণাল। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘কল্যাণ চৌবে যত ভোটে হারবেন, ততগুলি রসগোল্লা ওঁর বাড়িতে পাঠাব।’ কোন কৌশলে কলকাতার এই কেন্দ্রে জিতল তৃণমূল? কুণালের সাফ জবাব, ‘বাম জমানার থেকে ভালো আছেন বাংলার মানুষ। বিজেপির প্রতি তাঁদের আস্থা নেই। ভুলকে ভুল বলে স্বীকার করছে। তাই মানুষের আস্থা রয়েছে।’

Advertisements

একুশের নির্বাচনে মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন সাধন পাণ্ডে। ২০ হাজার ২৩৮ ভোটে বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকে হারান তিনি। ২০২২-র ফেব্রুয়ারিতে মৃত্যু হয় সাধন পাণ্ডের। তারপর থেকে এই কেন্দ্রটি বিধায়কহীন হয়ে পড়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচনের বিধান থাকলেও, মানিকতলা কেন্দ্রের ক্ষেত্রে তা হয়নি।

মানিকতলায় বিরাট ব্যবধানে জয়ের তোফা, তৃণমূলে আরও বড় দায়িত্বে কুণাল ঘোষ

গণনায় কারচুপির অভিযোগে ফলাফল বাতিলের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন পরাজিত বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। সেই মামলার সম্প্রতি নিষ্পত্তি ঘটেছে। আদালত উপনির্বাচনের নির্দেশ দেয়। তারপরই উপনির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কমিশন। এই কেন্দ্রে তৃণমূল টিকিট দিয়েছিল সুপ্তি পাণ্ডেকে। আর বিজেপি কল্যাণ চৌবেকেই প্রার্থী করেছিল।

তবে এবারও হারলেন কল্যাণ। হেরে বললেন, ‘গোয়েন্দা গল্পে যেমন পড়ে থাকি… কিছু বোঝা যায় না, অথচ ঘটে যায়। মানিকতলাতেও ধীর স্থিরভাবে সবকিছু হয়েছে। খুব শান্তভাবে ভোট হয়েছে। আর একটা দল ৯৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য একটা দুশ্চিন্তার বিষয়।’