পানিহাটির গান্ধীনগর এলাকায় ২০১৪ সালের দুর্গাপুজোর সময় চুরির অপবাদে পিটিয়ে খুন হওয়া মাছ ব্যবসায়ী শম্ভূ চক্রবর্তীর খুনের ঘটনায় পানিহাটি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর তারক গুহকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা দিল বারাকপুর আদালত। একইসঙ্গে তার ভাইপো নেপালসহ আরও ৪ জনের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরও সাজা প্রদান করা হয়েছে। এই ঘটনায় ফলে তৃণমূলের মধ্যে তীব্র অস্বস্তি ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুজোর সময় পানিহাটির গান্ধীনগর এলাকায় শম্ভূ চক্রবর্তীকে চুরির অভিযোগে দুর্গা মণ্ডপে বেঁধে পিটিয়ে খুন করা হয়। এই ঘটনায় তৎকালীন তৃণমূল নেতা তারক গুহসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে খড়দা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ অমীমাংসিত থাকলেও ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে পুলিশ। তবে এই মামলায় দুই আসামি এখনও পলাতক।
বারাকপুর আদালত গত সপ্তাহে এই মামলার ৫ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে তৃণমূল কাউন্সিলর তারক গুহ, তার ভাইপো নেপাল এবং আরও ৩ জনের বিরুদ্ধে এই শাস্তি কার্যকর করা হয়েছে। তবে বিচারক ৩ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
তৃণমূলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে একজন খুনের আসামীকে এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালে তৃণমূলের টিকিটে পানিহাটি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তারক গুহ। এই নির্বাচনের পরেই নিহত শম্ভূ চক্রবর্তীর পরিবার অভিযোগ জানায়, তারক গুহ ও তার দলবল তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে মামলার ফলাফলের দিকে হাত বাড়াতে। এমনকি, ১৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে শম্ভূ চক্রবর্তীর ছেলে ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে। তাদের দাবি, তারক গুহের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে অভিযোগ দায়ের হলেও, ২০২২ সালে তিনি কাউন্সিলর হন। এর মানে হলো, অপরাধ করেও দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন তিনি। এই প্রশ্নটি ওঠাই স্বাভাবিক যে, এত বড় অপরাধে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তি কেন তৃণমূলের টিকিট পেয়েছেন?