বার্ড ফ্লুতে মৃত্যু,সংক্রমণ এবং ভয়! কী বলছে বাংলার চিকিৎসক মহল, খোঁজ নিল কলকাতা ২৪x৭

   আদিত্য ঘোষ, কলকাতা: বার্ড ফ্লু হচ্ছে, মুরগীর মাংস বর্জন করুন। এমনই কিছু উক্তিতে সমাজমাধ্যম বেশ সরগরম।  সমাজমাধ্যমে এই নিয়ে বিস্তর লেখালেখি করছেন অনেকে। তাঁদের…

BIRD FLU (2)
  

আদিত্য ঘোষ, কলকাতা: বার্ড ফ্লু হচ্ছে, মুরগীর মাংস বর্জন করুন। এমনই কিছু উক্তিতে সমাজমাধ্যম বেশ সরগরম।  সমাজমাধ্যমে এই নিয়ে বিস্তর লেখালেখি করছেন অনেকে। তাঁদের মতে এই সময় মুরগীর মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়। তবে এই ঘটনার পিছনে আদেও কতটা বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি আছে? আদেও আছে নাকি সবটাই স্রেফ গুজব? খোঁজ নিল কলকাতা ২৪x৭।

সম্প্রতি এক মার্কিনি এক ভয়ংকর বক্তব্য পেশ করেছেন। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের ডিরেক্টর রবার্ট রেডফিল্ড-এর কথায় ” করোনার পর এই বার্ড ফ্লু বিশ্বে মহামারীর আকার ধারণ করতে চলেছে। আমাদের মনে হচ্ছে এই বার্ড ফ্লু কেবল নিছক রোগ হিসেবে নয়, আগামী দিনে মহামারীর আকার নিতে চলেছে। এই রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুহারও বাড়তে পারে।’  তিনি এও বলেন, কোভিড-১৯-এর জন্য মৃত্যুর হার ০.৬ শতাংশ হলেও বার্ড ফ্লুতে মৃত্যুহার সম্ভবত ২৫ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে হতে পারে।”

   

নিশ্চিন্তে মুরগির মাংস খাচ্ছেন? সাবধান, হু হু করে ছড়াচ্ছে বার্ড ফ্লু!

তবে আমরা বাংলার সাম্প্রতিক ছবিটা যদি দেখি বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছে মালদার বাসিন্দা ৪ বছরের এক শিশু। একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( World Health Organization-Who) জানিয়েছে, ২০১৯ সালের পর এই প্রথম ভারতে মানুষের শরীরে বার্ড ফ্লু ভাইরাস ধরা পড়ল। বর্তমানে শিশুকে বাড়িতেই রাখা হয়েছে। কিন্তু, পরিবারের বক্তব্য এখনও তার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা মেটেনি। এহেন পরিস্থিতিতে সত্যিই কি উদ্বেগের ? সত্যিই কি বন্ধ করতে হবে মাংস খাওয়া? চিকিৎসক সায়ন্বিতা মল্লিক জানালেন যে, “ভয় পেলেই ভয়। না পেলে নয়। তবে আপনি কী খাবেন আর কী খাবেন না সেটা আপনার বিষয়। তবে আক্রান্ত মুরগী থেকে তো বার্ড ফ্লু ছড়াতেই পারে। তবে এই বার্ড ফ্লু একদম সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো। যার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশী সে কিছুই টের পাবে না।”

চিকিৎসক ডা.প্রীতম বোস জানালেন, ”এই ভাইরাসের সংক্রমণ সাধারন ইনফ্লুয়েঞ্জা মতো। হাঁচি,কাশি, জ্বর,শ্বাসকষ্ট-এর মতো অনেকটা। পোল্ট্রিফার্ম থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে। জলজ প্রাণী থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে। তবে এই রোগ সাধারনত এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভবনা বেশী। তবে প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভবনা কম।” এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও জানালেন যে অযথা ভয়ের কিছু নেই।

Bird flu: সুমেরু জুড়ে সতর্কতা, বার্ড ফ্লুতে পেঙ্গুইন মড়কের আশঙ্কা

আবার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা ব্রতেশ দাসের কথায়, ” এই রোগের ভাইরাস সাধারণত বায়ুতে থাকে, যা একেবারে সধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ছড়ায়। মৃত মুরগীর মাংস খেয়ে কিংবা ডিম খেয়ে এই রোগ ছড়ায় কিনা সেই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত আমার জানা নেই। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে কোন রকমই জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট প্রাথমিক পর্যায়ে ফেলে না রেখে চিকিৎসা করানো জরুরি।” এতএব মুগরী কিংবা ডিম খেলে যে আপনার বার্ড ফ্লু হবে, এই নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা থেকে দূরে থাকুন। তবে কোনও রোগকেই প্রাথমিক পর্যায়ে অবহেলা করবেন না। কিছু হলে ডাক্তারি পরামর্শ নিন।