TMC Panihati: তৃণমূলের মারমুখী গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে যেন মমতা-অভিষেককেই অমান্যের ঔদ্ধত্য পানিহাটিতে!

শহীদ দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে দলের কাউন্সিলর থেকে কর্মী সবাইকেই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা-অভিষেক (TMC Panihati)। কিন্তু সেই হুশিয়ারি কতটা কাজে লেগেছে সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন…

TMC Panihati Incident: A photo related to an incident involving the Trinamool Congress (TMC) party in Panihati, showing a scene of chaos, protest, or violence, with people and police present, and a caption indicating the incident occurred today.

শহীদ দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে দলের কাউন্সিলর থেকে কর্মী সবাইকেই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা-অভিষেক (TMC Panihati)। কিন্তু সেই হুশিয়ারি কতটা কাজে লেগেছে সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে (TMC Panihati)। একুশে জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশের সভা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (TMC Panihati)।

যে ধর্মতলায় সভা হয়েছে সেখান থেকে জায়গাটা যে খুব দূর, তাও নয়। সোদপুর এলাকার অন্তর্গত পানিহাটি (TMC Panihati) পৌরসভার ঘটনায় রীতিমতো প্রশ্ন উঠছে দলের একশ্রেণীর কর্মীদের ঔদ্ধত্য ঘিরে। আর তার ফলাফল হিসেবে যে ছবিটা সোমবারে দেখা গেল, তা কার্যত অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের একটা মিনি-সংস্করণ বলা যেতেই পারে।

   

ঘটনার সূত্রপাত ২১শে জুলাইয়ের রাত্রেবেলা। পানিহাটি পৌরসভার অন্তর্গত 14 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুমিত পালের উপরে আক্রমণ হয়। মারধর করা হয় তৃণমূল কর্মী রানা বিশ্বাসকে।সূত্রের খবর কিছু শারীরিক আঘাত ছাড়া দুজনেই নিরাপদে আছেন। কিন্তু ঘটনায় অভিযোগের তীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডেরই এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। ওই স্থানীয় তৃণমূল কর্মী পরিতোষ দাস আবার ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল সভাপতি মল্লিকের সঙ্গে ঘনিষ্ট। বুবাই মল্লিক এবং তার এক বন্ধু গোটা ঘটনায় জড়িত এমনটাই সুমিতবাবু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের তরফে দাবি করা হয়।

এ তো ছিল সবে ঘটনার ট্রেলার। আসল সিনেমা শুরু হয় সোমবার সকাল বেলা। সিনেমা বলার কারণ, রীতিমতন সেই ধুন্ধুমার অ্যাকশনের ছবি মোবাইল বন্দী করেছেন একদল তৃণমূল সমর্থকই। সোমবার সকালবেলায় দেখা যায়, অভিযুক্ত বুবাই মল্লিকের অফিস ঘরে চড়াও হয় একদল তরুণ। তীব্র আক্রোশে রীতিমতো ভেঙেচুরে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সেই অফিসকে। ফ্ল্যাটের নিচে থাকা সেই দোকানের থেকে চেয়ার ছুড়ে ফেলা হয় রাস্তাতে। তীব্র আক্রোশে তাতে লাঠি উইকেট দিয়ে মেরে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয় সারি সারি চেয়ার।

‘এ তো ঘোড়ায় হাসবে!’, বেনজির ভাষায় কাকে কটাক্ষ করলেন কুণাল?

এরপরে পালা অফিসের এলইডি টিভির। এক তরুণকে দেখা যায় টিভিকে ডিস্ক থ্রো এর মত করে মত করে একেবারে ছুড়ে রাস্তায় ফেলে দিতে। অফিসের ফ্যান, কাচের ব্যারিকেড কাচের দরজা কিছুই রেহাই পায়নি উন্মত্ত তরুণদের আক্রমণের হাত থেকে। গোটা পরিস্থিতির সাথে অনেকেই সাম্প্রতিক বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বিক্ষোভে উন্মত্ত হয়ে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনার অদ্ভুত সাদৃশ্য পাচ্ছেন।

সেই সময়ে বেশ কয়েকজনকে ভিডিও করতে দেখা যায় গোটা ঘটনার। সেই ভিডিও এখন সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সমাজমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল। এই বিষয়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি কে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জনরোষের তত্ত্ব সামনে এনেছেন। যদিও এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেরই বক্তব্য, বেশ কিছুদিন ধরেই এলাকায় দুষ্কৃতীরাজ চরমে উঠেছে। আর সভাপতি ঘনিষ্ঠদের দাবি, দুবাই এবং তার বন্ধুরা দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগসাজেশ করে এলাকায় নানা রকম অসামাজিক কাজকর্ম করছে। তাতে বাধা দেওয়ার জন্যই আক্রমণ হয়েছে ওয়ার্ডের সভাপতির ওপর।

যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল যুব নেতার অভিযোগ, দলেরই একাংশ তাকে কোন ঠাসা করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তাকে নির্বাচনে কাজ করতে না দেওয়ার অভিযোগও তিনি করেছেন। এমনকি কিছুদিন পরে নাকি তাকে অফিস খুলতে দেওয়া হচ্ছিল না এমনটাই দাবি ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের যুব সভাপতির। নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় খড়দহ থানার পুলিশ। কিন্তু তাদের সামনেও ক্ষোভ দেখাতে থাকেন বুবাইয়ের বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজনেরা।

অতীতের আতঙ্ক গ্রাস করছে সাগরে, ধসে বিপর্যস্ত কপিলমুনি আশ্রম

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু ঘটনায় পানিহাটি পৌরসভা শিরোনামে এসেছে। লোকসভা ভোটের আগে জলের তীব্র হাহাকার নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন এলাকার জনসাধারণ। এমনকি পানিহাটি পৌরসভার আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ বলে শোনা যাচ্ছিল যে কর্মচারীদের মাইনে দেওয়ার ক্ষমতাও নাকি ঠিকঠাক নেই। এরকম অবস্থাতে জঞ্জাল পরিষ্কার এবং প্রতিদিনের পরিষেবা রীতিমতো লাটে উঠেছিল বলেই একটা সময় অভিযোগ উঠেছে।

এমনকী সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে পানিহাটি পৌর অঞ্চলে তৃণমূলের ফলাফল খুব একটা আশানুরূপ নয়। এরকম পরিস্থিতিতে সভাপতি বনাম তৃণমূল কর্মীর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রীতিমতন বিড়ম্বনার ফেলেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে। আক্রমণের পাল্টা প্রতি আক্রমণেই কি ভরসা রাখছেন নেতারা? এ প্রশ্ন উঠছে। মেগা শোয়ের মঞ্চে দলের সাধারণ সম্পাদক থেকে সুপ্রিমো কর্মীদের জনগণের জন্য কাজের বার্তা দিয়েছেন। তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এই চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা, গ্রহণযোগ্যতা এবং প্রভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলছে, বলাই যায়।