কলকাতা ৩ অক্টোবর: তসলিমা নাসরিন, যিনি একাধারে বিখ্যাত, জনপ্রিয় সাহিত্যিক (Taslima Nasrin)। আবার তিনি বিতর্কিতও। বারে বারে বিতর্কিত মন্তব্য করে মানুষের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। আজ একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি স্পষ্ট বলেছেন যে এই মুহূর্তে আর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা তিনি ভাবতে পারেন না। কারণ আজকের পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এমন স্বপ্ন দেখাটা সোনার পাথরবাটির মতই অসম্ভব।
Also Read | বাংলায় কারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে? ফাঁস করলেন তসলিমা
তিনি তার বক্তব্যের সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে ছোট্ট দুটি উদাহরণ দিয়েছেন। প্রথম উদাহরণ হিসেবে তিনি এনেছেন ওপর বাংলার বিখ্যাত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর নাম। তিনি বলেছেন “চঞ্চল চৌধুরীকে তারা ভালবেসেছিল। কারণ চঞ্চলের অভিনয় তাদের ভাল লেগেছিল। চঞ্চলের গানও ভাল লেগেছিল তাদের। তারপর যখন ফেসবুকে চঞ্চলের ছবি দেখলো তাঁর মায়ের সঙ্গে, যে মায়ের সিঁথিতে ছিল সিঁদুর, তখনই চঞ্চলের প্রতি যত ভালবাসা ছিল উইথড্র করে নিল।”
মানে ব্যাপারটা এই রকম দাঁড়াচ্ছে যখন একজন হিন্দু শিল্পী একটি মুসলিম প্রধান দেশে মানুষকে আনন্দ দেয় তখন সে মনের মানুষ। আর যখন হিন্দু রীতি নীতি মেনে সে যখন দুর্গোৎসবে সিঁদুর খেলে তখন হয় চক্ষুশূল। তখন তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি শুনতে হবে, শুনতে হবে মানবতা বিরোধী মন্তব্য। তসলিমার দ্বিতীয় উদাহরণে উঠে এসেছে আরও এক বাংলাদেশ ভিত্তিক অভিনেতাস যশ রোহানের নাম।
তিনিও তার সোশ্যাল মিডিয়া পেজে ছবি পোস্ট করেছেন দুর্গা প্রতিমার সঙ্গে, কপালে তিলক বা সিঁদুর। এই দেখেও সে দেশের কট্টরপন্থীরা সরব হয়ে তাকে গালিগালাজ করেছে। তসলিমা বলেছেন বাংলাদেশের এক বিশাল সংখ্যক মুসলিম এই জাতীয় মানসিকতা নিয়ে বেঁচে আসছে বছরের পর বছর যা একটি সুষ্ঠ স্বাভাবিক রাষ্ট্রের জন্য কখনোই শুভ বার্তা নয়।
এই পোস্টের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সিংহভাগ মানুষই বলেছেন শিল্পীদের কোনো ধর্ম নেই। তারা নিজেদের সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে মানুষকে আনন্দ দেয় এবং কট্টরপন্থীদেরও উচিত তাদের ধরমুইও বিভাজন না করা। কিন্তু এসব কথা শুনতে যত ভালো লাগে বাস্তব রূপ দেওয়া তার চেয়েও বেশি কঠিন। আসলে বাংলাদেশ হোক বা অন্য দেশ মুসলিমদের একটি বিশাল অংশ ধর্মের উপরে উঠতে পারেনি।
Also Read | প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর, দলের অনুশীলন নিয়ে বড় বার্তা গুরপ্রীত থেকে ছাংতের
যা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ঠিক এই কারণেই সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন এবং নির্বিচারে তাদের হত্যা করছে মৌলবাদীরা। তবে তসলিমা তার অভিজ্ঞতা এবং দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে একেবারেই একটি রাষ্ট্রের মেরুদন্ড ধরে টান মেরেছেন এমনই মত প্রকাশ করেছেন তার অনুরাগীরা।