পোর্টাল খুলে ১০০ জনকে নিয়ে আবারও শুভেন্দুর অভিযান! পদ্মবনের অধিকার বাঁচাতে রাজভবনই ভরসা?

বঙ্গের রাজনীতিতে এখন কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে প্রবল চাপে রয়েছেন বিরোধী দলনেতা (Suvendu Adhikari)। পশ্চিমবঙ্গের উপনির্বাচনে যাকে বলা যায়, একেবারে ধরাশায়ীই হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি…

suvendu after by election d পোর্টাল খুলে ১০০ জনকে নিয়ে আবারও শুভেন্দুর অভিযান! পদ্মবনের অধিকার বাঁচাতে রাজভবনই ভরসা?

বঙ্গের রাজনীতিতে এখন কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে প্রবল চাপে রয়েছেন বিরোধী দলনেতা (Suvendu Adhikari)। পশ্চিমবঙ্গের উপনির্বাচনে যাকে বলা যায়, একেবারে ধরাশায়ীই হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি (Suvendu Adhikari)। যে চার বিধানসভায় উপনির্বাচন হয়েছিল, তার তিনটিই ছিল বিজেপির জেতা। এমনকী সদ্যসমাপ্ত লোকসভাতেও এই আসনগুলো তো বেশ ভালো মাত্রায় লিড ছিল বিজেপির। কিন্তু তা সত্ত্বেও শেষ রক্ষা হয়নি।

যদিও রাজনৈতিক বিশারদদের মতে ৩ আসনের হার একদিকে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) নেতৃত্বের হারও বটে। কারণ উপনির্বাচনের প্রচারে মমতা বা অভিষেক কাউকেই দেখা যায়নি। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা এবং মন্ত্রীরাই প্রচারের দায়িত্ব সামলেছিলেন। কিন্তু বিজেপির হয়ে বেশ ভাল রকমেরই প্রচার এবং জনসভা করেছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু তা সত্ত্বেও জেতা গড় হাতছাড়া হয়েছে।

   

উপনির্বাচনে হারার পর শুভেন্দু এবার কি তাই অন্য পন্থা নিয়েছেন? লোকসভা ভোটের পরেও শুভেন্দু রাজভবন রাজনীতি করেছিলেন। এবার বিধানসভার উপনির্বাচনে হারের পরেও শুভেন্দুর সেই রাজভবনই ভরসা। আজ রাজভবনের সামনে ঝর্ণা মঞ্চ থেকেই তিনি ঘোষণা করে দেন, আবারও ১০০ জনকে নিয়ে তিনি রাজভবন আসতে চলেছেন। তবে এবারের ১০০ জন তারা, যারা ভোট দিতে পারেননি। এমনিতেই বঙ্গ বিজেপি উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণের পরপরই ব্যাপক রিগিং, ছাপ্পা এবং ভোট দিতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। এবার সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই রাজনীতিতে নিজের ভিজিবিলিটি বাড়িয়ে রাখার চেষ্টা করছেন শুভেন্দু?

রামের অযোধ্যার পর বিষ্ণুর বদ্রীনাথেও চরম ব্যর্থ! এবার আরএসএসের শাসন শুরু বিজেপিতে?

এর আগের বারই শুভেন্দুর রাজভবন অভিযান নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। পুলিশি বাধার কারণে রাজভবনে প্রবেশ করতে না পারায় জল গড়িয়েছিল বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাস পর্যন্ত। পরে তাঁরই নির্দেশে শর্তসাপেক্ষে রাজভবনে ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের নিয়ে প্রবেশ করেন শুভেন্দু। দেখা করেন রাজ্যপালের সাথে। কিন্তু গোটা ঘটনায় যে রাজনৈতিক মাইলেজ তিনি পেয়েছিলেন সেটা অস্বীকার করা যায় না। সাম্প্রতিক চাপে পড়া পরিস্থিতিতে আবারও কি তিনি সেরকম কিছু একটা মাইলেজের আশায় আছেন? শুভেন্দুর আজকের ঘোষণার পরে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

বেশ কিছু সূত্রে শোনা যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে দিল্লিতে অমিত শাহের কাছেও কথা শুনতে হয়েছে শুভেন্দুকে। তার ওপর আবার বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরে আরএসএসের প্রভাব বাড়তে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন হয়তো বিরোধী দলনেতাকে আর সেরকম কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদ বা সিদ্ধান্ত নিতে নাও দেখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে কী নিজের অধিকার বজায় রাখতে মরিয়া শুভেন্দুর অস্ত্র রাজভবন অভিযানই? শুধু অভিযান নয় রীতিমতন একটি পোর্টাল খোলার ঘোষণাো করেছেন আজকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

এই পোর্টালে যারা উপনির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি তারা তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন বলে জানা যাচ্ছে। যদিও ভোট দিতে না পারার অভিযোগ নিয়ে পোর্টাল খোলা রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই সারা দেশের মধ্যেও নজিরবিহীন বলা যেতে পারে। তবে সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে গোটা দেশেই বিজেপি হারের নজির তৈরি করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দোষ সম্পূর্ণভাবে নিজের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছেন না শুভেন্দুরা।

ভোটে হারলেও ‘প্রথম স্থান’-এ রায়গঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী মোহিত সেনগুপ্ত

অপরদিকে গোদের উপরে বিষ ফোঁড়ার মত রয়েছে রাজ্য সভাপতি নির্বাচন। দলের একাধিক পুরনো কর্মীরা দিলীপ ঘোষ কে ফিরিয়ে আনার স্বপক্ষে সোচ্চার হতে শুরু করেছেন। লোকসভাতে কাঙ্খিত ফল না হওয়ার দায় তো ছিলই, এবার তার সাথে যোগ হলো উপ নির্বাচনের ভরাডুবি। বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরে শুভেন্দু বিরোধী স্রোত বেশ ভালো রকম ভাবেই বইতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

সেক্ষেত্রে রাজভবন অভিযান বা পোর্টাল খোলার মত বিষয়গুলি কি আদতে সমর্থকদের মন জয়ের চেষ্টা? সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনীতির কারবারিরা। এবার দেখা যাক রাজভবন আর পোর্টালের সৌজন্যে এবারকার মত বিরোধিতার মুখ হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন কিনা শুভেন্দু।তা না হলে বঙ্গের পদ্মবনে শুভেন্দু অধিকারীর একচ্ছত্র অধিকার ক্রমশই কিন্তু কমতে পারে। সেই আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁর নিজের দলেরই একাধিক নেতাকর্মীরা।