আজ, বুধবার, সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আবেদনের শুনানি হতে পারে। রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযানের নির্ধারিত অনুপাতের তুলনায় অনেক কম, এবং প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের ফলে পঠনপাঠনে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, চাকরি বাতিলের রায় সাময়িকভাবে শিথিল করার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আবেদন করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আজ সেই আবেদনের শুনানি হতে পারে, এবং তা নিয়ে চাকরিহারারা গভীরভাবে আগ্রহী।
গত সোমবার, সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) গিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আবেদন জানিয়েছে যে, ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করার পর, চলতি শিক্ষাবর্ষের শেষ পর্যন্ত অথবা যতদিন না নতুন নিয়োগ হচ্ছে, ততদিন ২০১৬ সালের প্যানেলের “যোগ্য” শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের কাজ চালিয়ে যেতে অনুমতি দেওয়া হোক। পর্ষদের দাবি, যেসব শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের বাদ দিয়ে ২০১৬ সালের প্যানেলের যেসব সদস্য “যোগ্য” হিসেবে বিবেচিত, তাদের কাজ করতে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কাছে আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে, গত মাসে, এসএসসি কর্তৃক ২০১6 সালের পুরো প্যানেল বাতিল হওয়ার পর থেকে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার উপর চাপ বেড়েছে। প্রায় ৫,০০০ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যাদের মধ্যে কিছু অভিজ্ঞ এবং যোগ্য শিক্ষকও ছিলেন, যাদের এখন চাকরি না থাকায় স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাব দেখা দিয়েছে। একদিকে, রাজ্যের স্কুলগুলির পঠনপাঠন কার্যক্রম শিকেয় উঠেছে, অন্যদিকে স্কুলগুলির প্রেক্ষাপটও আরও সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আশা করছে যে, সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদনটি গ্রহণ করে শিক্ষকদের সাময়িকভাবে কাজ করার অনুমতি দেবে। পর্ষদের আইনজীবীরা বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার এজলাসে উত্থাপন করেছিলেন। মঙ্গলবার, এই বিষয়টি ফের আদালতে তোলা হয়, এবং শীর্ষ আদালত জানিয়েছে যে, আজ (বুধবার) আবেদনের শুনানি হতে পারে।
এদিন পর্ষদের আবেদনের ওপর সুপ্রিম কোর্ট কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা নিয়ে অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার ভবিষ্যত অনেকাংশে নির্ভর করবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court) এই আবেদন না মঞ্জুর করে, তাহলে রাজ্যে শিক্ষক সংকট আরও গভীর হবে, এবং এর ফলে শিক্ষার মানের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
অন্যদিকে, এই আবেদনের মাধ্যমে পর্ষদ (Supreme Court) আদালতের কাছে স্কুলগুলির বর্তমান অবস্থার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর অভাবে পরিস্থিতি খুবই শোচনীয় হয়ে উঠেছে। অনেক স্কুলেই শিক্ষক নেই, যা পঠনপাঠনের গতি ধীর করে দিয়েছে। এখন, আদালত যদি পর্ষদের আবেদন মঞ্জুর করে, তবে এটি অন্তত কিছুটা সমস্যার সমাধান হতে পারে। তবে, আইনজীবীদের মধ্যে একাংশ মনে করছেন, এই আবেদন কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, কারণ, শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়া পদ্ধতিগতভাবে সঠিক ও স্বচ্ছ হওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) আজকের রায়ের পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে, চাকরিহারাদের জন্য আজকের রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা তাদের ভবিষ্যতের পথচলা এবং রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক পরিস্থিতি নির্ধারণ করতে সহায়ক হবে।