নতুন করে আর কোনও ছাড় নয়, পরীক্ষাও হবে নির্ধারিত সূচি মেনেই— এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কড়া বার্তা রাজ্য সরকারকে। ২০১৬ সালের বাতিল শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল সংক্রান্ত বহু বিতর্কের পরে এখন অবশেষে ফের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং সেটি হবে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী। এই নিয়ে আদালত একেবারে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে— আর কোনওরকম গাফিলতি, বিলম্ব বা সুযোগসন্ধান চলবে না। অনেকের ভবিষ্যৎ ইতিমধ্যেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তাই এবার যেন কোনও অবস্থাতেই তা আর না ঘটে।
বিতর্কের সূত্রপাত
২০১৬ সালের এই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তদন্তে উঠে আসে, বহু অযোগ্য প্রার্থী ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন এবং প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আদালতের হস্তক্ষেপে বাতিল হয় নিয়োগ প্রক্রিয়া। কিন্তু সেই সঙ্গে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যান। তাঁদের অনেকেই ইতিমধ্যে বয়সসীমা পার করে ফেলেছেন, আবার কেউ কেউ বারবার প্রস্তুতি নিয়েও কোনও স্থায়ী সমাধান পাননি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানিয়েছে, এই বাতিল হওয়া প্যানেল নতুন করে তৈরি হবে এবং সেই অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হবে। রাজ্য সরকার বা সংশ্লিষ্ট নিয়োগ সংস্থা এবার আর কোনও অজুহাত দিতে পারবে না। আদালতের মতে, “যাঁরা প্রকৃত যোগ্য, তাঁদের সুযোগ পাওয়া উচিত। পূর্বের ভুলের খেসারত যেন নতুন প্রজন্মকে না দিতে হয়।”
এছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) (Supreme Court) জানিয়েছে, আগের মতো কোনও ‘ব্যাকডোর এন্ট্রি’ বা অসাধু পন্থা যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকেই। নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ যেন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়, তা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিশেষ নজরদারি কমিটিকে।
রাজ্য সরকারের ভূমিকা
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, তারা আদালতের নির্দেশ মান্য করবে এবং পরীক্ষার জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, সরকারের গাফিলতির কারণেই এত দীর্ঘ সময় ধরে এই প্রক্রিয়া ঝুলে ছিল। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, যদি শুরুতেই স্বচ্ছভাবে নিয়োগ হতো, তাহলে এই পরিস্থিতি আসত না।
চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিক্রিয়া
সুপ্রিম কোর্টের(Supreme Court) এই রায় চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে একদিকে যেমন আশার আলো দেখিয়েছে, তেমনই আবার অনেকেই উদ্বিগ্ন— কারণ তাঁদের বয়স বেড়ে গিয়েছে, অনেকেই এখন আর আগের মতো প্রস্তুত নন। তবে অধিকাংশের মতে, এই পরীক্ষা অন্তত একটি নিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে, যেখানে সত্যিই যোগ্যরাই সুযোগ পাবেন।