রাজ্য বনাম কেন্দ্র, রাইটার্সের সামনে সেনার গাড়ি আটকাল কলকাতা পুলিশ

কলকাতার প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র রাইটার্স বিল্ডিং চত্বরে সম্প্রতি ঘটে গেল এক নজিরবিহীন ঘটনা, যেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি থামিয়ে দেয় কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) । এই…

state-centre-showdown-kolkata-police-blocks-army-vehicle-at-writers

কলকাতার প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র রাইটার্স বিল্ডিং চত্বরে সম্প্রতি ঘটে গেল এক নজিরবিহীন ঘটনা, যেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি থামিয়ে দেয় কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরের নিরাপত্তা মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে—কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল? এর পেছনে কারণ কী? এবং এর ভবিষ্যৎ পরিণতি কী হতে পারে?

কী ঘটেছিল?

   

সূত্র অনুযায়ী, ঘটনার সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি রাইটার্স বিল্ডিং-এর সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় চলমান নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের অংশ হিসেবে কলকাতা পুলিশের(Kolkata Police) কর্তব্যরত একটি দল গাড়িটিকে থামায় এবং কাগজপত্র যাচাই করতে চায়। সেনাবাহিনীর তরফ থেকে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানানো হয়, কারণ সেনা যান সাধারণত নির্দিষ্ট অনুমোদন ছাড়াই চলাচল করে।

এরপরই সেনা ও পুলিশের মধ্যে কিছুটা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। কিছু সময়ের জন্য রাস্তায় যান চলাচলও ব্যাহত হয়। পরে বিষয়টি উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে মিটে যায়।

সেনার বক্তব্য কী?

সেনা সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট গাড়িটি সেনাবাহিনীর একটি নিয়মিত টহল ইউনিটের অংশ ছিল, এবং তাদের কাছে যথাযথ অনুমোদন ও পরিচয়পত্র ছিল। সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এভাবে সেনা যানবাহন থামানো অভূতপূর্ব, এবং এতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।

তাদের দাবি, সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত, এবং তাদের উপর এই ধরনের প্রশ্ন তোলা উচিত নয় যখন পর্যন্ত না কোনও গুরুতর সন্দেহ থাকে।

Advertisements

পুলিশের যুক্তি কী?

কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শহরের অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা—যেমন রাইটার্স বিল্ডিং ও রাজভবন সংলগ্ন অঞ্চল—সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে। যেকোনও অজানা বা অননুমোদিত যানবাহন এই এলাকায় প্রবেশ করলে তা আইন অনুযায়ী যাচাই করাই পুলিশের দায়িত্ব। পুলিশ জানিয়েছে, তারা কোনও বাহিনীর প্রতি অসম্মান দেখায়নি, বরং তাদের দায়িত্ব পালন করেছে মাত্র।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

ঘটনার পরপরই রাজনৈতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু রাজনৈতিক নেতা একে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আস্থাহীনতার প্রতিফলন বলে ব্যাখ্যা করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, রাজ্য প্রশাসনের ‘অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা’ সেনাবাহিনীর প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করছে। অন্যদিকে রাজ্যপক্ষের দাবি, নিরাপত্তা নিয়ে আপস করা যাবে না, তা সে যেকোনও বাহিনীর ক্ষেত্রেই হোক।

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভক্ত প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, সেনা গাড়ি থামানো মানে দেশের গর্বকে অসম্মান করা, আবার কেউ বলছেন, আইন সবার জন্য সমান, সেনা বা পুলিশ—সবাই নিয়ম মানবে।