স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগের ক্ষেত্রে যে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি (SSC Scam) হয়েছে সেটার শিকড়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে সিবিআই৷
সিবিআইয়ের হাতে যে সমস্ত নথি এসেছে সেখান থেকে শুধুমাত্র উপদেষ্টা কমিটির দিকেই আঙুল উঠেছে। যদিও সিবিআই আধিকারিকদের দাবি,এই ঘটনার সঙ্গে শুধুমাত্র প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং উপদেষ্টা কমিটি নয়, আরও প্রভাবশালী কয়েকজন জড়িয়ে রয়েছে।
বুধবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আট ঘন্টার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদে সিবিআইয়ের মূল প্রশ্ন ছিল শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার নিয়োগ নিয়ে। সিবিআই আধিকারিকরা জানতে চেয়েছেন অঙ্কিতা অধিকারীর নিয়োগের বিষয় নিয়ে পার্থ বাবু কিছু জানেন কি না। সিবিআই প্রশ্ন করে, তিনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন এত বড় দুর্নীতি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র টের পেলেন না তিনি? তাহলে কারা রয়েছে? কার নির্দেশে নিয়োগপত্রে সই করেছিলেন পার্থ বাবু?
এর আগে পরেশ অধিকারীকে তিন দিনের ১৬ ঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদে একই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেয়েছিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, পরেশ অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস থেকে যোগদান করার সময় কি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল?
শুধুমাত্র অঙ্কিতাকে হিমশৈলর চূড়া ধরেই মাকড়সার জালের মতো এই গোটা দুর্নীতির তদন্ত করতে নামছে সিবিআই।
সিবিআই সূত্রের খবর, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের নাম রয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিদের মতো প্রথম সারির নেতারা। তাঁদের কাছ থেকেই সুপারিশের অনুরোধ এসেছিল। ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত একাধিক তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে। সেখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের রেকমেণ্ডেশনেরও সাক্ষর মিলেছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সুপারিশের আগেই তারিখ দিয়ে সাক্ষর রয়েছে। যা স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তি প্রসাদ সিনহা মারফত সোজা চলে যেত প্রোগ্রামার সমরজিৎ আচার্যর কাছে।
সিবিআই সূত্রে খবর, গোটা চক্রের মাধ্যমে অন্ততপক্ষে চার হাজার নিয়োগ হয়েছে। যা অবৈধ। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া চলেছে টাকার বিনিময়ে। সেখানে শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
বুধবার তিন দফায় আট ঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। সিবিআইয়ের এসপি থেকে জয়েন্ট ডিরেক্টর লেভেলের অফিসাররা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে যায়। রীতিমতো কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে।
আগামী দিনে এই গোটা রহস্যের সমাধান করতে পরেশ অধিকারী এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে পারে সিবিআই।